পাকিস্তানি গুপ্তচরের ফাঁদে ভারতের বিজ্ঞানী, মিসাইলের তথ্য পাচার

ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে গোপন তথ্য পাকিস্তানের গুপ্তচরকে পাঠাতেন ভারতীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থার (ডিআরডিও) এক বিজ্ঞানী। অভিযুক্ত ওই বিজ্ঞানীর নাম প্রদীপ কুরুলকার। তিনি পুনেতে ডিআরডিও’র একটি ল্যাবরেটরিতে পরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।

পাকিস্তানের গুপ্তচরকে গোপন তথ্য পাঠানোর অভিযোগে তাকে আটক করা হয়েছিল আগেই। এবার তার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আনা হয়েছে। ভারতীয় বার্তাসংস্থা পিটিআইয়ের বরাত দিয়ে শনিবার (৮ জুলাই) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ডিআরডিও বিজ্ঞানী প্রদীপ কুরুলকার পাকিস্তানি এক গোয়েন্দার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গোপন তথ্য পাচার করেছেন। পাকিস্তানি ওই গোয়েন্দা ‘জারা দাশগুপ্ত’ নাম ব্যবহার করেছিলেন এবং তার সঙ্গে চ্যাটিংয়ের সময় অন্যান্য গোপন প্রতিরক্ষা প্রকল্পগুলোর পাশাপাশি ভারতীয় ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা সম্পর্কেও প্রদীপ তাকে তথ্য দিয়েছিলেন বলে চার্জশিটে বলা হয়েছে।

এনডিটিভি বলছে, পুনেতে ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের (ডিআরডিও) একটি ল্যাবের পরিচালক কুরুলকারের বিরুদ্ধে গত সপ্তাহে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে মহারাষ্ট্র পুলিশের অ্যান্টি-টেরোরিজম স্কোয়াড (এটিএস)।

এর আগে অফিসিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্টের অধীনে চলতি বছরের ৩ মে তাকে গুপ্তচরবৃত্তির জন্য গ্রেপ্তার করা হয়েছিল এবং এখন তিনি বিচার বিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন। প্রদীপ কুরুলকার এবং ‘জারা দাশগুপ্ত’ হোয়াটসঅ্যাপের পাশাপাশি ভয়েস ও ভিডিও কলের মাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম বলছে, ‘জারা দাশগুপ্ত’ নিজেকে যুক্তরাজ্যের একজন সফটওয়্যার প্রকৌশলী বলে দাবি করেছিলেন এবং ‘অশ্লীল বার্তা ও ভিডিও’ পাঠিয়ে ভারতীয় বিজ্ঞানী প্রদীপ কুরুলকারের সাথে বন্ধুত্ব করেন। তবে তদন্তের সময় জারার আইপি ঠিকানাটি পাকিস্তানের অ্যাড্রেস বলে সন্ধান পাওয়া যায় বলে এটিএস তার অভিযোগপত্রে বলেছে।

পাকিস্তানি এই গোয়েন্দা এজেন্ট ভারতের ব্রাহ্মোস লঞ্চার, ড্রোন, ইউসিভি, অগ্নি মিসাইল লঞ্চার এবং মিলিটারি ব্রিজিং সিস্টেমসহ অন্যান্য আরও গোপন ও সংবেদনশীল তথ্য পাওয়ার চেষ্টা করেছিলেন বলেও এতে বলা হয়েছে।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, ‘পাকিস্তানি ওই গুপ্তচরের প্রতি প্রদীপ কুরুলকার আকৃষ্ট হয়েছিলেন এবং নিজের ব্যক্তিগত ফোনে ডিআরডিও’র গোপন এবং সংবেদনশীল তথ্য সংরক্ষণ করেছিলেন। তারপরে তা জারার সাথে শেয়ার করেছিলেন তিনি।’

এছাড়া জারা দাশগুপ্তের সাথে সারফেস-টু-এয়ার মিসাইল (এসএএম), ড্রোন, ব্রহ্মোস ও অগ্নি মিসাইল লঞ্চার এবং ইউসিভিসহ বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কে কথাও বলেছেন বিজ্ঞানী প্রদীপ কুরুলকার।

২০২২ সালের জুন মাস থেকে প্রদীপের সঙ্গে পাক গুপ্তচর জারা দাশগুপ্তের যোগাযোগ শুরু হয়। আর সেই যোগাযোগ একই বছরের ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত অব্যাহত ছিল বলেও এটিএস জানিয়েছে।

তবে তার কর্মকাণ্ড সন্দেহজনক বলে প্রমাণিত হওয়ার পর ডিআরডিও অভ্যন্তরীণ তদন্ত শুরু করার ঠিক আগে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জারার নম্বর ব্লক করে দেন প্রদীপ কুরুলকার। তখন জারা অপরিচিত ভারতীয় মোবাইল নম্বর থেকে কুরুলকারের সঙ্গে যোগাযোগ করেন বলেও চার্জশিটে উল্লেখ করেছে এটিএস।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন