আমেরিকা আরো স্যাংশন দিতে পারে : প্রধানমন্ত্রী

বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আরো স্যাংশন দিতে পারে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘এটা তাদের ইচ্ছা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, তারা কী কারণে ভিসা নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে। আমাদের দেশের মানুষের যে অধিকার, সব মৌলিক অধিকারগুলো আমরাই নিশ্চিত করেছি। মানুষের সব রকমের মৌলিক অধিকার আমরাই নিশ্চিত করেছি।

২০০৯ সাল থেকে ২০২৩ সাল, বাংলাদেশ কিন্তু বদলে যাওয়া বাংলাদেশ।’

 

আজ শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রভাবশালী গণমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকার সঙ্গে আলাপকালে প্রধানমন্ত্রী এমন মন্তব্য করেন।

সাক্ষাৎকারের এক পর্যায়ে শতরূপা বড়ুয়া প্রধানমন্ত্রীকে প্রশ্ন করেন, বাংলাদেশে অবাধ-সুষ্ঠু-নির্বাচন, মানবাধিকার, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশকে নিয়মিত তাগিদ দিয়ে আসছিল। গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর ভিসানীতি কার্যকরে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়ার কথা বলেছে।

২০২১ সালে র‌্যাবের ওপর যে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছিল তা এখনো বহাল আছে। এ ইস্যুগুলো অ্যাড্রেস করাসহ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক জোরদার করা নিয়ে আপনারা কী পদক্ষেপ নিচ্ছেন?

 

এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার এটাই প্রশ্ন যে হঠাৎ কথা নেই, বার্তা নেই তারা আমাদের ওপর ভিসা স্যাংশনস দিতে চাচ্ছে কী কারণে? মানবাধিকারের কথা যদি বলেন বা ভোটের অধিকারের কথা যদি বলেন, আমরা আওয়ামী লীগ, আমরাই তো এ দেশের মানুষের ভোটের অধিকার নিয়ে সংগ্রাম করেছি। আমাদের কত মানুষ রক্ত দিয়েছে এই ভোটের অধিকার আদায় করার জন্য। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন যাতে হয়, সে জন্য যত রকম সংস্কার দরকার, সেটা আমরাই তো করেছি।

স্বচ্ছ ব্যালট বাক্স, ছবিসহ ভোটার তালিকা, মানুষকে ভোটের অধিকার নিয়ে সচেতন করার কাজ তো আমরাই করেছি।’

 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমার ভোট আমি দেব, যাকে খুশি তাকে দেব―এই স্লোগান আমার দেওয়া। আমি এভাবে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করেছি। সে ক্ষেত্রে ভোট নিয়ে হঠাৎ স্যাংশন দেওয়ার কোনো যুক্তি আছে বলে আমি মনে করি না। দ্বিতীয় কথা হচ্ছে, আমাদের দেশের আইন অনুযায়ী আমার কোনো আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সংস্থার কেউ যদি কোনো অন্যায় করে তার কিন্তু বিচার হয়।

এই বিচারে কিন্তু কেউ রেহাই পায় না।’

 

খালেদা জিয়ার চিকিৎসার জন্য বিদেশ যাওয়ার বিষয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পৃথিবীর কোনো দেশ দণ্ডিত আসামিকে চিকিৎসার জন্য বিদেশে পাঠাতে পেরেছে? পৃথিবীর কোনো দেশ দেবে? তাদের যদি চাইতে হয়, তা হলে আবার আদালতে যেতে হবে। আদালতের কাছ থেকে অনুমতি নিতে হবে। আদালতের কাজে আমাদের হস্তক্ষেপের কোনো সুযোগ নেই।’

সাক্ষাৎকারে তিনি ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর যতগুলো নির্বাচন হয়েছে, জাতীয় কিংবা স্থানীয় সরকার নির্বাচন, প্রত্যেকটা সুষ্ঠুভাবে হয়েছে বলে দাবি জানান। তিনি বলেন, ‘এসব নির্বাচনে মানুষ তাদের ভোট দিয়েছে স্বতঃস্ফূর্তভাবে। এই নির্বাচনগুলো নিয়ে অনেকেই প্রশ্ন তোলার চেষ্টা করেছে, কিন্তু বাস্তবতা হলো বাংলাদেশের মানুষ তার ভোটের অধিকার নিয়ে সব সময় সচেতন। কেউ ভোট চুরি করলে তাদের ক্ষমতায় থাকতে দেয় না আমার দেশের মানুষ।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ভোট চুরি করেছিলেন, তিনি কিন্তু দেড় মাসও টিকতে পারেননি। সে বছরের ৩০ মার্চ জনগণের রুদ্ররোষে পড়ে পদত্যাগ বাধ্য হন তিনি। আবার ২০০৬ সালে এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার দিয়ে ভোটার তালিকা করেছিলেন। সেই ভোটার তালিকা দিয়ে নির্বাচন করে তিনি যখন সরকার গঠনের ঘোষণা দিলেন, এরপর জরুরি অবস্থা জারি করা হলো। সেই নির্বাচন বাতিল হয়ে গেল।’

‘আমাদের দেশের মানুষ কিন্তু এখন ভোট সম্পর্কে যথেষ্ট সচেতন’ উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘একটা নির্বাচন অবস্থা সুষ্ঠু হবে, এটা তো আমাদেরই দাবি ছিল। আন্দোলন করে আমরা সেটাই প্রতিষ্ঠিত করেছি। আমাদের দেশের মানুষের যে অধিকার, তাদের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, তাদের বেঁচে থাকার অধিকার, তাদের শিক্ষাদীক্ষার অধিকারসহ সব মৌলিক অধিকার আমরা নিশ্চিত করেছি’ বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন