উত্তর আমেরিকার দেশ মেক্সিকোর মার্কিন সীমান্তে ভিড় করেছেন শত শত অভিবাসী। যুক্তরাষ্ট্র বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে দেশটিতে প্রবেশ করতে দেবে; এমন মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর তারা সেখানে ভিড় করেন।
মূলত সোশ্যাল মিডিয়া ও মানুষের মুখে মুখে এই গুজব ছড়িয়ে পড়ে এবং এরপর রাতের আঁধারেই মানুষ মার্কিন সীমান্তে জড়ো হন। বুধবার (৯ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া এবং মানুষের মুখে মুখে মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর মেক্সিকোর উত্তরাঞ্চলীয় সিউদাদ জুয়ারেজ শহরের মার্কিন সীমান্তে জড়ো হন শত শত অভিবাসী। যুক্তরাষ্ট্র বিপুল সংখ্যক অভিবাসীকে প্রবেশ করার সুযোগ দিচ্ছে এমন গুজবে স্থানীয় সময় সোমবার রাতেই তারা সীমান্তে অবস্থান নেন।
কেউ কেউ বলেছেন, তারা সিবিপি ওয়ান নামে একটি মার্কিন মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে আশ্রয়ের আবেদন করার জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে কয়েক সপ্তাহ ধরে সীমান্তে অপেক্ষা করছেন। এছাড়া এই উপায়ের বিকল্প হিসেবে কোনও রকমে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করার চেষ্টা করতেও আগ্রহী তারা।
রয়টার্স বলছে, মিথ্যা গুজব ছড়িয়ে পড়ার পর টেক্সাস শহরের এল পাসোর ঠিক বিপরীতে সীমান্তের চারপাশে প্রায় ১ হাজার অভিবাসী জড়ো হয়েছিলেন। এসব অভিবাসীদের কেউ কেউ সীমানা প্রাচীরের স্ল্যাটের মধ্য দিয়ে উঁকি দিয়ে সময় কাটান এবং অন্যরা যুক্তরাষ্ট্রের দিকে যাওয়া একটি ট্রেন লাইনের পাশে বসেছিলেন।
তবে রেলওয়ে লাইন ও রেলগেটের অংশজুড়ে রেজারের তার টানিয়ে দিয়েছেন কাস্টমস অ্যান্ড বর্ডার প্রোটেকশনের কর্মকর্তারা।
যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে ইচ্ছুক ভেনেজুয়েলার অভিবাসী জোহান রামিরেজ বলেছেন, ‘আপনি দেখতে পাচ্ছেন কত মানুষ সীমান্ত পার করতে চায়... আর সেটি কেবল আমাদের পরিবারের জন্য, আমাদের ভবিষ্যতের জন্য। আমরা এখানে অনেক দিন কাটিয়েছি। আমাদের টাকা ফুরিয়ে আসছে, আমরা রাস্তায় ঘুমাচ্ছি।’
উল্লেখ্য, প্রতিবছর মধ্য আমেরিকা থেকে লাখ লাখ অভিবাসনপ্রত্যাশী যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশের চেষ্টা করেন। তাদের মধ্যে অনেকে পায়ে হেঁটে আবার অনেকে ‘ক্যারাভ্যান’ নামে পরিচিত বিভিন্ন গ্রুপে ভাগ হয়ে মেক্সিকোর ভেতর দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পৌঁছান।
অভিবাসীদের ক্রমবর্ধমান চাপ সামলাতে কার্যত সংগ্রাম করছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন। নিজ নিজ ভূখণ্ড থেকে মেক্সিকো পাড়ি দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পৌঁছানোই হচ্ছে অভিবাসীদের প্রাথমিক লক্ষ্য। অভিবাসনপ্রত্যাশীদের দাবি, অত্যাচার, সহিংসতা ও দারিদ্র্যতার কারণে তারা মাতৃভূমি ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে চলে যেতে চান।
২০২২ সালে এক প্রতিবেদনে রয়টার্স বলেছিল, সহিংসতা ও দারিদ্র্যতার কারণে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার উদ্দেশে মেক্সিকোতে পৌঁছানো মানুষের সংখ্যা সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেড়েছে। ২০২১ সালে উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে আশ্রয় চাওয়া মানুষের সংখ্যা আগের বছরের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছিল ৮৭ শতাংশ। আশ্রয়প্রার্থী সেসব মানুষের বেশিরভাগই ছিল হাইতি ও হন্ডুরাসের বাসিন্দা।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন