কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো ও তার স্ত্রী সোফি গ্রেগরী ১৮ বছরের সংসার জীবনের ইতি টেনেছেন—আলোচনা এখন নেট দুনিয়ায় সুপার ট্রেন্ডিং ইস্যু। তাদের বিচ্ছেদ আলোচিত হয়েছে বিশ্বজুড়ে। সুদর্শন ট্রুডোর মুগ্ধ করা ব্যক্তিত্ব আগে থেকেই আলোচনায় ছিল, তাই হঠাৎ এমন খবর সবাইকে অবাক করেছে, হচ্ছে ট্রুডো-সোফি চর্চা।
তাদের বিচ্ছেদ দিয়ে অনেক রথী-মহারথীরাও মন্তব্য করেছেন। এবার সেই স্রোতে গা ভাসিয়েছেন ভারতে বসবাসরত বাংলাদেশি লেখিকা তসলিমা নাসরিন। ট্রুডো-সোফি বিচ্ছেদ নিয়ে তার মন্তব্য, ‘যদি সোফি হতাম, জাস্টিনের মতো পাগল করা প্রেমিককে ত্যাগ করতাম না’
বৃহস্পতিবার রাতে তার ফেসবুক ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টে এ নিয়ে স্ট্যাটাস দেন এ লেখিকা।
আমি তো ডিভোর্স দিতে খুব পারি। ভাবতাম দুনিয়াতে আমিই বুঝি খুঁতহীন নির্ভেজাল সম্পর্ক চাই, ছোটলোকির সঙ্গে, প্রভুত্ব ফলানোর সঙ্গে আপোস একেবারেই করি না। এখন দেখছি আমার চেয়েও বেশি নিখুঁত সম্পর্কে বিশ্বাস করেন সোফি গ্রেগরী। আমি যদি সোফি গ্রেগরী হতাম, কোনও দিনই জাস্টিনের মতো এমন সুদর্শন, আদর্শবান, এমন মানবিক এবং এমন পাগল করা প্রেমিককে ত্যাগ করতাম না।
এমন নিখুঁত সুপুরুষের কি সত্যিই কোনও খুঁত থাকতে পারে! আসলে দূর থেকে আমরা কোনও দিনই জানবো না কী কারণে স্বামী স্ত্রীর সম্পর্কে ফাটল ধরেছে। তারপরও আমার একটি আশা, কিছুদিন পর যখন স্বামী স্ত্রী তাদের সন্তানদের নিয়ে পারিবারিক ছুটি কাটাবেন, তখন পরস্পরের প্রতি তাদের যে তীব্র ভালবাসা, সেটি এক ফুৎকারে তাঁদের অভিমান, অভিযোগ, আর অসন্তোষগুলোকে তুলোর মতো উড়িয়ে দেবে। শুধু আশায় বসতি! আমার আশা পূরণ না হওয়ার সম্ভাবনাই সম্ভবত বেশি।
পৃথিবীর কতো সুখী দম্পতির ছাড়াছাড়ি হয়ে গেল। কত আদর্শবান জুটির তালাক হয়ে গেল। আমরা বাইরে থেকে শুধু কল্পনা করে নিই উপন্যাসের নায়কের মতো, সিনেমার হিরোর মতো এক একজন পছন্দের পুরুষকে, যেন তাঁরা অনৈতিক কিছু করতে পারেন না।
বিল ক্লিনটনকে নিয়েও তো এমনই ভেবেছিল গোটা জগৎ। কিন্তু দেখল তারও স্খলন হয়েছে, এত বড় স্খলনের পরও কিন্তু বিলের স্ত্রী বিলকে ডিভোর্স দেয়নি। আর জাস্টিনের কোনও স্খলন না থাকলেও সম্পর্ক চুরমার হয়ে গেল। হয়তো সোফিই নতুন কোনও সম্পর্কে জড়িয়েছেন কে জানে! অথবা কে জানে জাস্টিনই উভকামী কি না!
কেন অন্যের ব্যক্তিগত ব্যাপারে নাক গলাচ্ছি! নাক থাকলে নাক গলাতেই হয়। পাবলিক ফিগারদের জীবন পাবলিকের। পাবলিক তাদের নিয়ে গবেষণা করবে। তাদের চরিত্রের চুলচেরা বিশ্লেষণ করবে। পাবলিক তাঁদের জন্য হা-হুতাশ করবে, কাদবে। পাবলিক তাঁদের সুখে সুখী হবে। পাবলিক ছাড়া তাঁদের চলে না। পাবলিকেরও তাঁদের ছাড়া চলে না।
সুখী হওয়াটাই আসল। নিজের জীবন দিয়ে জানি আমি যখন একা, আমি সুখী। দুতিনটে টক্সিক মাসক্যুলিনিটির কবল থেকে দ্রুত মুক্ত হয়ে আমি একা একাই ভাল থাকি। কিন্তু টক্সিক না হয়ে সম্পর্ক যদি ভালবাসাময় হতো! তাহলে ভালবাসা আঁকড়ে পড়ে থাকতাম সবটা জীবন। আসলে ভালবাসা ছেড়ে কেউ কোথাও যায় না। যারা যায়, অবিশ্বাসের সাপ তাদের ছোবল দিতে চায় বলেই যায়।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন