যেসব কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল এবং নির্জন এলাকায় অবস্থিত সেগুলোকে টার্গেট করে ডাকাতি করে চক্রটি। গত ২ জুলাই ঢাকার কেরানীগঞ্জের কলাতিয়ায় অ্যাপিজ গ্লোবাল লিমিটেড নামে একটি কারখানায় ডাকাতি করে চক্রটির বেশ কয়েকজন সদস্য। এতে ৮২ লাখ টাকার মালামাল লুট করে তারা। এ ঘটনায় ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার হওয়া ডাকাতরা হলেন- হামিদুল ইসলাম (৪০), আমিরুল ইসলাম ওরফে রাজু (৪৫), জাহিদ মিয়া (৪০), মনিরুল ইসলাম ওরফে রতন (৩২), আজিজুল হক ওরফে আজিজ (৪৮), ইস্রাফিল (৩০), সজল মিয়া (৩০) ও রাশদিা বেগম (৩৩)।
বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) বেলা ১২টায় ঢাকা জেলা পুলিশ সুপার কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, গত ২ জুলাই রাতে একদল সশস্ত্র ডাকাত কেরানীগঞ্জ মডেল থানার কলাতিয়া নিশানবাড়ী এলাকায় অ্যাপজি গ্লোবাল লি. নামের কারখানায় দায়িত্বরত সিকিউরিটি গার্ড কারখানার গেটে তালা লাগানাের সময় ৪/৫ জন সশস্ত্র ডাকাত সিকিউরিটি গার্ডদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে এবং একজন সিকিউরিটি গার্ডকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করে তিনটি আঙ্গুল কেটে ফেলে। ডাকাতদল নাইট গার্ডদের হাত-পা, চোখ-মুখ বেঁধে কাপড় দিয়ে ঢেকে রাখে। এরপর ডাকাতদলের আরও ৮-১০ জন সদস্য দুটি কাভার্ডভ্যান নিয়ে কারখানায় প্রবেশ করে মূল্যবান কম্বল, কোটিং ফেব্রিক্স রেইনকোট ফেব্রিক্স, মেস কাপড়, স্ট্যান্ড ফ্যান, সিলিং ফ্যানসহ ৮২ লাখ ৩৩ হাজার ৫০০ টাকা মূল্যের জিনিসপত্র নিয়ে যায় এবং গার্ডদের হত্যার হুমকি দেয়।
পুলিশ সুপার বলেন, ৯৯৯-এর থেকে ফোন পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। বিভিন্ন আলামত ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করে ঢাকার সাভার, আশুলিয়া ও গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ৭ ডাকাত ও লুণ্ঠিত মালামাল ক্রয়কারী পলাতক আসামি মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী রাশিদা বেগমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, লুণ্ঠিত মালামাল বিক্রির জন্য মোশাররফের গুদামে রাখা হয়। তার স্ত্রী রাশিদার দেওয়া তথ্য মতে গুদাম থেকে ডাকাতি হওয়া মালামাল উদ্ধার করা হয়।
ডাকাতদের বিষয়ে পুলিশ সুপার বলেন, আসামিরা সবাই আন্তঃজেলা ফ্যাক্টরি ডাকাতচক্রের সক্রিয় সদস্য। তারা ছদ্মবেশে ঢাকার আশপাশসহ নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী এলাকায় যেসব ফ্যাক্টরির নিরাপত্তা ব্যবস্থা দুর্বল ও নির্জন এলাকায় সেসব ফ্যাক্টরির মালামাল ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা রেকি করে ডাকাতি করে। বিভিন্ন এলাকায় চক্রটির সদস্য রয়েছে। তাদের গ্রেপ্তারের প্রক্রিয়া চলছে।
অ্যাপিজ গ্লোবালের মালিক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ডাকাত দলে যারা ছিল তাদের মধ্যে ফ্যাক্টরির লোক থাকতে পারে। নয়তো এতো বড় ডাকাতি করা সম্ভব হতো না। তবে যারা গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের কেউ ফ্যাক্টরির লোক নয়।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন