সৈয়দ নাজমুল হাসান, ঢাকা ||
ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের চিফ হিট অফিসার বুশরা আফরিনকে নিয়ে এক বক্তব্যের প্রতিবাদে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের কুশপুত্তলিকা পোড়ালেন নারী শিক্ষার্থীরা।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুলাই) সকাল সাড়ে এগারোটায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে এক প্রতিবাদ সমাবেশে মির্জা ফখরুলের কুশপুত্তলিকা পোড়ানো হয়। পাশাপাশি বিএনপি মহাসচিবকে সংবাদ সম্মেলন করে ক্ষমা চাওয়ার দাবি তোলেন নারী শিক্ষার্থীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে যোগ দেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ইডেন মহিলা কলেজ, বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজ, গভর্নমেন্ট কলেজ অব এ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সসহ বিভিন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারন ছাত্রী ও ছাত্রলীগ নেত্রীবৃন্দরা।
সমাবেশে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব হল ছাত্রলীগের সভাপতি কোহিনূর আক্তার রাখী বলেন, "ঢাকার হিট অফিসার নিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর যে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তা নিছক তার একক বক্তব্য নয়, এটি তার দলের দৈন্যতা, দলের নেতাকর্মীদের নিচু মানসিকতা ও নারীদের প্রতি তাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিচ্ছবি। তিনি যেই কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তার জন্য তিনি যেন নারী সমাজের কাছে এসে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। আমরা এধরনের কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য কোনক্রমে মেনে নিতে পারিনা।"
রাখী আরও বলেন, যখন বাংলাদেশ একটি উন্নয়নের অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশের নারী সমাজ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে সেই জায়গায় ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কিভাবে এরকম কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতে পারেন আমাদের চিন্তা-ভাবনায় আসেনা। ‘মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে আমরা বলে দিতে চাই তিনি মনে হয় বয়সের সাথে সাথে তার চিন্তা-চেতনাকে হারিয়ে ফেলেছেন। তিনি যেন কথাবার্তা আরো একটু সাবধান হয়ে বলেন। তিনি যেন কাদেরকে নিয়ে কী বলছেন সেটা ভেবে চিন্তে বলেন। আমরা বিশ্বাস করি মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর একটি মেয়েকে নিয়ে যে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেছেন তা শুধু একটি মেয়েকে নয়, সেটি বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মেয়েকে অপমান করা হয়েছে বলে আমরা বিশ্বাস করি। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই।’
ঢাবির বাংলাদেশ কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রাজিয়া সুলতানা কথা বলেন, ‘বাংলাদেশে যেখানে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা একজন নারী, স্পিকার একজন নারী, শিক্ষামন্ত্রী, বিরোধীদলীয় নেত্রী আছেন নারী সেখানে এরকম কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য আমরা শুনতে বা মানতে চাই না। আমরা আমাদের সিনিয়র আপুদের কাছ থেকে শুনেছি বিগত দশকে যখন বিএনপি ক্ষমতায় ছিলো তখন সন্ধ্যা নামলেই অস্ত্রের ভয়ে ক্যাম্পাসে নারী শিক্ষার্থীরা হাঁটতে পারতো না। সন্ধ্যা হলেই তাদের মুরগির মতো হলে চলে যেতে হতো। কিন্তু এখন রাত দশটা পর্যন্ত ছাত্রীরা স্বাধীনভাবে ঘোরাফেরা করতে পারছে। কারণ এখনকার মেয়েরা নিজেদের অধিকার সম্পর্কে সচেতন। তারা জানে নিজেদের অধিকার কীভাবে আদায় করতে হয়।’
উল্লেখ্য, গত ৮ জুলাই ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকা উত্তর সিটির হিট অফিসার প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিদেশ থেকে ছেলেমেয়ে নিয়ে এসে সিটি করপোরেশনে নিয়োগ দেয়, নাম দেয় হিট অফিসার। তো আমরা তো এখন হিটেড হয়ে গেলাম’।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন