ক্ষমতার অপব্যবহারের দায়ে দুই বছর আগে গ্রেপ্তার হন জর্জিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্ট মিখাইল সাকাশভিলি। বর্তমানে গুরুতর অসুস্থ হয়ে কারা কর্তৃপক্ষের অধীনে একটি হাসপাতালে ভর্তি আছেন তিনি।
সেই হাসপাতালের বেড থেকেই সোমবার (৩ জুলাই) ভিডিও কলের মাধ্যমে আদালতের শুনানিতে অংশ নেন মিখাইল। তবে এ সময় তাকে দেখে আঁতকে উঠেন অনেকে।
কারণ মাত্র দুই বছর আগেও সুস্থ এবং স্বাস্থ্যবান ছিলেন ৫৫ বছর বয়সী মিখাইল। কিন্তু বর্তমানে তার পুরো শরীর হাড্ডিসার হয়ে গেছে। চেহারাও বেশ রুগ্ন হয়ে পড়েছে। তাকে হঠাৎ করে দেখে চিনতে পারেননি অনেকে।
২০০৪ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন শেষে মিখাইল বিদেশে পালিয়ে যান। এরপর দীর্ঘ ৮ বছর পর আবারও জর্জিয়ায় ফিরে আসেন তিনি। ফেরার সঙ্গে সঙ্গেই তাকে গ্রেপ্তার করে জেলহাজতে পাঠানো হয়। এই ৮ বছরের মধ্যে তার অনুপস্থিতিতেই ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির অভিযোগে বিচার করে শাস্তি দেওয়া হয়।
সোমবার আদালতের শুনানিতে উপস্থিত হয়ে নিজের টি-শার্ট উঁচিয়ে মিখাইল দেখান তার পুরো শরীর হাড্ডিসার হয়ে গেছে।
তিনি এ সময় বলেন, ‘একজন সম্পূর্ণ নির্দোষ ব্যক্তিকে আটকে রাখা হয়েছে। আমি কোনো অপরাধ করিনি।’
আদালতে তার এ শুনানি কয়েকটি টিভি চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচার করা হয়।
২০২১ সালে গ্রেপ্তার করার পর এ প্রতিবাদে অনশন শুরু করেছিলেন মিখাইল। ৫০ দিনের অনশন শেষে তাকে একটি বেসামরিক হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। বর্তমানে সেখানেই আছেন তিনি। শরীর দুর্বল এবং হাড্ডিসার হয়ে গেলেও আবারও রাজনীতিতে ফিরবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।
মিখাইল বলেছেন, ‘জেলে আটকে রেখে আমাকে ভাঙা যাবে না। আমি জর্জিয়ার রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেব।’
এদিকে জর্জিয়ার এ সাবেক প্রেসিডেন্টের ইউক্রেনের নাগরিকত্বও রয়েছে। এ দুরাবস্থা থেকে মুক্তি দিয়ে মিখাইলকে ইউক্রেনের কাছে অথবা পশ্চিমা কোনো দেশে পাঠানোর অনুরোধ জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমিরি জেলেনস্কি।
জর্জিয়ার সাবেক প্রেসিডেন্টের সেবায় নিযুক্ত এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, অনশন শেষ করার পর দিন দিন তার স্বাস্থ্যের অবনতি হচ্ছে এবং জরুরিভিত্তিতে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন।
সুস্থ অবস্থায় মিখাইলের ওজন ১০০ কেজি ছিল। বর্তমানে তার ওজন দাঁড়িয়েছে মাত্র ৪০ কেজিতে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন