তাদেরকে এড়িয়ে চলুল
জিবি নিউজ ||
আপনি কী করেন? আপনি যেটাই করেন সেটার চেয়েও মহৎ কর্ম আছে এবং যদি কিছু নাও করে থাকেন তবুও সেটার চেয়েও মন্দ কর্ম আছে। এমন কিছুও যদি করে থাকেন যা জীবিকার নিম্নতম ধাপকে হলেও পূর্ণ করছে তবে সেটা কুকর্ম, অকর্ম, পাপ কর্মের চেয়ে উত্তম। আপনি যা করেন সেটা নিয়ে যারা হতাশা ছড়ায়, অসম্মানের চোখে দেখে তবে তাদেরকে জোড়ালোভাবে ইগনোর করেন। দেহ-মনের সবটুকু শক্তি দিয়ে এড়িয়ে চলেন। তাদেরকে ছেড়ে দেয়ার পরেও ভূবনমাঝে আরও অনেক মানুষ পাবেন যাদের সাথে আপনার জীবনের সময়গুলো হাসি-আনন্দে, সুখ-সানন্দে অতিবাহিত হবে।
আপনার মন-মননকে বিষিয়ে তোলা মানুষগুলো, আপনার অপ্রাপ্তির কথা বারবার মনে করিয়ে দেয়া জীবগুলো, আপনার ক্ষতে খোঁচা দিয়ে সুখ পাওয়া জীবানুগুলোকে জীবন থেকে যত দূরে রাখতে পারবেন জীবন তত আনন্দঘন হবে। কিছু পাওয়া না পাওয়ার চেয়ে উত্তম। যোগ্যতার অতিরিক্ত পাওয়া বহন অযোগ্য বোঝা। আপনার পরিকল্পনায় কী জগতের কিছু সংগঠিত হয়েছে? যিনি পরিকল্পনা করেন তিনি মহপরিকল্পনাবিদ। আপনার যোগ্যতায়, আপনার শ্রমে, আপনার অদৃষ্টে যা বরাদ্ধ হয়েছে তা উপযুক্ত সময়ে আপনার পালকে পালকে যোগ হবে। হতাশাবাদীদের দীর্ঘশ্বাসে নিজেকে পোড়াবেন না। কিছুই পাইনি, কিছুই হয়নি এমন হা-হুতাশে অন্তরাত্মার শান্তি বিনষ্ট করবেন না।
আপনার যে অর্থ-সম্পদ আছে সেসবের অধিক আছে এমন মানুষের সংখ্যা ধরাধামে অনেক। আবার আপনার যা যা আছে সেসবের কানাকড়িও নাই এমন লোকের সংখ্যাও মাটিতে অল্প-সল্প নয়। থাকার থেকেও বেশি আছে আবার না থাকার চেয়েও কম আছে-এমন সমীকরণে জীবনকে অতিষ্ট করে সুখ হারাবেন না। সল্প আয়ুর জীবনটাকে অযুহাতে অযুহাতে দীর্ঘ বানাবেন না। জীবন যেখানে যেমন সেভাবে উপভোগ করুন। অতি লোভ, সামর্থ্যের বাইরের উচ্চাকাঙ্ক্ষা, নৈতিকতা বিবর্জিত অর্জন কোথাও না কোথাও দহন করে। কারো দীর্ঘশ্বাস আপনার দিকে প্রবাহিত হলে, অধিকার ক্ষুণ্ন করার অঙুলি উঠলে পতনকাল নিকটবর্তী হয়। ধপ করে জ্বলে ওঠা আলো স্থায়ী হয় না।
কৃতজ্ঞ থাকুন, বিনয়ী হোন। মুখে হাসি রাখুন এবং যে কোন পরিস্থিতিতে আলহামদুলিল্লাহ বলার শক্তি অর্জন করুন। অপ্রাপ্তির মাঝেও এই জীবন সুন্দর আবার প্রাপ্তির মাঝেও দুঃখের শেষ নাই। যে কোন পরিবেশে, যে কোন পরিস্থিতিতে মুখে হাসি ধরে রাখুন। ভালোবাসা দিয়ে মানুষকে জয় করুন। আত্ম-বিশ্লেষণের মাধ্যমে নিজেকে শাণিত করুন। ময়লা-আবর্জণা, দুর্গন্ধ-বাধার মধ্যেও সামনে পা ফেলুন। সমালোচনা-নিন্দা এড়িয়ে যতক্ষণ চলতে পারবেন ততদিন জীবন। যেদিন থেমে যেতে হবে, বসে পড়তে হবে, শুয়ে যেতে হবে-সেদিনই তো মৃত্যু। যেহেতু জীবনটা আমার সেহেতু সেটাকে ভালো রাখার, উপভোগ করার, বিশ্রাম দেয়ার, পড়ে যাওয়ার এবং উঠে দাঁড়ানোর-সবটুকু দায় আমার ওপরেই বর্তাবে। সেজন্য কাকে ছাড়তে হবে কিংবা কাকে ধরতে হবে-সে সিদ্ধ্বান্ত স্থির চিত্তে জেনে-শুনে-ভেবেই নিতে হবে।
রাজু আহমেদ। কলামিষ্ট।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন