নবীগঞ্জে চুরির হিড়িক! থানায় লিখিত অভিযোগ! চোররা পলাতক

নবীগঞ্জ হবিগঞ্জ প্রতিনিধি ||

হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার কুর্শি ইউনিয়নের কুর্শি গ্রামের পার্শ্ববর্তী জোয়াল ভাঙ্গা হাওর ও আশপাশ এলাকার জমি চাষাবাদের কাজে ব্যবহৃত পাওয়ার টিলার মেশিন চুরির হিড়িক পড়েছে৷ গত এক মাসে ওই এলাকা থেকে পাওয়ার টিলার মেশিন সহ প্রায় ১০/১২টি চুরির ঘটনা ঘটেছে৷ আশংকা জনক হারে বেড়েছে মেশিন ও গরু চুরি। চোর চক্রের দৌরাত্বে প্রায় অসহায় হয়ে পড়েছেন কৃষক/কৃষানিরা। এতে স্থানীয় কৃষক ও সাধারণ মানুষের মধ্যে চোর আতংক বিরাজ করছে৷ এ ঘটনায় জমি চাষাবাদে মারাক্তক ব্যাঘাত ঘটছে বলে কৃষরা জানিয়েছেন৷ এ ব্যাপারে কুর্শি ইউনিয়নের কুর্শি গ্রামের কৃষক আবজল মিয়া ও কল্যাণ পুর গ্রামের কৃষক আব্দুল কাইয়ূম জানান, গত ৩১ জুলাই সোমবার সন্ধ্যায় তারা জমি চাষাবাদ শেষে তাদের পাওয়ার টিলার মেশিন দু'টি প্রতিদিনের ন্যায় জমিতেই রেখে যান। পরদিন সকালে এসে দেখেন তাদের মেশিন দু'টি নেই! চোরের দল চুরি করে নিয়ে গেছে। গত ১৩ জুলাই, ১০ মহরম তারিখ সন্ধার হইতে যেকোন এক সময়ে কল্যানপুর গ্রামের আব্দুল কাইয়ুম মিয়া, কুর্শি গ্রামের আফজল মিয়ার হালের মেশিনের বডি রেখে ইঞ্চিল খুলে নিয়ে যায় চোরচত্র।

অপরদিকে, কুর্শি স্ট্যান্ডে অবস্থিত একটি গ্রেরজের তালা ভেঙ্গে একটি অটোরিক্সা নিয়ে যায়। এই অটোরিকক্সা দিয়ে চোরাইকৃত ইঞ্চিল নিয়ে যায় নবীগঞ্জ ভাঙ্গারিতে। পরদিন সকালে মালিকরা এসে তাদের গাড়ি না পেয়ে বিভিন্ন স্থানে অনেক খোঁজাখুজির পর গোপন তথ্যের বৃত্তিতে জানা যায়, কুর্শি গ্রামের আমীর উল্লার পুত্র ছইফুল মিয়ার নেতৃত্বে একই গ্রামের শফিক মিয়ার পুত্র জুয়েল মিয়া গংরা মিলে এই পাওয়ার টিলার মেশিন দু'টি নবীগঞ্জ শহরের সালামতপুর আবাসিক এলাকায় ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী সাহেব আলী নামের এক ব্যক্তির কাছে বিক্রি করে দিয়েছে৷ এ খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক সময়ে পাওয়ার টিলার মেশিনের মালিকগণ ও কুর্শি এলাকার শ্রমিক নেতা জয়নাল মিয়া সহ আরো অনেকেই মিলে নবীগঞ্জে ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী সাহেব আলীর নিকট চলে যান। তবে, তাদের উপস্থিতি আচ করতে পেরে সু-চতুর সাহেব আলী চম্পট দেয়। অটোরিক্সা চুরি করে ইঞ্চিলগুলো নিয়ে যায়। এ ব্যাপারে সাহেব আলীর জনৈকা স্ত্রী বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, আমার স্বামীর কোনো দোষ নাই। তবে, চোরদের সাথে তার স্বামী মোবাইল ফোনালাপের রেকর্ড শুনান৷ এ সময় রেকর্ডটি সংরক্ষণ করা হয়েছে৷ অপরদিকে পাওয়ার টিলার মেশিন চোরেরা এখবর জানতে পেরে বিগত ১২ দিন ধরে আত্মগোপনে চলে যায়৷ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান, ছইফুল গংরা একটি বিরাট চক্র। কৃষকদের পুকুরের মাছ চুরি সহ এমন কোন অপকর্ম নেই যে তারা করে না। কিছুদিন পর পরই কুর্শি হ্যাচারি কমপ্লেক্সের পুকুর থেকেও মাছ চুরি হয়ে থাকে। ধারনা করা হচ্ছে এই চক্রই চুরি করেছে। প্রাণের ভয়ে কেউ তাদের অপকর্মের প্রতিবাদ করতে সাহস পায় না। ইতিপূর্বে এই চক্র অনেকগুলো চুরির ঘটনা সংগঠিত করেছে। কেহ যদি মূখ খুলে তাদেরকে তারা বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে থাকে। তাই প্রাণ ভয়ে কেউ কথা বলার সাহস পায় না। এ ব্যাপারে কৃষক আব্দুল কাইয়ূম বলেন, আমাদের হাওর থেকে বিগত ১ মাসে এভাবে আরো প্রায় ১০/ ১২টি পাওয়ার টিলার মেশিন চুরি হয়েছে৷ এর নেপথ্যে রয়েছে এই চোর চক্র। ভাঙ্গারি ব্যবসার আড়ালে এসব চোরদের আশ্রয় পশ্রয় দিচ্ছে সাহেব আলীর মতো আরো অনেক অসাধু ভাঙ্গারী ব্যবসায়ীরা। স্থানীয়দের যে কোন বাড়ি থেকে বিভিন্ন জিনিস পত্র চুরি হওয়া জিনিস পত্র কিনে সেগুলো দিয়ে অবৈধ ভাঙ্গারী ব্যবসা করায় এলাকার চুরের উপর্দপও বাড়ছে বলে জানান স্থানীয়রা। এসব ভাঙ্গারী ব্যবসায়ী ও চোরদের বিরুদ্ধে দ্রুত প্রশাসনিক অভিযান চালানোর দাবী জানান এলাকাবাসী। এ বিষয়টি জানতে চাইলে অভিযোগ তদন্তকারী কর্মকর্তা নবীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার স্বপন সরকার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি, এবং চোরাই মালামাল উদ্ধার সহ চোরদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে৷

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন