আকস্মিক বন্যায় বিপর্যস্ত ভারতের সিকিমে উদ্ধারকাজ চালানো যাচ্ছে না। এখনো তিন হাজারের বেশি পর্যটক সেখানে আটকে রয়েছে। চেষ্টা করেও তাদের কাছে পৌঁছতে পারছে না দেশটির বিমানবাহিনীর উদ্ধারকারী দল। তবে পর্যটকরা নিরাপদেই রয়েছে বলে জানিয়েছে সেনাবাহিনী।
সিকিমের মঙ্গান জেলার লাচেন ও লাচুং এলাকায় পর্যটকরা আটকে রয়েছে। তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। এলাকায় বিদ্যুৎ নেই। পরিবহণ ব্যবস্থাও বিপর্যস্ত।
ভারতীয় বিমানবাহিনী শনিবার পর্যন্ত উদ্ধারকাজ শুরু করার অনেক চেষ্টা করেছে। বাগডোগরা থেকে মিগ-১৭ হেলিকপ্টার সিকিমে পাঠানোর ব্যবস্থা করেছিল সেনাবাহিনী। কিন্তু সেই হেলিকপ্টার উড়তেই পারেনি। আবহাওয়াজনিত বেশ কয়েকটি সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে সেনাদের।
প্রথমত, মেঘ অনেক নিচে নেমে এসেছে। নিচের দিকে মেঘ ভাসছে। তাই এলাকায় দৃশ্যমানতা কমে গেছে। সঙ্গে রয়েছে দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। এখনো থেকে থেকে বৃষ্টি চলছে।
লাচেন ও লাচুং উপত্যকায় রাস্তাঘাট সব ধ্বংস হয়ে গেছে। ওই এলাকা বাকি দেশের থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন। চুংথাং পর্যন্ত বিকল্প একটি রাস্তা খুলে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে প্রশাসন। সেখান দিয়েই উদ্ধারকারীরা কাজ করবেন। এই মুহূর্তে লাচেন, লাচুংয়ে পৌঁছেছে ইন্দো-তিব্বতীয় সীমান্ত পুলিশের একটি দল। তারা স্থানীয়ভাবে ত্রাণ বিলি এবং উদ্ধারের কাজ করছেন।
আবহাওয়া ভবনের পূর্বাভাস বলছে, আগামী পাঁচ দিন সিকিমের চুংথাং উপত্যকা সংলগ্ন এলাকায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। সিকিমের দুর্যোগকবলিত অন্যান্য এলাকায় কাজ করছে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবেলা বাহিনী। উত্তর সিকিমের দুর্গম এলাকায় তারা পৌঁছতে পারেননি।
মঙ্গলবার রাত থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল সিকিমে। মেঘভাঙা বৃষ্টিতে আচমকা ভেসে যায় চারদিক। তিস্তা ফুঁসে ওঠে। স্রোতের মুখে খড়কুটোর মতো ভাসিয়ে নিয়ে যায় রাস্তাঘাট, বাড়িঘর। বহু মানুষের খোঁজ মেলেনি এখনো। মৃতের সংখ্যাও ক্রমশ বাড়ছে। বিপর্যয়ের অভিঘাত কিছুটা কমতেই একে একে তিস্তার পানিতে ভেসে আসছে দেহ। আবহাওয়ার উন্নতি না হলে পুরোদমে উদ্ধারকাজ শুরু করা যাচ্ছে না। সিকিমের লোনক হ্রদ ফেটে সৃষ্টি হওয়া বন্যা কমপক্ষে ২৪ হাজার মানুষের জীবনে প্রভাব ফেলেছে। অন্তত ৫০ জনের মৃত্যু হয়েছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন