ফ্রান্সে দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে নামল ৪৫ হাজার পুলিশ, সাঁজোয়া যান

পুলিশের গুলিতে অপ্রাপ্তবয়স্ক তরুণের মৃত্যুর জেরে চলমান দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণে দেশজুড়ে ৪৫ হাজার পুলিশ ও সাাঁজোয়া যান নামিয়েছে ফ্রান্স। এছাড়া দেশটির তৃতীয় বৃহত্তম শহর লিয়নে টহল দিচ্ছে পুলিশের হেলিকপ্টার।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গেরাল্ড ডারমানিন শুক্রবার সন্ধ্যায় ফরাসি টেলিভিশন চ্যানেল টিএফ ওয়ানকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন। মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা সার্বিক পরিস্থিতি নিবিড় পর্যবেক্ষণে রেখেছি এবং প্যারিসসহ বিভিন্ন শহরের হালনাগাদ তথ্য রাখছি।’

সরকার জরুরি অবস্থা জারি করতে যাচ্ছে কিনা— প্রশ্নের উত্তরে ডারমানিন বলেন, ‘একদম স্পষ্টভাবে বলতে গেলে আমি বলব—আমরা কোনো সম্ভাব্য সমাধান এড়িয়ে যেতে চাইছি না। সামনের কয়েক ঘণ্টা আমরা দেখব, তারপর পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রেসিডেন্ট যে পন্থা বেছে নেবেন— তা কার্যকর করা হবে।’

ফ্রান্সে এই বিক্ষোভের সূত্রপাত মঙ্গলবার থেকে। ওইদিন সকালে প্যারিসের উপশহর নানতেরে ট্রাফিক বিধি অমান্য করে জোরে গাড়ি চালানোর অভিযোগে নাহেল এম. নামের ১৭ বছর বয়সী এক তরুণ গাড়ি থামানোর নির্দেশ দিয়েছিল পুলিশ। কিন্তু নাহেল তাতে কর্ণপাত না করে গাড়ি নিয়ে সরে পড়ার চেষ্টা করলে তাকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন পুলিশ সদস্যরা। এতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় নাহেলের।

নাহেলের পরিবারের সদস্যরা আলজেরিয়া থেকে এসে ফ্রান্সে স্থায়ী হয়েছেন। তাদের আর্থিক অবস্থাও খুব ভালো নয়। প্যারিসের নানতের উপশহরটি মূলত দরিদ্র অধ্যুষিত এলাকা। সেখানেই মায়ের সঙ্গে থাকতেন তিনি। নাহেল ও তার মা মৌনিয়া ইসলাম ধর্মাবলম্বী।

পুলিশের গুলিতে নাহেল নিহত হওয়ার পরই বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করে নানতেরে। তারপর বৃহস্পতিবার বিকেলে এক অনলাইন বার্তায় নাহেলের মা মৌনিয়া তার নিহত ছেলের জন্য ন্যায়বিচারের দাবি জানান। সেই সঙ্গে পাশে থাকার জন্য বিক্ষোভকারীদের ধন্যবাদও জানান তিনি।

তার এই অনলাইন বার্তা পোস্ট হওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যে আন্দোলন তীব্র রূপ নিতে থাকে।

মূল বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল প্যারিসে। তবে বৃহস্পতিবার থেকে তা সারা দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। বার্তাসংস্থা রয়টার্সের তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত প্যারিস বিক্ষোভের কেন্দ্র হিসেবে থাকলেও প্রায় একই পরিস্থিতিতে রয়েছে মার্সেইলি, লিয়ন, তুলুস, স্ট্রাসবুর্গ এবং লিলিসহ আরও কয়েকটি শহর।  

তবে দেশটির পুলিশ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের মতে, বিক্ষোভ এখন দাঙ্গায় রূপ নিয়েছে। বিভিন্ন শহরে সমানে পুলিশকে লক্ষ্য করে হামলা, সরকারি-বেসরকারি ভবন ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ, দোকানপাট লুটপাট এবং যানবাহন জ্বালিয়ে দিচ্ছে দাঙ্গাকারীরা।

শুক্রবারের সাক্ষাৎকারে ফ্রান্সের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, দাঙ্গায় নাশকতামূলক কর্মকান্ড ও পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে এ পর্যন্ত গ্রেপ্তারের সংখ্যা ১ হাজার ১০০ জন ছাড়িয়ে গেছে এবং তাদের সবারই গড় বয়স ১৭।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন