ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধের ২৬তম দিনের পাঁচটি উল্লেখযোগ্য খবর

বুধবার ২৬তম দিনের মতো গাজায় সংঘাত চলছে। ইসরায়েল তার ইতিহাসে সবচেয়ে মারাত্মক হামলার শিকার হওয়ার পর গাজার বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস ইসরায়েলে এক নজিরবিহীন হামলা চালায়। এতে নিহত হয় প্রায় এক হাজার ৪০০ মানুষ।

পাশাপাশি ২৩০ জনেরও বেশি মানুষকে তারা জিম্মি করে নিয়ে যায়।

 

সেদিনের পর থেকে ইসরায়েল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে নিরলসভাবে বোমাবর্ষণ করছে এবং হামাসকে ধ্বংস করতে সেনা পাঠিয়েছে। হামাস শাসিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত আট হাজার ৭৯৬ জন নিহত হয়েছে, যার দুই-তৃতীয়াংশ নারী ও শিশু।

ইসরায়েল-গাজা যুদ্ধে গত ২৪ ঘণ্টার পাঁচটি উল্লেখযোগ্য খবর :

মিসরে গাজায় আহত বিদেশিরা
প্রথমবারের মতো গাজা থেকে আহত ফিলিস্তিনিদের বহনকারী অ্যাম্বুল্যান্স বুধবার মিসরে প্রবেশ করেছে।

লাইভ ফুটেজে দেখা যায়, মিসরীয় নার্স ও প্রাথমিক চিকিৎসকরা বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানোর আগে তাদের জরুরি পরীক্ষা করছেন।

 

সবচেয়ে গুরুতর আহত ৯০ জন ফিলিস্তিনির মধ্যে অন্তত দুটি শিশু ছিল, যার একজনের পেটে বড় ব্যান্ডেজ দেখা গেছে।

এর কয়েক ঘণ্টা পর বিদেশি পাসপোর্টধারীদের প্রথম দল মিসরে প্রবেশ করে। লাইভ ফুটেজে শিশুসহ মা-বাবা ও বয়স্ক ব্যক্তিদের মিসরীয় দিকে একটি বাস থেকে নামতে দেখা যায়।

 

বোমা হামলা থেকে পালাতে চাওয়াদের জন্য কায়রো প্রথমবারের মতো রাফাহ ক্রসিং খুলে দেয়। বুধবার প্রায় ৪০০ বিদেশি ও দ্বৈত নাগরিক পার হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

৭ জিম্মি নিহত : হামাস
হামাস বুধবার বলেছে, উত্তর জাবালিয়া শরণার্থীশিবিরে ইসরায়েলি হামলায় জিম্মিদের মধ্যে সাতজন নিহত হয়েছে।

হামাসের সামরিক শাখা বলেছে, ‘গতকাল জাবালিয়া গণহত্যায় সাতজন বন্দি নিহত হয়েছে, যার মধ্যে তিনজন বিদেশি পাসপোর্টধারী।’ তাদের এ দাবি স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি।

 

ইসরায়েলি কর্মকর্তারা বলেছেন, হামাস যোদ্ধারা ৭ অক্টোবর প্রায় ২৪০ জনকে অপহরণ করেছে, যাদের মধ্যে বিদেশি এবং অনেক দ্বৈত নাগরিক রয়েছে। তবে হামাসের দাবির বিষয়ে তারা কোনো মন্তব্য করেননি।

মঙ্গলবারের হামলায় কমপক্ষে ৪৭ জন নিহত হয়েছে। ইসরায়েল বলেছে, তারা একটি সুবিশাল সুড়ঙ্গ কমপ্লেক্সে আঘাত করেছে। এতে ৭ অক্টোবরের হামলার পেছনে থাকা হামাসের একজন জ্যেষ্ঠ কমান্ডার নিহত হয়েছেন।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বুধবার গাজার অভ্যন্তরে ‘বেদনাদায়ক ক্ষয়ক্ষতি’ সত্ত্বেও হামাসের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের যুদ্ধ ‘জয় না হওয়া পর্যন্ত’ চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। দেশটির সেনাবাহিনী স্থল যুদ্ধে ১১ সেনা নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছে।

ফের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন গাজা
গাজাজুড়ে বুধবার আবার ইন্টারনেট ও ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ হয়ে গেছে বলে জানিয়েছে প্যাল্টেল টেলিকমিউনিকেশন এজেন্সি। কয়েক দিনের মধ্যে এ ধরনের দ্বিতীয় ঘটনা এটি।

অন্যদিকে গ্লোবাল নেটওয়ার্ক মনিটর নেটব্লকসও একটি নতুন ব্ল্যাকআউট নিশ্চিত করে বলেছে, এর অর্থ এই অঞ্চলের ২৪ লাখ বাসিন্দাদের অধিকাংশ টেলিযোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হবে।

ইসরায়েলের পশ্চিমা সমর্থকদের ইরানের সতর্কবার্তা
ইরানের সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বুধবার তেল রপ্তানিসহ ইসরায়েলের সঙ্গে সব ধরনের বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য মুসলিম দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন। পাশাপাশি ব্রিটেন, ফ্রান্স ও যুক্তরাষ্ট্রের নাম নিয়ে ‘ফিলিস্তিনের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো’ পশ্চিমা সরকারগুলোর নিন্দা করেছেন।

এ ছাড়া দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী মোহাম্মদ রেজা আশতিয়ানিও ‘কিছু ইউরোপীয় দেশ, যারা ইসরায়েলকে সাহায্য করে’ উল্লেখ করে তাদের প্রতি সতর্কবার্তা দিয়ে বলেছেন, ‘মুসলিমদের রাগান্বিত না করার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে’।

ইসরায়েলে যাচ্ছেন ব্লিনকেন
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর জানিয়েছে, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিনকেন শুক্রবার ইসরায়েলে আলোচনায় বসবেন। এরপর অন্য আঞ্চলিক শক্তিগুলো সফর করবেন। কারণ ওয়াশিংটন ইসরায়েল-হামাস যুদ্ধ নিয়ে আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে ‘জরুরি ব্যবস্থা’ চায়।

হোয়াইট হাউস বলেছে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও জর্দানের রাজা আবদুল্লাহ দ্বিতীয় মঙ্গলবার কথা বলেছেন। তারা সহিংসতা রোধ ও আঞ্চলিক উত্তেজনা কমাতে জরুরি প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করেছেন। ফিলিস্তিনিরা যাতে জোরপূর্বক গাজার বাইরে বাস্তুচ্যুত না হয় তা নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ বলে তারা সম্মত হয়েছেন।

জিবিডেস্ক //

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন