১৯ শতকের রাশিয়া-বিরোধী কবিতাকে ‘চরমপন্থি’ ঘোষণা বেলারুশের

ঊনবিংশ শতকের দু’টি কবিতাকে ‘চরমপন্থি’ ঘোষণা করেছে পূর্ব ইউরোপের দেশ বেলারুশ। বিরোধী এবং সমালোচকদের বিরুদ্ধে দেশটির সরকার নিয়মিত ক্র্যাকডাউন চালিয়ে থাকে এবং রাশিয়ার মিত্র এই দেশটির সর্বশেষ এই সিদ্ধান্তে কর্তৃপক্ষের সমালোচনার বিরুদ্ধে দমনপীড়ন আরও প্রসারিত হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে।

বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৯ শতকের দু’টি বেলারুশিয়ান কবিতাকে ‘চরমপন্থি’ হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে। ওই কবিতা দু’টি ভিনসেন্ট ডানিন-মার্টসিনকেভিচের লেখা এবং এর বিষয়বস্তু রাশিয়ান সাম্রাজ্যের বিরুদ্ধে জাতীয়তাবাদী অভ্যুত্থান বা বিপ্লবের সাথে সম্পর্কিত।

বেলারুশিয়ান প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো ইউরোপের দীর্ঘতম শাসক। কর্তৃত্ববাদী এই বেলারুশ নেতা ২০২০ সালের নির্বাচনের পর থেকে ক্ষমতায় তার দখল আরও দৃঢ় করেছেন। যদিও সেই নির্বাচনে ব্যাপকভাবে কারচুপি হয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে।

এরপর থেকে তিনি রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত হয়েছেন এবং ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনে সমর্থনও দিয়ে আসছেন। আর এবার রাশিয়ান সাম্রাজ্য-বিরোধী কবিতা নিষিদ্ধ করলেন তিনি।

এদিকে কবিতার ওপর এই নিষেধাজ্ঞাকে সর্বগ্রাসীবাদে রূপান্তরের অংশ হিসাবে বর্ণনা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ বেলারুশের বর্তমান সরকারের অনেক বিরোধী জাতীয়তাবাদী ব্যক্তি প্রেসিডেন্ট  লুকাশেঙ্কোর রুশপন্থি অবস্থানকে অপছন্দ করেন।

আর এর কারণে বিরোধীদের বেশিরভাগই এখন দেশ ছেড়ে পালিয়েছে বা কারাগারে আছে।

বৃহস্পতিবার রাজধানী মিনস্কে প্রসিকিউটর অফিসের দেওয়া এক ঘোষণায় বলা হয়েছে, সাহিত্য সমালোচক ইয়াজেপ ইয়ানুশকেভিচের লেখকের সংগৃহীত রচনাগুলোর একটি ভূমিকা (মুখবন্ধ)-সহ দ্য উইন্ডস এবং ফ্লোটিং অ্যান্ড কনভারসেশন অব অ্যান এল্ডারলি ম্যান নামের দু’টি কবিতাকে ‘চরমপন্থি উপাদান হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।’

বিবিসি বলছে, চরমপন্থি বলে ঘোষণা করা এই কবিতাগুলো ১৮৬৩ সালের কাস্তুস কালিনোস্কি বিদ্রোহের সময় বেলারুশিয়ান এবং পোলরা লিখেছিল। মূলত সেসময় পোল্যান্ডও রাশিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ ছিল।

অবশ্য এই কবিতা লেখার দায়ে ডানিন-মার্টসিনকেভিচের বিরুদ্ধে সেই সময়ে ‘কর্তৃপক্ষের জন্য ক্ষতিকর’ আদর্শ প্রচারের অভিযোগ আনা হয়েছিল। আর এই অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার এবং কারারুদ্ধ করা হয়।

কিন্তু কাস্তুস কালিনোস্কি বিদ্রোহে তার সরাসরি অংশগ্রহণ কখনোই প্রমাণিত হয়নি। এরপরও ডানিন-মার্টসিনকেভিচের কাজ ও রচনাগুলো আজ স্কুল পাঠ্যক্রমের অংশ এবং তার নাটকগুলো নিয়মিতভাবে পরিবেশিত হয়।

এছাড়া তার নামে বেশ কয়েকটি রাস্তার নামকরণ করা হয়েছে এবং বেলারুশের দক্ষিণ-পূর্বে তার নিজ শহর বোব্রুইস্কে এই কবিকে নিয়ে উৎসব হয়।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন