সাতক্ষীরা প্রতিনিধি ||
সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার নলতা হাইস্কুলে শিক্ষকের প্রহারে নবম
শ্রেণীর ছাত্র রাজপ্রতাপ দাসের মৃত্যুর অভিযোগে গ্রেপ্তারকৃত ৪ শিক্ষককে
আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে,নিহত রাজপ্রতাপ দাসের
মরদেহ ময়না তদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। সোমবার (১৭
জুলাই) সকালে নিহতের বাবা দীনবন্ধু দাস বাদি হয়ে কালিগঞ্জ থানায় একটি
হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার আসামীরা হলেন, নলতা হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আব্দুল আব্দুল
মোনায়েম, সহকারী প্রধান শিক্ষক আব্দুল মুহিত, সহকারী শিক্ষক মনিরুল
ইসলাম, অবকাশ কুমার খাঁ ও সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী। এছাড়াও অজ্ঞাতনামা আসামী
করা হয়েছে আরও ৪জনকে। পলাতক সিদ্ধার্থ রায় চৌধুরী ছাড়া বাকী ৪ শিক্ষক
গ্রেপ্তার রয়েছেন।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, ষষ্ঠ শ্রেণীর এক ছাত্রীর জন্মদিনে কেক কেটে
স্কুলের ছাদে টিকটক করার বিষয়টি জানতে পেরে রোববার সকাল ১০টার দিকে
সেখানে ছুঁটে যান সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁ ও মনিরুল ইসলাম। টিকটক বন্ধ
করতে বলায় রাজপ্রতাপসহ নবম শ্রেণীর চার ছাত্র রাজী হয়নি। এ সময়
রাজপ্রতাপসহ চার ছাত্রকে চড় থাপ্পড় মারেন শিক্ষক অবকাশ খাঁ। এরপর
রাজপ্রতাপ বাড়ি এসে বাথরুমে ঢুকে বমি করতে করতে বের হয়। তাকে হাসপাতালে
নেওয়ার পথে রোববার দুপুর আড়াইটার দিকে সে মারা যায়। পরে তার মরদেহ
স্কুলের সামনে রেখে এলাকার লোকজন ব্যাপক বিক্ষোভ ও স্কুলে ভাঙচুর চালায়
এমনকি তারা
প্রধান শিক্ষক আব্দুল মোনায়েম ও সহকারী শিক্ষক অবকাশ খাঁকে গ্রেপ্তারের
দাবিতে তারা শিক্ষকদের অবরুদ্ধ করে রাখে। মারপিট করা হয় শিক্ষক অবকাশ
খাঁ, মনিরুল ইসলাম ও হাসানকে। পরে তারা প্রধান শিক্ষকের রুম, সহকারী
প্রধান শিক্ষক ও শিক্ষকদের রুমে ভাঙচুর চালায়। নয়টি মটর সাইকেল ভেঙে ফেলে
এবং দুটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ
মোতায়েন করা হয়। রোববার সন্ধ্যার পরে প্রধান শিক্ষকসহ কয়েকজন শিক্ষককে
পুলিশ বেষ্টনীর মধ্য দিয়ে থানায় আনা হলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এদিকে রাজপ্রতাপ দাসের নিহতের ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচার দাবি করেছেন নিহতের স্বজনরা।
এবিষয়ে নিহতের দাদা মধু কুমার দাস জানান, রাজপ্রতাপ দাস রোববার না খেয়ে
স্কুলে আসে। এছাড়া আগে থেকে তার কিছু শারীরিক সমস্যা ছিল। তার মৃত্যুর
কারণ সঠিক করে কিছু বলতে পারছিনা। তবে তার ভাইয়ের নিহতের ঘটনায় যদি
শিক্ষকরা দায়ি থাকেন,তবে তাদের শাস্তি দাবি করছি।
সাতক্ষীরার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব খান জানান,নিরাপত্তার কথা ভেবে
আসামীদের সাতক্ষীরা সদর থানায় রাখা হয়েছিল। বিকেল ৩টার দিকে তাদের
আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে। মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের
কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান,ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পাওয়ার পরে মৃত্যুর কারণ সঠিকভাবে
জানা যাবে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন