হিউম্যান রাইটস যখন হিউম্যানই না! গাজার রক্তাক্ত শিশু, ছিন্নভিন্ন দেহের চিত্র আমাদের ব্যথিত করে

রাজু আহমেদ। কলামিস্ট।| জিবি নিউজ ||

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মানুষকে হত্যা করা যায়? বর্বরযুগেও যুদ্ধের নীতি ছিল। হত্যার ধর্ম ছিল। বেসামরিক
নাগরিক তথা শিশু, নারী, বৃদ্ধ এবং অসুস্থরা কখনোই প্রতিপক্ষ নয়। অথচ বোমা মেরে একটু হাসপাতালকে
গুঁড়িয়ে দেয় হলো। পাঁচ শতাধিক চিকিৎসাধীনকে হত্যা করা হলো। একটুদি কুকুর বিড়ালের প্রতি যে মায়া তাও
কি গাজাবাসীদের জন্য বিশ্ববাসীর নাই? মানবতার এমন নগ্ন অবক্ষয় ধরাবাসী আর কবে দেখেছিল? মানুষ
এমন নৃশংসভাবে মানুষকে হত্যা করতে পারে? বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে।

মুসলিম বিশ্বের চুপ থাকার কৈফিয়ত একদিন না একদিন দিতেই হবে। পশ্চিমাদের মদদে যে পাশবিকতা
ইসরাইলীরা চালাচ্ছে তা মানব ইতিহাসের জঘন্যতম অধ্যায়ের সূচনা করেছে। যাদের সাথে যুদ্ধ তাদেরকে হত্যা
করা হোক কিন্তু হাসপাতালের বিছানায় কাতরানো বিপন্ন মানুষগুলোকে কেন হত্যা করা হলো? বিশ্বের তাবৎ
মানবাধিকার সংগঠনগুলোে নিরবতায প্রমাণ করছে সেগুলোর মধ্যে মানুষের উপস্থিতি নাই। স্বার্থের জন্য,
তোষামোদির জন্য, নিজেদের ভোগের পুঁজি পুঞ্জীভূতির জন্যই এরা কাজ করছে। নয়তো ইসরায়েলের যে
আগ্রাসন তা থেকে তাদের বিরত থাকতে বাধ্য করার ক্ষমতা জাতিসংঘের ছিল।

গাজা-ফিলিস্তিনের ইতিহাস রক্তামাখা ইতিহাস। পবিত্র ভূমিতে ইহুদীদেরকে চাপিয়ে দেয়ার পরে ফিলিস্তিনিদের
ওপর তাদের আগ্রাসন মানব-ইতিহাসের নৃশংসতম অধ্যায় সূচিত করেছে। মানুষ হত্যার মহোৎসব পশ্চিমারাও
সমানভাবে রক্তে হাত রাঙিয়েছে। জেরুজালেমের বায়তুল আকসাকে কেন্দ্র করে হাজার হাজার মুসলিমকে হত্যা
করেছে। মুসলিদমদেরকে হত্যার সময় পশ্চিমারা রহস্যজনকভাবে নিরব থাকে, তাদের মদদপুষ্ট মিডিয়া সত্য
সেন্সর করে, মুসলিমদের একাংশ পম্চিমাদের এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য উদাস থাকে। অথচ ফিলিস্তিনের
জনগণের পক্ষে মানবিক কারনে দাঁড়ানো দায়িত্ব ছিল। ইমানের দাবীতে তাদের পক্ষে সোচ্চার থাকার কথা ছিল।
ভ্রাতৃত্বের দাবিতে ভাইয়ের রক্তের প্রতিশোধ নেয়া উচিত ছিল। নিশ্চয়ই ইতিহাস একদিন এমন গাদ্দারীর প্রতিশোধ
নেবে! আজ যারা চুপ করে আছে তাতের জন্য সত্যের পথও রুদ্ধ হবে।

ইসরায়েলের আক্রমনে গাজার রক্তাক্ত শিশু, ছিন্নভিন্ন দেহের চিত্র আমাদের ব্যথিত করে। গাজায় যে গণহত্যা
চালানো হচ্ছে তাতে বিশ্বের বিবেকবান প্রত্যেকটা মানুষকে ইতিহাস দায়ী করবে। যারা স্বার্থের কারনে
ইসরাইলকে সমর্থন দিচ্ছে তাদেরকে কৈফিয়তের কাঠগড়ায় দাঁড়াতেই হবে। ফিলিস্তিনে যদি হত্যার হাত থেকে

একজন মানুষও রক্ষা না পায় তবে তাদের শরীর পোড়া ছাইগুলো একদিন না একদিন জেগে উঠবে। দিন দিন
নির্যাতন-নিপীড়নের মুখোমুখি হওউার চেয়ে একবারে মোকাবেলা করে হয় মরো না হয় বাঁচো-এটা উত্তম।

আরব বিশ্বের মৌনতা তাদের পৌরুষকে প্রশ্নবিদ্ধ করে। সরাসরি যুদ্ধে অংশগ্রহন না করলেও ইসরাইলকে
হত্যাকান্ড থেকে বিরত রাখতে বাধ্য করার হাতিয়ার তাদের কাছে আছে। আমেরিকার ইসরাইল প্রীতি বন্ধ না হলে
অচিরেই তাদের মোড়লপনায় ধ্বস নামবে-তা দিবালোকের মত স্পষ্ট হচ্ছে। ইসরাইলের চরম বাড়াবাড়ি মনোভাব
যে তাদের অধপাতের পথ উম্মুক্ত করছে তা যতদ্রুত বুঝতে পারবে সেটা তাদের জন্য মঙ্গলের।

ইসরাইল দিন দিন আন্তর্জাতিক যুদ্ধনীতি ভঙ্গ করছে। হাসপাতালে হামলা করে মানুষকে হত্যা করা, স্কুলে বোমা
ফেলা, সাধারণ মানুষকে হত্যা করা, শিশুদেরকে রক্তাক্ত করা এসব পাশবিকতার নিকৃষ্টতর উদাহরণ। অবিলম্বে
এটা বন্ধ না হলে খেসারত দিতে হবে। মানুষ হত্যা করে, স্থাপনা পুড়িয়ে দিয়ে যুদ্ধে জয়লাভ করা যায় না। বরং
ইসরাইল যা করছে তাতে সাধারণ মানুষের ঘৃণা কুড়াচ্ছে। ফিলিস্তিনিদের জন্য ভালোবাসা মানুষের মনের
মনিকোঠায় স্থান পেয়েছে।

 

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন