ঢাকাদক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ দত্তরাইল অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকে'র উদ্যোগে ১ লা অক্টোবর রবিবার ঐতিহ্য ও গৌরব ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠান লন্ডনের ইমপ্রেশন ভেন্যুতে প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে।
উক্ত অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকে'র সভাপতি তছউর আলীর সভাপতিত্বে এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান শানুর ও মহিলা সম্পাদিকা নাজিয়া আক্তার রেবিন এর যৌথ সঞ্চালনায় পবিত্র কুরআন তেলাওয়াত করেন এতোয়ার হোসেন মুজিব।
প্রথমে স্বাগত বক্তব্য রাখেন তছউর আলী। পরে সাধারণ সম্পাদক নাজমুল ইসলাম নুরু কার্যকরী কমিটির নাম ঘোষণা করেন এবং সবাইকে পরিচয় করিয়ে দেন। পাশাপাশি নিজের কিছু স্মৃতি জাগানিয়া কথা রোমন্থন করেন।
অনুষ্ঠানে অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন শামীম আহমেদ এবং পুনর্মিলনী সম্পর্কে ডাক্তার মাসুক উদ্দিন বিস্তারিত বক্তব্য রাখেন।
দুই পর্বে অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে ছিল আলোচনা সভা। দ্বিতীয় পর্বে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের কার্যক্রম শুরু হয়।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, একটি জাতিকে বিচার করা হয় শিক্ষা দিয়ে। যে জাতি শিক্ষায় যত এগিয়ে, সভ্যতা বিনির্মানে তাঁরা ততবেশী স্বয়ংসম্পূর্ণ। ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ দত্তরাইলের শিক্ষার্থীরা দেশ বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মানে তারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলছে । এটাই আমাদের জন্য ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক ও বাহক। আমাদের শিক্ষার্থীরা সমাজ ও দেশের বিভিন্ন জনকল্যাণমুলককাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
বক্তারা আরো বলেন, বিদেশের মাটিতে আমাদের একখণ্ড ঢাকা দক্ষিণ অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকের নাম উজ্জ্বল করেছে। জ্ঞানই শক্তি জ্ঞানই আলো। শিক্ষাই গতি, শিক্ষাই করবে দূর জগতের সকল কালো অধ্যায়। শিক্ষাই পারে তথ্য প্রযুক্তির সঠিক প্রয়োগ ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে জীবন ধারাকে উন্নত থেকে উন্নততর করতে। এ ঢাকা দক্ষিণ পরগনার মধ্যে প্রথম শিক্ষার জন্য, শিক্ষিত জাতি গঠনের জন্য, এলাকার শিক্ষানুরাগী ও জ্ঞান পিপাসুরা ১৮৯৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন দত্তরাইল মিডল ইংলিশ স্কুল। প্রতিষ্ঠাতাদের মধ্যে রায়বাহাদুর প্রকাশ চন্দ্র দেব চৌধুরী, বাহা উদ্দিন চৌধুরী ও কালী কৃষ্ণ দত্ত চৌধুরী অন্যতম । প্রথম দিন থেকে আজ অবধি ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ কৃষ্টি, সভ্যতা, সংস্কৃতি, ও ঐতিহ্য ও গৌরবের ধারক ও বাহক হয়ে নিরলসভাবে সেবা দিয়ে যাচ্ছে ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ।
উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নিউ হ্যাম কাউন্সিলের কাউন্সিলার মেয়র রহিমা রহমান। বিশেষ অতিথি ছিলেন ব্যাথনাল গ্রীন এন্ড বো আসনের সাংসদ রুশনারা আলী এমপি। টাওয়ার হ্যামলেটস স্পীকার জাহেদ চৌধুরী। এনফিল্ড কাউন্সিলের কাউন্সিলার ডেপুটি মেয়র আমিরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকে সহ সভাপতি আব্দুল কাদির, আজন উদ্দিন, দেওয়ান নজরুল ইসলাম, কমিউনিটি একটিভিস্ট নুরুল ইসলাম, ব্যারিষ্টার আতাউর রহমান, মুজিবুল হক মনি, সৈয়দ এনামুল হক, আইন বিষয়ক সম্পাদক সলিসিটর কাওসার হোসেন কোরেশি, ব্যারিষ্টার তাজ উদ্দিন শাহ, আমিনুল হক জিলু।
অনুষ্ঠানে “স্মৃতির আঙিনা” নামক ম্যাগাজিনের মোড়ক উন্মোচন করেন বিশিষ্ট ব্যাংকার ও চার্টার একাউন্ট ঢাকা দক্ষিণ বহু মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আব্দুর রাকিব। বক্তব্য রাখেন উপকমিটির আহবায়ক ময়নুল ইসলাম ও সহ সম্পাদক মাহবুব হোসেন, অর্থ উপকমিটির আহবায়ক ফরিদ আহমদ, অভ্যর্থনা উপকমিটির আহবায়ক সেলিম উদ্দিন চাকলাদার ও রহিম উদ্দিন মুক্তা ।
অনুষ্ঠানে হাওয়া টিভি ও ডানটন গ্রীল ও স্পাইস এর পক্ষ থেকে যৌথভাবে ক্রেষ্ট উপহার দেয়া হয়। ক্রেস্ট গ্রহণ করেন- ঢাকা দক্ষিণ বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের মধ্যে আব্দুর রাকিব, ডাক্তার মাসুক উদ্দিন, সলিসিটর কাওসার হোসেন কোরেশি, ব্যারিষ্টার তাজ উদ্দিন শাহ, নতুন প্রজন্মের অহংকার ইংল্যান্ডে বেড়ে উঠা কৃতি সন্তান সলিসিটর অ্যালামনাই এসোসিয়েশন ইউকে'র সভাপতি তছউর আলী সাহেবের ছেলে শাহীন সামাদ, সিনিয়র সহসভাপতি শামীম আহমেদ এর ছেলে নওশাদ আহমেদ, সাহাব উদ্দিন সাহেবের ছেলে আব্দুস সামাদ, তাহের হামজা, মতিন হোসেন , ডাক্তার ইশরাত হোসেন, শাহীন সামাদ এর পক্ষে ক্রেষ্ট গ্রহণ করেন তার পিতা তছউর আলী, তাহের হামজা'র পক্ষে তার পিতা শফিক হামজা, মতিন হোসেনের পক্ষে তার বড় ভাই আতিকুর রহমান, ডাক্তার ইশরাত হোসেনের পক্ষে তার পিতা আবিদ হোসেন।
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মারুফ আহমেদ। এসময় হাওয়া টিভি ও ডানটন গ্রীল ও স্পাইস এর পক্ষ থেকে সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানানো হয়।
অনুষ্ঠানে এরপর পর ছিল জারীগান। নাজিয়া আক্তার রেবিনের নেতৃত্বে ঢাকা দক্ষিণ বহু মুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা মিলে একটি জারী গান পরিবেশন করেন। বৃটিশ বাংলাদেশী নাগরিক ক্ষুদে শিল্পী আদিয়ান একটি বাংলা গান পরিবেশন করে। তারপর পরিবেশিত হয় নৃত্য। গান পরিবেশন করেন শতাব্দী রায়, রানা খান, শংকরী ও বীথি। মধ্যরাত পর্যন্ত উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে চলে গানের আড্ডা।
যুক্তরাজ্যের বিভিন্ন শহর থেকে প্রাক্তন ছাত্র ছাত্রী এবং শিক্ষকরা অনুষ্ঠানে যোগ দেন। বিশেষ করে ম্যানচেষ্টার, বার্মিংহাম, লুটন, বনমাউথ, কেন্ট, সারি শহর থেকে শত শত প্রাক্তন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়ে অনুষ্ঠানকে সুন্দর ও সার্থকভাবে সম্পন্ন করেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানে অনেক সাংবাদিক, সাহিত্যিক, লেখক, রাজনীতিবিদ ও কমিউনিটির নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন। ঐতিহ্য ও গৌরবের ১২৫ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য নেতৃবৃন্দ সবাইকে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানিয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন