ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধ ছড়ানো এবং এর ফলে ইরান সরাসরি সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে বলে সতর্ক করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বিবিসির মার্কিন অংশীদার সিবিএস নিউজে কথা বলার সময় হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান এ সতর্কবার্তা দেন। লেবাননের সঙ্গে ইসরায়েলের উত্তর সীমান্তে একটি নতুন ফ্রন্ট তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা সম্পর্কেও সতর্ক করেছেন তিনি।
জেক সুলিভান বলেন, ‘আমরা উড়িয়ে দিতে পারি না যে ইরান কোনোভাবে সরাসরি যুক্ত হবে না।
আমাদের সম্ভাব্য সব ধরনের পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে।’
দক্ষিণ লেবাননের ইরান-সমর্থিত মিলিশিয়া গ্রুপ হিজবুল্লাহ ও ইসরায়েলি বাহিনীর মধ্যে সীমান্তজুড়ে গোলাগুলি হয়েছে। অঞ্চলটিতে ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলিও জড়িত।
উল্লেখ্য, ইরান হামাস ও হিজবুল্লাহর দীর্ঘদিনের সমর্থক।
দেশটির তাদের অর্থায়ন ও অস্ত্র সরবরাহ করে।
সুলিভান আরো বলেন, ‘এটি একটি ঝুঁকি, যা আমরা শুরু থেকেই মনে রেখেছি। এ কারণেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট পূর্ব ভূমধ্যসাগরে বিমানবাহী রণতরি ও উপসাগরে বিমান পাঠাতে এত দ্রুত ও সিদ্ধান্তমূলকভাবে পদক্ষেপ নিয়েছেন। এর মাধ্যমে এই পরিস্থিতিকে কাজে লাগাতে চাওয়া যেকোনো রাষ্ট্র বা যেকোনো অংশগ্রহণকারীকে তিনি একটি খুব স্পষ্ট বার্তা পাঠিয়েছেন।
’
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন শনিবার দ্বিতীয় বিমানবাহী রণতরি মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছেন। ইসরায়েলের বিরুদ্ধে বৈরী কর্মকাণ্ড বা হামাসের হামলার পর এই যুদ্ধকে প্রসারিত করার যেকোনো প্রচেষ্টা ঠেকাতে এ পদেক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। নতুন পাঠানো রণতরি ইউএসএস আইজেনহাওয়ার ও তার সহগামী জাহাজগুলো আগে থেকে অবস্থান করা রণতরি ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ডের সঙ্গে যোগ দেবে।
ইরানের সতর্কবার্তা
অন্যদিকে ইরান সতর্ক করেছে, গাজায় ইসরায়েলের স্থল হামলা মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে সংঘাতের বিস্তার ঘটাতে পারে। বার্তা সংস্থা এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আবদুল্লাহিয়ান ও কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল-থানির মধ্যে বৈঠকের সময় এ মন্তব্য করা হয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘পরিস্থিতির নিয়ন্ত্রণ ও সংঘাতের বিস্তার না করার নিশ্চয়তা কেউ দিতে পারে না।’
আমির-আবদুল্লাহিয়ান বলেন, যারা বর্তমান সংকটকে ক্রমবর্ধমান থেকে রোধ করতে আগ্রহী, তাদের অবশ্যই গাজার নাগরিক ও বেসামরিকদের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের ‘বর্তমান বর্বর হামলা’ প্রতিরোধ করতে হবে।
ইরানি কূটনীতিক ইসরায়েলকে সম্পূর্ণ সমর্থনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের সমালোচনাও করেছেন।
ইরানের শীর্ষ কূটনীতিক সপ্তাহান্তে একটি আঞ্চলিক সফরের অংশ হিসেবে কাতারে ছিলেন। ইরাক, লেবানন ও সিরিয়াও এ সফরের অংশ।
শনিবার কাতারে তিনি হামাসের নেতা ইসমাইল হানিয়াহের সঙ্গেও দেখা করেছেন। হানিয়াহ বর্তমানে সে দেশেই থাকছেন।
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকা থেকে হামাস যোদ্ধারা ইসরায়েলে অনুপ্রবেশ করে নজিরবিহীন হামলা চালায়। এতে প্রায় এক হাজার ৩০০ লোক নিহত হয়, যাদের অধিকাংশই বেসামরিক নাগরিক। এ ছাড়াও প্রায় ১৫০ জনকে জিম্মি করা হয়। এর পরই ব্লিনকেন এই অঞ্চলে সফর করছেন। অন্যদিকে ইসরায়েলও গাজায় ইসলামপন্থী গোষ্ঠীটিকে লক্ষ্য করে ব্যাপক প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে। এতে এখন পর্যন্ত দুই হাজার ৩০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন