কারবালার ঘটনার আরেকটি পুনরাবৃত্তি ১৫ আগস্ট বাংলাদেশে ঘটে গিয়েছিল উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কারবালায় নারী-শিশুদের হত্যা করা হয়নি। কিন্তু ১৫ আগস্ট ঘাতকরা আমার মা, আমার ভাইয়ের স্ত্রীদের ছাড়েনি। চার বছরের শিশুকেও ছাড়েনি। সবাইকে হত্যা করা হয়।
রোববার (১৩ আগস্ট) দুপুরে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় হিফজুল কোরআন প্রতিযোগিতার পুরস্কার ও সম্মাননা ক্রেস্ট বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেই রাতে আমি ও আমার ছোট বোন দেশের বাইরে ছিলাম। স্বজনহারা আর্তনাদ আর ঘর বাড়ি ছাড়া ছয়টি বছর আমাদের কাটাতে হয়েছে। '৮১ সালে আমরা দেশে ফিরে আসি। দেশে ফিরে আমি সেই চেনা মুখগুলো পাইনি। যারা আমাকে এয়ারপোর্টে পৌঁছে দিয়েছিল। আমি পেয়েছিলাম বনানীতে সারি সারি কবর। পেয়েছি বাংলাদেশের মানুষ। কাজেই সে মানুষগুলো আমার পরিবার, তারাই আমার আপনজন। তাদের মাঝেই ফিরে পেয়েছি আমার বাবার ভালোবাসা, মায়ের স্নেহ।
তিনি বলেন, আমি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসা, আস্থা, বিশ্বাস পেয়েছি। যা আমাকে প্রেরণা যুগিয়েছে, শক্তি যুগিয়েছে, সাহস যুগিয়েছে। বারবার মৃত্যুকে সামনে থেকে দেখেছি। কিন্তু আমি কোনোদিন ভয় পাইনি। কেন যেন মনে হতো আল্লাহ আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন, এ দেশের মানুষের জন্য কিছু করার জন্য। আল্লাহ প্রত্যেক মানুষকে কিছু সময় দেন, কিছু মানুষকে কিছু কাজ দেন, এই কাজটা আমি যতক্ষণ না পর্যন্ত শেষ করব, রাব্বুল আলামিন আমাকে রক্ষা করবেন। এ বিশ্বাস নিয়ে আমার পথ চলা।
বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করাই একমাত্র লক্ষ্য জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের মানুষ ভূমিহীন থাকবে না। প্রতিটা জেলা-উপজেলায় কেউ ভূমিহীন থাকবে না। সবার মাথা গোজার ঠাঁই করে দেওয়া হবে। ১৯৯৬ সাল থেকে আমরা সেই পরিকল্পনা শুরু করেছিলাম।
আওয়ামী লীগ সবসময় ইসলামের উন্নয়নের কাজ করে জানিয়ে তিনি বলেন, ’৯৬ সালে যখন আমরা প্রথম ক্ষমতায় আসি তখনই বায়তুল মোকাররমের একটি মিনার ও মসজিদের উন্নয়নের কাজের পদক্ষেপ নিয়েছিলাম। সে কাজও শুরু করেছিলাম। দুর্ভাগ্যের বিষয় ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ সরকারে আসতে পারেনি। এসেছিল খালেদা জিয়া। তার সঙ্গে ছিল জামায়াত। খালেদা জিয়া এসেই মসজিদ নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেয়। শুধু বায়তুল মোকাররম নয়, ঢাকা ক্যান্টনমেন্টেও বড় একটি মসজিদের কাজে হাত দিয়েছিলাম, এটার কাজও বন্ধ করে দেয়। তারপর সরকারে আসার পর সেই বায়তুল মোকাররমের অসমাপ্ত কাজ সম্পন্ন করি।
ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশন আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ দ্বীনি সেবা ফাউন্ডেশনের প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব মো. আবুল কালাম আজাদ।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন