বিবিসির সাংবাদিকের দুর্ভোগ ঘরে ফেরার আকুতি শিশুসন্তানদের

স্ত্রী, এক ছেলে ও দুই যমজ মেয়ে নিয়ে গাজা সিটির একটি ফ্ল্যাটে থাকতেন বিবিসির সাংবাদিক রুশদি আবু আলুফ। কিন্তু গাজা উপত্যকাজুড়ে ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরুর পর ঘরছাড়া হতে হয়েছে তাঁর পরিবারকে। প্রাণ বাঁচাতে প্রিয় শহর ছেড়ে পাড়ি জমাতে হয়েছে দক্ষিণে। কিন্তু অতি ভিড়, খাদ্য-পানি-বিদ্যুতের অভাবের পাশাপাশি সেখানেও মৃত্যুর ভয় তাড়া করে ফিরছে।

আলুফের দুই মেয়ে তাই গাজা সিটিতে ফিরে যাওয়ার আকুতি জানাচ্ছে দিনরাত।

 

রুশদি আবু আলুফ বলেন, দুই দিন আগেই তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা প্রায় মরতে বসেছিল। তারা খান ইউনিসের একটি চারতলা ভবনের নিচতলায় ছিল। পাশের একটি হাসপাতালের তাঁবুতে ঘুমাচ্ছিলেন আলুফ।

হঠাৎ ওই ভবনে ড্রোন হামলা চালায় ইসরায়েলি বাহিনী। আলুফের ৯ বছর বয়সী যমজ মেয়ে দুটি চিৎকার করে বেরিয়ে আসে। তাঁর স্ত্রী মাথায় আঘাত পান। ওই ঘটনায় আলুফের মেয়ে দুটি বড় ধরনের মানসিক আঘাত পেয়েছে।

সেদিন রাতে তারা আর ঘুমাতে পারেনি। ইসরায়েলি হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত ওই ভবনের অদূরেই একটি স্থানে রাত কাটাতে হচ্ছে তাদের।

 

সাংবাদিক আলুফ বলেন, ‘গাজা সিটিতে নিজেদের পছন্দের সব কিছু বিশেষ করে স্কুল, বন্ধু, ঘোড়ায় চড়ার ক্লাব ও প্রিয় পিত্জার দোকান ছেড়ে দক্ষিণে আসতে হয়েছে আমার মেয়েদের। এই পরিস্থিতির ধাক্কা কাটাতে তাদের অনেক সময় লাগবে। দুজনই গাজায় ফিরে যাওয়ার আকুতি জানাচ্ছে।

’বিবিসির কর্মী আলুফ বলেন, ‘গাজায় এবারের ইসরায়েলি হামলা শুরুর আগে আমরা ৯৯ শতাংশ ফিলিস্তিনির চেয়ে ভালো জীবন যাপন করতাম। কিন্তু সীমিত বিদ্যুৎ, অনিরাপদ পানি এবং চলাফেরার সমস্যার কারণে এখানকার পরিস্থিতি এখন খুব কঠিন।’

 

গাজা সিটির সমুদ্রসৈকতের কাছে একটি বড় ফ্ল্যাট ছিল আলুফের। প্রায় সকালেই স্ত্রীকে নিয়ে সৈকতে হাঁটতে বেরুতেন তিনি। ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে আর মেয়েরা যেত স্কুলে। আলুফ বলেন, ‘কাজ শেষে ফেরার সময় সন্তানদের জন্য মিষ্টি নিয়ে আসতাম, বাড়ি ফিরে মজা করতাম ওদের সঙ্গে। সপ্তাহে এক দিন কাছের পিত্জার দোকান বা আশপাশের কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে যেতাম। এখন ওই পিত্জার দোকানটি ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। আমার সন্তানরা যে এলাকায় বেড়ে উঠেছে, তা বোমা হামলায় ধ্বংস হয়ে গেছে। আমার সন্তানরা গাজায় ফিরে যেতে চায়। তবে তারা বুঝতে পারছে না—আমরা আর সেই গাজায় ফিরতে পারব না।’
পরিবারকে আলুফ কথা দিয়েছেন, গাজা থেকে বের করে তাদের নিরাপদ কোনো স্থানে নিয়ে যাবেন। এ পর্যন্ত তারা যথেষ্ট ত্যাগ স্বীকার করেছে বলেই মনে করেন তিনি। 

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন