মোদি পদবী নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্যের অভিযোগে কারাবাসের সাজাপ্রাপ্ত শীর্ষ কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর আপিল খারিজ করে দিয়েছেন গুজরাট হাইকোর্ট। শুক্রবার গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছকের নেতৃত্বাধীন একটি বেঞ্চের রায়ে জানা গেছে এই তথ্য।
এই দিন রাহুল গান্ধীর আপিল আবেদনের ওপর শুনানির দিন ধার্য করা ছিল। শুনানি শেষে এক সংক্ষিপ্ত ঘোষণায় বিচারপতি হেমন্ত প্রচ্ছক বলেন, ‘নিম্ন আদালত রাহুল গান্ধীর সাজার যে রায় দিয়েছে, তা সঠিক।’
গুজরাট হাইকোর্টের এই রায়ের ফলে আপাতত কেরালার ওয়ানাড়ের এমপির পদ ফিরে পাচ্ছেন না রাহুল, সংশয় তৈরি হয়েছে আগামী ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে দাঁড়ানো নিয়েও। এমনকি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে যদি সুপ্রিম কোর্টে তিনি আপিল না করেন, সেক্ষেত্রে কারাগারেও যেতে হবে তাকে।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে কর্নাটকে প্রচারে গিয়ে রাহুল প্রশ্ন তুলেছিলেন, ‘সব চোরেদের পদবী ‘মোদি’ হয় কেন?’ আইপিএল কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত ললিত মোদী, ব্যাঙ্ক-ঋণ মামলায় পলাতক আসামি ও ব্যবসায়ী নীরব মোদীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর তুলনা টেনেছিলেন তিনি।
ওই মন্তব্যের জেরে রাহুলের বিরুদ্ধে ‘পদবী অবমাননার’অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪৯৯ এবং ৫০০ ধারায় গুজরাটের সুরাট জেলার ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে অপরাধমূলক মানহানির মামলা করেছিলেন গুজরাটের বিজেপি নেতা পূর্ণেশ মোদী।
গত ২৩ মার্চ গুজরাতের সুরাত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক এইচএইচ বর্মা ২ বছর জেলের সাজা দিয়েছিলেন রাহুলকে। তবে ‘অপরাধমূলক মানহানি’ মামলায় দোষী রাহুলের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চতর আদালতে আবেদনের জন্য তাকে ৩০ দিন সময় দিয়েছিলেন বিচারক।
তারপর গত ৩ এপ্রিল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এই রায়ের ওপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুরাটেরই দায়রা জজ আদালতে আবেদন করেন রাহুল গান্ধী; কিন্তু গত ২০ এপ্রিল অতিরিক্ত দায়রা বিচারক আরপি মোগেরা সেই আবেদন খারিজ করে সাজা কার্যকরের রায় বহাল রাখেন।
এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে রাহুলের আইনজীবী বিএম মঙ্গুকিয়া সুরাট দায়রা আদালতের সাজা কার্যকর করার নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে হাই কোর্টে আপিল করেন। বিচারপতি গীতা গোপীর বেঞ্চে সেই আবেদন শুনানির জন্য নথিভুক্তও হয়েছিল।
কিন্তু হঠাৎই মামলার শুনানি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন গুজরাট হাই কোর্টের বিচারপতি গোপী। মামলাটি প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর জন্য হাই কোর্টের রেজিস্ট্রারকে নির্দেশ দেন তিনি।
তারপর মামলা যায় বিচারপতি প্রচ্ছকের বেঞ্চে। প্রাথমিক শুনানির পরে সাজাপ্রাপ্ত রাহুলের অন্তর্বর্তিকালীন জামিন বহাল রেখেছিলেন বিচারক; কিন্তু রায়ের উপর স্থগিতাদেশ দেননি। শুক্রবার বিচারপতি সাজা কার্যকরের উপর স্থগিতাদেশ না দেওয়ায় রাহুলকে এ বার সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে হবে বলে আইন বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন।
জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন