জনগণ সচেতন হলে এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস।
বুধবার (১২ জুলাই) পশ্চিম ধানমন্ডির মধুবাজার জামে মসজিদ সংলগ্ন এলাকায় মশক নিধন কার্যক্রম পরিদর্শন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
শেখ তাপস বলেন, একটি মশার উৎসই পুরো এলাকার জনস্বাস্থ্যের জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। একটি পাত্রে জমে থাকা পানির ভেতর প্রচুর পরিমাণে লার্ভা ও মশা জন্মানো সম্ভব। সুতরাং প্রথমত আমাদের দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। পানি জমে লার্ভা বিস্তারের সুযোগ তৈরি হয় এরকম কোথাও কোনো পরিত্যক্ত পাত্র বা সামগ্রী রাখা যাবে না। নিজেদের আঙিনা, নিজেদের স্থান, নিজেদের স্থাপনা আমরা যদি পরিষ্কার রাখতে পারি তাহলে আমরা অবশ্যই এডিস মশা এবং ডেঙ্গুকে প্রতিরোধ করতে পারব। শতভাগ নির্মূল করতে পারব এটা আমরা বলছি না, কিন্তু জনগণ সচেতন হলে আমরা এটা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারব।
তিনি বলেন, যে বিষয়টি আমাদের সবচেয়ে বেশি ভোগাচ্ছে সেটি হলো এডিস মশার বিস্তার। মশার বিস্তার রোধে এ মৌসুমে আমাদের চলমান অভিযানের কার্যক্রম আজ (বুধবার) আমি নিজেই সশরীরে তদারকি করছি। আজ মধুবাজার এলাকায় আমাদের কর্মী ও কর্মকর্তারা ২৬টি ভবন পরিদর্শন করেছেন। আমি নিজে গিয়েও কয়েকটি ভবন পরিদর্শন করেছি। ভাড়াটিয়ারা যেখানে থাকেন এর পাশের উন্মুক্ত স্থানে তাদের একটি মাটির পাত্রে আমরা পানি ও মশার লার্ভা পেয়েছি। তাদের সচেতন করার জন্য আমরা কথা বলেছি এবং আমরা তা ধ্বংস ও নির্মূল করেছি। এভাবেই আমরা চেষ্টা করছি। যেখানে লার্ভা জন্মানো ও পানি জমে থাকার শঙ্কা রয়েছে সেসব উৎস আমরা ধ্বংস করছি। এছাড়া লার্ভিসাইডিং করছি এবং বিকেলে আবার ফগিং করা হচ্ছে। যাতে করে উন্মুক্ত স্থানে থাকা মশাগুলো নিধন করা যেতে পারে। এভাবেই ডিএসসিসি এলাকার ৭৫টি ওয়ার্ডে অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে আমরা চিরুনি অভিযান পরিচালনা করছি। আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হচ্ছে। এ পর্যন্ত (গত ১৮ জুন হতে গত ১১ জুলাই পর্যন্ত) ২ হাজার ১৩৩টি স্থাপনা, হোল্ডিং ও বাসা-বাড়িতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩৮টি জায়গায় আমরা লার্ভা পেয়েছি। তবে এই পরিসংখ্যান দিয়ে কোনোভাবেই ডেঙ্গু পরিস্থিতি নির্ণয় করা যাবে না। কারণ একটি জায়গায় যে পরিমাণ লার্ভা জন্মাতে পারে বা হওয়ার শঙ্কা থাকে সেটাই কিন্তু পুরো এলাকায় অস্বস্তিকর পরিবেশ সৃষ্টির জন্য যথেষ্ট। সুতরাং আমরা চাইব, সবাই যেন দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করে। যেসব স্থানে বড় বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, বিদ্যালয় ও স্থাপনা রয়েছে, তাদের স্ব স্ব কর্তৃপক্ষ দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করলে আমরা সবাই মিলে ডেঙ্গু পরিস্থিতি প্রতিরোধ করতে পারব।
শুধু বাড়িই নয় বরং বাড়ির চারপাশে কোথাও পানি জমে থাকলে তা নিয়মিত ফেলে দিতে ঢাকাবাসীর প্রতি অনুরোধ জানান ডিএসসিসি মেয়র।
এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মো মিজানুর রহমান, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. ফজলে শামসুল কবির, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিন, প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. ইফতেখার আহমেদ চৌধুরী, ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ইলিয়াছুর রহমান বাবুল ও সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর শিরিন গাফফার।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন