সম্প্রতি বাংলাদেশে অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ উৎপাদনে ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের আগ্রহ দেখিয়েছে ডেনমার্ক। সেই ধারাবাহিকতায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে এ আগ্রহের কথা জানিয়েছেন বাংলাদেশে দেশটির বিদায়ী রাষ্ট্রদূত উইনি ইস্ট্রুপ পিটারসেন।
বুধবার (১৯ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তার সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত। পরে এক সংবাদ সম্মেলনে সাক্ষাতের ব্যাপারে বিস্তারিত জানান প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের উন্নয়নে ডেনমার্কের মতো বন্ধুপ্রতিম দেশগুলোর সহায়তা চান।
এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা উল্লেখ করেন, বাংলাদেশ সারাদেশে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রতিষ্ঠা করেছে, যেখানে বিদেশি ও দেশীয় উভয় ধরনের বিনিয়োগ প্রয়োজন।
এসময় বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে ৫০ বছরের উন্নয়ন অংশীদারিত্বের প্রশংসা করেন তারা। বৈঠকে বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেন রাষ্ট্রদূত।
শেখ হাসিনা জানান, দেশে দারিদ্র্যের মাত্রা অনেকাংশে কমিয়েছে তার সরকার।
নারীর উন্নয়নের কথা উল্লেখ করে তিনি জানান, তার সরকার নারীদের খেলাধুলার উন্নয়নে জোর দিয়েছে।
দেশে গণতন্ত্রের উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা দীর্ঘ সংগ্রাম করেছি।
ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত জানান, তার দেশ বিশ্বব্যাপী আইসিটি খাতে ষষ্ঠ বৃহত্তম রপ্তানিকারক দেশ।
পিটারসেন বলেন, দুই দেশ মানব উন্নয়নসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে পারে।
তিনি বলেন, আমরা সহযোগিতার মাধ্যমে অনেক কিছু অর্জন করেছি।
বিদায়ী রাষ্ট্রদূত জানান, তিনি বাংলাদেশের বন্ধুদের সঙ্গে দারুণ সময় কাটিয়েছেন।
উন্নয়ন অংশীদারিত্বের ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীকে বই উপহার দেন রাষ্ট্রদূত।
এসময় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, বঙ্গোপসাগরে ১.৩ বিলিয়ন ডলার ব্যয়ে একটি অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার জন্য স্থানীয় শিল্পগোষ্ঠী সামিট গ্রুপের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করবে ডেনমার্কের বিনিয়োগকারী সিআইপি ও উন্নয়নকারী সিওপি। এর সুবাদে দেশের অফশোর বায়ুশক্তির বড় উল্লম্ফন ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জমা দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী, ৫০০ মেগাওয়াট সক্ষমতার এই অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প স্থাপন করতে চান ড্যানিশ বিনিয়োগকারীরা। এটিই বায়ুবিদ্যুৎ খাতে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে বড় বিনিয়োগ প্রস্তাব হবে।
চব্বিশ ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনে সক্ষম হওয়ায় প্রকল্পটি বাংলাদেশের জন্য একটি প্রতিযোগিতামূলক বিকল্প হতে পারে। কারণ অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ কেন্দ্রে প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ প্রায় ০.০৭৫ মার্কিন ডলার— বর্তমান বিনিময় হারে যা ৭.৮৬ টাকা। এ ব্যয় কয়লা কিংবা বা এলএনজি ও তেলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর চেয়ে অনেক কম।
কোপেনহেগেন অফশোর পার্টনারস (সিওপি) শুধু কোপেনহেগেন ইনফ্রাস্ট্রাকচার পার্টনারসের (সিআইপি) জন্য অফশোর বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। সিআইপি বিশ্বের অন্যতম প্রধান সবুজ অবকাঠামো তহবিল ব্যবস্থাপক।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন