প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশ আরও উন্নতি করুক, সেই লক্ষ্য নিয়েই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আমাদের উন্নয়ন শুধু নগরভিত্তিক নয়, তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত যাতে উন্নতি হয় সে কর্মসূচি বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি। গ্রামের মানুষের আর্থসামাজিক উন্নতি যাতে হয়, সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি। এক সময় রংপুর বিভাগ দুর্ভিক্ষ এলাকা ছিল। এখন আর সেখানে দুর্ভিক্ষ হয় না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর উত্তরবঙ্গে মঙ্গা দূর হয়ে গেছে।
সোমবার (৩ জুলাই) দুপুরে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে রাজশাহী ও সিলেট সিটির নবনির্বাচিত মেয়রদের শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ক্ষমতায় এসে আমরা বেসরকারি খাতে অনেক কিছু উন্মুক্ত করে দিই। সেখানে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা আমরা করে দিয়েছি। আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করে মানুষের দোরগোড়ায় স্বাস্থ্যসেবা পৌঁছে দিয়েছি। ৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত আমি যতটুকু উন্নয়ন করেছিলাম, ২০০১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এসে সবগুলো বন্ধ করে দেয়। এমনকি রাস্তাঘাট, ব্রিজ অনেকগুলো কাজ শুরু করেছিলাম, সেগুলো তারা বন্ধ করে দেয়। আবার শুরু করে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড। দুর্নীতি, সন্ত্রাসী, স্বজনপ্রীতি, কালো টাকা এটাই ছিল তাদের একমাত্র কর্মকাণ্ড। বিএনপির আমলে পাঁচবার বাংলাদেশ দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়। অন্যদিকে না পারলেও তাদের আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতির ক্ষেত্রে সেরা হয়েছিল। এটাই আমাদের দুর্ভাগ্য।’
তিনি আরও বলেন, ‘যে বাংলাদেশ মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বিজয়ী জাতি হিসেবে মাথা উঁচু করে বিশ্ব দরবারে চলত; সেই বাংলাদেশ বিশ্ব দরবারে দুর্ভিক্ষের দেশ, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ, দুর্নীতিগ্রস্ত দেশ হয়ে ওঠে। যারা প্রবাসে থাকে তারা অবশ্যই সেই সময়টা অনুধাবন করতে পেরেছিল। বাংলাদেশের কথা শুনলেই করুণার চোখে দেখত।’
সরকারপ্রধান বলেন, ২০০৮ এর নির্বাচনে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছিলাম। আজকের বাংলাদেশ, ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজকে প্রতিঘরে আমরা আলো জ্বালাতে সক্ষম হয়েছি। স্বাক্ষরতার হার আমরা বাড়িয়েছি। নারী ক্ষমতায়নে আমরা আজকে বিশ্বে স্থান করে নিতে পেরেছি। শিশু মৃত্যুহার হ্রাস করেছি, মাতৃ মৃত্যুহার হ্রাস করেছি। সর্বক্ষেত্রে আমাদের দেশে এগিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য উৎপাদনে এখন আমরা শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণ না, বাইরে পাঠাতে পারি। তবে কিছু কিছু জিনিস আমাদের বিদেশ থেকে আনতে হয়।
তিনি বলেন, রাজশাহী ও সিলেট এলাকা অনুন্নত ছিল। রাজশাহী সিটি এখন দৃষ্টিনন্দন উন্নত সিটিতে রূপান্তরিত হয়েছে। কর্মসংস্থানের জন্য আমরা সেখানে অনেক কাজ শুরু করে দিয়েছি। আর সিলেট বিভাগ করার ব্যাপারে সিলেটবাসী যখন আন্দোলন করে তখন আমি বিরোধী দলে থাকলেও সমর্থন দিয়েছিলাম। ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় থাকতে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ঘোষণা দিয়ে যাই। সিলেট এবং রাজশাহী যাতে আরও উন্নত হয় সেটাই আমরা চেয়েছি। সিলেটের সবচেয়ে সমস্যা ছিল সাক্ষরতায় সারা বাংলাদেশের তুলনায় কম ছিল। এখন অনেকটা উন্নত হয়েছে। রাজশাহীতে কর্মসংস্থানের অনেক অভাব ছিল। তখন কলকারখানা তেমন গড়ে ওঠেনি। এখন আমরা সেই ব্যবস্থা নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিটি কর্পোরেশনগুলোতে যারা মেয়র, কাউন্সিলর নির্বাচিত হয়েছেন একটা কথা মনে রাখতে হবে, আপনারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। জনগণের আস্থা বিশ্বাস আপনাদের ওপর। সে যেই দলেরই হন না কেন। জনগণের সেবা করা আপনাদের কর্তব্য। আমরা যখন কাজ করি, প্রত্যেকটা এলাকারই উন্নয়ন করি।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন