জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
সিলেট মহানগরীর বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতনের কারণে নিহত রায়হানের দ্বিতীয় ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছে আজ বৃহস্পতিবার (২২ অক্টোবর)। তাতে বলা হয়েছে, ভোতা অস্ত্রের একের পর এক আঘাতে তার মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়। প্লাস কিংবা অন্য কোনো যন্ত্র দিয়ে টেনে উপড়ে ফেলা হয় দুটি নখ। মৃত্যুর ২ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে এসব নির্যাতন চালানো হয়েছে।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ফরেনসিক বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ডা. শামসুল ইসলাম। তিনি বলেন, নিহত রায়হানের প্রথম দফা ময়নাতদন্ত রিপোর্টের সঙ্গে দ্বিতীয় দফার রিপোর্টটির মিল রয়েছে। ভোঁতা অস্ত্রের আঘাতের কারণেই রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআই সিলেটের পুলিশ পরিদর্শক মুহিদুল ইসলাম বলেন, ওসমানী মেডিকেল থেকে রায়হানের দ্বিতীয় দফা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আমরা পেয়েছি। এই রিপোর্টটি প্রাথমিক রিপোর্ট।
এর আগে, পুনরায় ময়নাতদন্তের জন্য রায়হানের মরদেহ কবর থেকে উত্তোলনের আবেদন করেছিলেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কোতোয়ালি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুল বাতেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রায়হান আহমদের মরদেহ কবর থেকে তোলার অনুমতি দেন জেলা প্রশাসক। পুলিশ সদর দপ্তরের নির্দেশে বর্তমানে এই মামলাটির তদন্ত করেছে পিবিআই। বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) সিলেট জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সজিব আহমেদের উপস্থিতিতে আখালিয়া নবাবী মসজিদ কবরস্থান থেকে রায়হানের লাশ উত্তোলন করা হয়।
প্রথম ময়নাতদন্তের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়েছিল ১৭ অক্টোবর। সেই রিপোর্টে বলা হয়েছে, অতিরিক্ত আঘাতের কারণে রায়হানের শরীরের মাংস থেতলে গেছে এবং রগ ফেটে গেছে। ওপর থেকে সেটা দেখা না গেলেও ভেতরে রগ ফেটে গিয়ে যে ইন্টারনাল ব্লিডিং হয়েছে, তার কারণেই রায়হানের মৃত্যু হয়। রিপোর্ট অনুযায়ী তার শরীরে পাওয়া গেছে ১১১টি আঘাতের চিহ্ন। যার মধ্যে ১৪টি গুরুতর আঘাত ছিল।
প্রসঙ্গত, গত ১১ অক্টোবর ঘটে এমন নৃশংস ঘটনা। রায়হানের মা সালমা বেগম বলেন, ডিউটি শেষে রাত ১০টায় রায়হানের ফেরার কথা থাকলেও মধ্যরাত পর্যন্ত ফেরেনি। খোঁজাখুঁজির এক পর্যায়ে ভোর ৪টা ২৩ মিনিটে একটি নম্বর থেকে (০১৭৮ ৩৫৬১১১১) কল করে ১০ হাজার টাকা নিয়ে পুলিশ ফাঁড়িতে যেতে বলা হয়। ঘণ্টাখানেকের মধ্যে ফাঁড়িতে যাওয়ার পর বলা হয়, রায়হান হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। সেখানে গিয়ে দেখতে পাই আমার ছেলে মৃত।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন