গাজায় যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সেনা লড়াই করবে না

ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলি বাহিনীর সংঘাতে কোনো মার্কিন সেনা অংশ নেবে না বলে আবারও জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিস। গাজার সংঘাত নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থান সম্পর্কে দেশের অভ্যন্তরে বিতর্কের মধ্যে ওয়াশিংটনের পক্ষ থেকে জোর দিয়ে এ কথা বলা হলো। মার্কিন সম্প্রচারমাধ্যম সিবিএসকে গত রবিবার দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে কমলা হ্যারিস বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলের করণীয় ঠিক করে দিচ্ছে না। ওয়াশিংটন ইসরায়েলকে শুধু পরামর্শ, যুদ্ধ সরঞ্জাম ও কূটনৈতিক সহায়তা দিচ্ছে।

 

মার্কিন সেনাদের ইসরায়েল অথবা গাজায় পাঠানো হবে না। ইসরায়েল হামাসের সঙ্গে যুদ্ধের দ্বিতীয় পর্যায়ে প্রবেশ করেছে—প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর এমন মন্তব্যের পর চলমান সংঘাতে মার্কিন নীতি ক্রমেই আলোচনায় উঠে আসছে। মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, হামাস একটি কনসার্টে শত শত তরুণকে হত্যা করেছে। ইসরায়েলের আত্মরক্ষার অধিকার নিয়ে কোনো প্রশ্নই উঠতে পারে না।

তিনি বলেন, ‘হামাস ও ফিলিস্তিনিদের একই চোখে না দেখার কথা বলা হচ্ছে—এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফিলিস্তিনিরা সমান নিরাপত্তা, আত্মনিয়ন্ত্রণ ও মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য। আমরা স্পষ্ট করে বলেছি, যুদ্ধের নিয়ম অবশ্যই মেনে চলতে হবে এবং মানবিক ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত রাখতে হবে।’ হ্যারিস বলেন, ‘ইসরায়েল বা গাজায় সেনা পাঠানোর ইচ্ছা বা পরিকল্পনা কোনোটাই আমাদের নেই।

 

মধ্যপ্রাচ্যের হামলা প্রসঙ্গে

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট বলেন, সংঘাত যাতে মধ্যপ্রাচ্য অঞ্চলে ছড়াতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে চায় যুক্তরাষ্ট্র। তবে এটা মোটেও সহজ কাজ নয়। ইরাক ও সিরিয়ায় মার্কিন বাহিনীর ওপর কয়েক দফা হামলার জবাবে গত সপ্তাহে সিরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা হামলার প্রেক্ষাপটে এমন মন্তব্য করলেন কমলা হ্যারিস। এ বিষয়ে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী লয়েড অস্টিন বলেছেন, সিরিয়ায় চালানো মার্কিন হামলার সঙ্গে ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধের সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও একই রকম দাবি করেছেন।

তবে বিশ্লেষকরা দাবি করছেন, ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে ওয়াশিংটনের অবস্থানের কারণেই মার্কিন স্বার্থের ওপর হামলা হয়েছে।

 

কূটনৈতিক দ্বিমত

ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের মন্তব্য হোয়াইট হাউসের অবস্থানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তা সত্ত্বেও ওয়াশিংটনের কূটনৈতিক মহলে মতবিরোধের ইঙ্গিত মিলেছে। গাজার ওপর কঠিন অবরোধ ও লাগাতার বোমাবর্ষণ সত্ত্বেও ইসরায়েলের প্রতি বাইডেনের অবিচল সমর্থনে হতাশ যুদ্ধবিরতির পক্ষে থাকা ডেমোক্র্যাটরা। জানা গেছে, ওয়াশিংটনের নীতির সমালোচনা করে একটি নথি তৈরির প্রস্তুতি নিচ্ছেন মার্কিন কূটনীতিকরা। এটি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সংবাদমাধ্যম হাফিংটন পোস্টকে বলেছেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সব স্তরে বিদ্রোহের মতো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির সৃষ্টি হচ্ছে। ইসরায়েল-হামাস সংঘাতে বাইডেন প্রশাসনের অবস্থানের কারণে গত সপ্তাহেই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা জশ পল পদত্যাগ করেন।

বাইডেনের মন্তব্যের নিন্দা

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে সম্প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করেন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, গাজায় বেসামরিক প্রাণহানি ঘটছে তা ঠিক। তবে হামাস সরকারের প্রচারিত মৃতের সংখ্যায় তাঁর আস্থা নেই। বাইডেনের এ মন্তব্যকে ‘ভয়াবহ’ আখ্যা দেন সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিলিস্তিনি মার্কিন জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ ইয়ারা আসি।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন