সিলেটে ‘ব্ল্যা ক মে ই ল চক্র’ : আরেকজন আ ট ক, সাথীকে রি মা ন্ডে নিতে চায় পুলিশ

সিলেটে নারী দিয়ে ব্ল্যাকমেইল চক্রের আরেকজনকে আটক করেছে পুলিশ। এছাড়া চক্রের নারী সদস্য আটক সাথী আক্তারকে রিমান্ডে নিতে চায় পুলিশ।
 

জানা যায়, সিলেট মহানগরের ২৪ নং ওয়ার্ডের কুশিঘাট এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নিয়ে একটি ব্ল্যাকমেইল চক্র গড়ে তুলে কয়েকজন। এর মধ্যে একজন নারী সদস্য। ওই এলাকার একটি দুতলা বাসার নিচতলার একটি ইউনিট প্রায় দুই মাস আগে মাসপ্রতি ৯ হাজার টাকায় ভাড়া নেন সাথী আক্তার নামের এক নারী। তার বাড়ি সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার লাউড়েরঘর এলাকায়। ভাড়া নেওয়ার সময় বাসার মালিককে সাথী তার স্বামী ও দুই সন্তান আছে বলে জানান।

 

 

 
বাসার মালিককে তিনি আরও জানান, একটি বেসরকারি হাসপাতালে আয়া হিসেবে এবং স্বামী মহানগরের সোবহানীঘাট কাঁচাবাজারের একটি দোকানে কর্মচারী হিসেবে চাকরি করেন। কিন্তু মূলত সাথীর কোনো স্বামী নেই। তিনি ওই বাসায় একাই থাকতেন। তার রয়েছে ৪ ছেলে সহযোগী। তাদের একজনের নাম জামিল ও আরেকজনের নাম নাদেল। ছেলে সহযোগিরা ‘জান্নাত আরা’ ও ‘রনি আহমদ’ নামে দুটি ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করে পণ্য বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। এছাড়া এসব অ্যাকাউন্টের ইনবক্সে বার্তা আদান-প্রদানের মাধ্যমে অসামাজিক কাজের চুক্তিও করেন তারা বিভিন্নজনের সঙ্গে।
 

কেউ যখন এই চক্রের ফাঁদে পা দিয়ে কুশিঘাটের বাসাটিতে আসেন তখন তারা তাকে জিম্মি করে লুটে নেন সর্বস্ব। এছাড়া সাথী নামের ওই নারীর সঙ্গে বিবস্ত্র অবস্থায় ছবি ও ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে হুমকি দেওয়া হয়- এ বাসা থেকে বেরিয়ে কাউকে কিছু বললে এসব ছবি ও ভিডিও অনলাইনে ছড়িয়ে দেওয়া হবে। ফলে ভয়ংকর এ চক্রের কাছে সব হারিয়েও মুখ খুলেন না ভুক্তভোগীরা।

 
এভাবেই গত সোমবার (১৬ অক্টোবর) সাথী-রনি চক্রের ফাঁদে পা দেন সিলেটের গোলাপগঞ্জ উপজেলার হেতিমগঞ্জ এলাকার ২৫ বছরের এক যুবক। পেশায় তিনি একজন মাদরাসাশিক্ষক।
 

 

তিনি  বলেন, ‘রনি আহমদ’ নামক ফেসবুক আইডিতে তিনি একটি ল্যাপটপ বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখে ইনবক্সে ক্ষুদেবার্তা পাঠান। পরে কথা হয় সাথীর সঙ্গে। সাথীর দেওয়া কুশিঘাটের বাসার ঠিকানায় ওই যুবক সোমবার সন্ধ্যার পর আসলে সাথীর ছেলে সঙ্গীরা তাকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোবাইল ও টাকা-পয়সা ছিনিয়ে নেয়। এরপর তার কাছে আরও ১ লাখ টাকা দাবি করা হয়। পরে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা আনিয়ে রাত ৯টার দিকে তাদের হাত থেকে মুক্তি পান ওই যুবক।
 

তবে এ বিষয়ে সাথী সি বলেন, ওই যুবক তার সঙ্গে অসামাজিক কাজ করার প্রস্তাবে রাজি হয়েই কুশিঘাটের বাসায় এসেছিলেন।
 

এদিকে, ‘ব্ল্যাকমেইলের শিকার’ ওই যুবক মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) দুপুরে কুশিঘাট এলাকায় গিয়ে স্থানীয়দের কাছে বিচারপ্রার্থী হন এবং ঘটনার বর্ণনা দিয়ে মোবাইল উদ্ধার করে দেওয়ার দাবি জানান। পরে এলাকার মানুষজন সাথী নামের ওই নারীর কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে এলাকাবাসীকে তিনি বলেন- তিনি পতিতাবৃত্তির সঙ্গে জড়িত। জামিল, নাদেল ও আরও দুই ছেলে তাকে জোরপূর্বক এই ব্ল্যাকমেইল কাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়েছে। এর বিনিময়ে তিনি টাকা পান। অল্প কিছুদিন আগে তারা সিলেটে চক্রটি গড়ে তুলেছেন। নানা বয়েসি পুরুষদের প্রলুব্ধ করে ফাঁদে ফেলা হয় এবং একপর্যায়ে জিম্মি করে টাকা-পয়সা লুটে নেওয়া হয়।
 

 

পরে এলাকাবাসী পুলিশে খবর দিলে মঙ্গলবার বিকালে সিলেটের শাহপরাণ থানার একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে সাথী ও ‘ব্ল্যাকমেইলের শিকার’ যুবককে আটক করে নিয়ে যায়।
 

বাসার মালিক সিলেটভিউ-কে বলেন, সাথী নামের ওই নারী বাসা ভাড়া নেওয়ার সময় একজন পুরুষ নিয়ে আসেন এবং তাকে স্বামী বলে পরিচয় দেন। শর্ত অনুযায়ী তিনি তার জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপিও আমাকে দেন। তবে সেটি আসল না নকল তা যাচাই করা হয়নি।
 

এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা শাহপরাণ থানার এস.আই মোস্তাফিজুর রহমানের বরাত দিয়ে থার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল খায়ের বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সিলেটভিউ-কে বলেন, ওই নারীকে আটকের পর প্রতারণার শিকার যুবক বাদী হয়ে তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন। পরে আমরা অভিযান চালিয়ে রনি আহমদ নামের একজনকে আটক করেছি। সে ওই নারীর সহযোগী। বাকিদেরও ধরতে চেষ্টা চালাচ্ছি আমরা।
 

 

তিনি বলেন- আটকদের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে আদালতে।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন