বিমান দুর্ঘটনায় নিহত রুশ বেসরকারি সেনাবাহিনী ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিনের মৃত্যু নিয়ে অবশেষে মুখ খুলেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। প্রিগোজিনকে একজন ‘গুণী ব্যক্তি’ বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক ভাষণে পুতিন বলেন, ‘বুধবার কুঝেনকিনো অঞ্চলে বিমান দুর্ঘটনায় যাদের মৃত্যু হয়েছে, তাদের সবার পরিবারের সদস্যদের প্রতি প্রথমেই আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। এটা ছিল খুবই হৃদয় বিদারক একটি দুর্ঘটনা।’
‘প্রিগোজিনের সঙ্গে আমার পরিচয়,জানাশোনা বহুদিনের। ৯০ দশকের শুরুর দিকে তার সঙ্গে আমার পরিচয় হয়েছিল। তিনি ছিলেন একজন মেধাবী এবং বেশ জটিল ভাগ্যের একজন মানুষ। নিজের জীবনে কিছু গুরুতর ভুল তিনি করেছেন, সেসবের ফলাফলও পেয়েছেন।’
গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ‘এমব্রেয়ার লিগ্যাসি’নামের ব্যক্তিগত ওই উড়োজাহাজটি রাশিয়ার মস্কো থেকে সেন্ট পিটার্সবার্গ শহরে যাচ্ছিল। পথে কুঝেনকিনো এলাকায় বিধ্বস্ত হয় সেটি। উড়োজাহাজে থাকা সাত যাত্রীর মধ্যে ছিল প্রিগোশিন ও ভাগনারের আরেক শীর্ষ নেতা দিমিত্রি উতকিনের নাম। বিধ্বস্ত হওয়ার পর সেটিতে থাকা ১০ আরোহীর কেউ বেঁচে নেই বলে প্রাথমিকভাবে জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবারের ভাষণে পুতিন জানান, রাশিয়ার তদন্ত সংস্থা ইতোমধ্যে এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে এবং আগামী কিছুদিনের মধ্যেই এই দুর্ঘটনা সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য জানা যাবে।
তিনি বলেন, ‘প্রিগোশিন সবে আফ্রিকা সফর থেকে ফিরেছিলেন বলে জানান পুতিন। তিনি বলেন, ‘আমি যত দূর জানি, প্রিগোজিন গতকালই আফ্রিকা থেকে ফিরেছিলেন। তিনি কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে দেখা করতে সেখানে গিয়েছিলেন তিনি।’
‘আজ সকালে আমাকে উড়োজাহাজ দুর্ঘটনার খবর জানানো হয়েছে। কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থাকে আমি ঘটনাটি তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত শেষ হতে খানিকটা সময় লাগবে।’
আজ সকালে তাঁকে উড়োজাহাজ বিধ্বস্তের খবর জানানো হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ঘটনা তদন্ত করে দেখা হবে। তবে এতে সময় লাগবে।
৬২ বছর বয়সী প্রিগোজিন একসময় পুতিনের ঘনিষ্ঠ ছিলেন। সে সূত্র ধরেই ওয়াগনার গ্রুপের প্রধান হন তিনি। সরকারি সেনাবাহিনীর সহযোগী হিসেবে আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধ করেছে ওয়াগনার গ্রুপ। ইউক্রেন যুদ্ধেও মস্কোর বড় সফলতা এসেছে এই বাহিনীর হাত ধরে।
গেল জুনে প্রিগোজিন রুশ সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন; যা শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। এরপর আড়ালে চলে যান ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগিনি প্রিগোজিন। তার প্রায় এক মাস পর জুলাইয়ের ২০ তারিখে প্রথমবারের মতো তার জনসম্মুখে আসার খবর পাওয়া যায়।
তার এক মাস যেতে না যেতেই বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হলো প্রিগোজিনের।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন