অনেক কিছু বলার আছে মাহমুদউল্লাহর

ডান হাতের বৃদ্ধাঙ্গুলটা মাহমুদউল্লাহ নিজের দিকে তাক করলেন প্রথমে। এরপর তর্জনীটা তুলে ধরলেন ওপরের দিকে। বিশ্বকাপে নিজের তৃতীয় সেঞ্চুরি উদযাপনের পর অভিজ্ঞ ব্যাটারের এই ভঙ্গিরও একটি অর্থ আছে। মঙ্গলবার রাতে সংবাদ সম্মেলন শেষ করে ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামের প্রেস বক্সের লিফটের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে সেটিই জানিয়ে গেলেন তিনি, ‘আমি কিছুই না, সব আল্লাহর।

’ 

 

ধর্মপ্রাণ মাহমুদ গত মার্চে দেশের মাটিতে ইংল্যান্ড সিরিজের পর দল থেকে বাদ পড়ে একেবারে নিজের মধ্যে ডুবে গিয়েছিলেন। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে তাঁকে নীরবে অনুশীলনে মগ্ন থাকতেই বেশি দেখা গেছে। পাশাপাশি ধর্মকর্মেও মনোযোগ বাড়িয়েছিলেন। বিশ্বকাপের আগে নিউজিল্যান্ড সিরিজ দিয়ে ফিরলেও তাঁর নাকি ফেরার কথা ছিল আরো আগেই।

সংবাদমাধ্যমে দেওয়া সাক্ষাৎকারে চন্দিকা হাতুরাসিংহে অন্তত তা-ই বলেছিলেন। এর আগের আফগানিস্তান সিরিজে তাঁকে খেলানোর কথা থাকলেও তা সম্ভব হয়নি। কারণ ওই সময়ে মাহমুদ উল্লাহ হজে গিয়েছিলেন। 

 

মক্কা-মদিনার ইবাদতে আবার বাংলাদেশ দলের জার্সি গায়ে চাপিয়ে খেলার প্রার্থনায়ও যে বুঁদ ছিলেন, সেটিও নিশ্চিত করে বলা যায়।

বাদ পড়া থেকে শুরু করে আবার ফিরে আসার আগ পর্যন্ত এমনও অনেক সময় মনে হয়েছে যে দলের ত্রিসীমানাতেই নেই তিনি। সেই সময়টি নিশ্চয়ই দুঃসহ ছিল। হলেও মাহমুদ সেটি স্বীকার করলেন না। তবে তাঁর ধরে আসা কণ্ঠও বুঝিয়ে দিলো অনেক কিছুই, ‘যা সময় কেটেছে, ভালো কেটেছে। কিছু বলতে চাইছি না।

যদিও অনেক কিছু নিয়ে বলতে চাই। কিন্তু এটি সঠিক সময় না। আমার লক্ষ্য ছিল শুধুই দলের জন্য খেলা ও অবদান রাখা। আমার ক্যারিয়ার জুড়েই আমি অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। ইটস ফাইন।’ 

 

বাইরে থাকার সময়ে দলে ফেরার বিশ্বাস ছিল কিনা, সে প্রসঙ্গেও না বলা অনেক কিছু চেপেই রাখলেন। পরে বলবেন বলে, ‘আমি জানি না। হয়তো আল্লাহ শক্তি দিয়েছিলেন। আমি চেষ্টা করেছি। ফিটনেস ঠিক রেখেছি। আর আগেও বললাম, সব প্রশ্নের উত্তর এখন দেব না। সময় হলে দেব, শেষে দেব।’ যদিও ‘শেষে’ বলতে কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট নয়।

তাঁকে দল থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল বিশ্রামের কথা বলে। তা নিয়ে হাসতে হাসতেই বলছিলেন, ‘বিশ্রামটা মনে হয় একটু বেশিই হয়ে যাচ্ছিল। এটি আমার হাতে নেই। এটি তাঁদের (নির্বাচকদের) সিদ্ধান্ত। আমি যদি আমার কাজটি সততার সঙ্গে করতে পারি, সেটিই আমার জন্য যথেষ্ট। এই কাজটিই আমি করে যেতে চাই।’ ৮ বছর আগে নিজের প্রথম বিশ্বকাপ সেঞ্চুরি দিয়ে বাংলাদেশ তুলেছিলেন কোয়ার্টার ফাইনালে। এত বছর পর আবার একই মঞ্চে তাঁর সেঞ্চুরি বিফলে যাওয়া নিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল মাহমুদ ব্যাটিংয়ে নামার সময়ই। জানালেন, ‘জিততে পারলে বুনো উল্লাসই করতাম।’ এটিও বললেন যে, ‘(এবার) দলকে এই অবস্থায় দেখা প্রত্যাশিত ছিল না অবশ্যই। আমরা মাঝের ড্রিংকস ব্রেকগুলোতে আলাপও করছিলাম যে ৩২০-৩৩০ রান হলে আমরা তাড়া করতে পারতাম।’ পাঁচ ম্যাচে চতুর্থ এই হারের পরও অবশ্য কাগজে-কলমে বাংলাদেশের সেমিফাইনালে যাওয়ার সম্ভাবনা টিকে আছে। কিন্তু এখন আর তাতে ভরসা করার সুযোগ দেখছেন না বলেই হয়তো মাহমুদ চিন্তাটি বাদ দিতে বললেন, ‘সেমিফাইনাল খেলতে পারব কী পারব না, আমার মনে হয় এখন আর এসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই।’

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন