সিলেটে বিদেশ লোক পাঠানোর নামে প্রায় অর্ধশত লোকের কোটি টাকা আত্মাসাৎ করার প্রতিবাদে ভুক্তভোগীরা মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করা হয়েছে।
শুক্রবার (৩নভেম্বর) বিকেলে সিলেট সদর উপজেলার টুকেরবাজার ইউনিয়নের নালিয়া পয়েন্টে এ মানববন্ধন কর্মসুচী পালন করা হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন টুকেরবাজার ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান।
এলাকার বিশিষ্ট মুরব্বী মোসলেহ উদ্দিন (মুসলিন) এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত মানববন্ধন কর্মসুচীতে বক্তব্য রাখেন টুকেরবাজার ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য নুরুল আমিন খুকু,৩নং ওয়ার্ডের সদস্য নাসির উদ্দিন,৫নং ওয়ার্ডের সদস্য মোঃ হাফিজ মিয়া, আব্দুল করিম ভুক্তভোগী হাজী মজনু মিয়া ও ছমির উদ্দিন প্রমুখ।
মানববন্ধন থেকে নালিয়া ও আশপাশ এলাকার নিরীহ মানুষের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মাসাৎকারী, প্রতারক ও মানবপাচারকারী ‘সিরাজুল ইসলাম’ ও তার ভাই ‘শাহাজাহান চৌধুরী’কে অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি দবি করা হয়।
সভায় বক্তারা বলেন,টুকেরবাজার ইউনিয়নের নালিয়া এলাকায় কয়েকবছর আগে এসে বসতবাড়ি ঘড়ে তুলেন প্রতারক ও মানব পাচারকারী সিরজুল ইসলাম ও তার ভাই শাহাজাহান চৌধুরী ও তার পরিবার,এই সুবাধে এলাকার নিরীহ স্বল্প আয়ের মানুষের সাথে সম্পর্কের মাধ্যমে সখ্যতা গড়ে তুলে তারা। পরে বিভিন্ন ইউরোপ আমেরিকা সহ মধ্যপ্রাচ্যে লোক পাঠানোর কথা বলে বিভিন্ন সময় মানুষের কাছে লক্ষ লক্ষ টাকা ও পাসপোর্ট জমা নেয়। নির্ধারিত সময় বেঁধে দিয়ে টাকা নিলেও পরে একে একে সকল মৌখিক ও লিখিত চুক্তি লঙ্গন করে মানুষকে প্রতারিত করার চেষ্টায় লিপ্ত হন সিরাজ ও শাহাজাহান চৌধুরী। পরে এক পর্যায়ে সিরাজ বাসা বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। পরে ভুক্তভোগীরা সিরাজ ও তার ভাই শাহাজাহান এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করলে উল্টো ভুক্তভোগী লোকজনকে নানাভাবে হুমকি প্রদান করে। এ অবস্হায় এলাকার শান্তিপ্রিয় ভুক্তভোগী মানুষ এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিবর্গ ও জনপ্রতিনিধিদেরকে বিষয়টি অবগত করে এর সুরাহায় সহযোগিতা চান। পরে বিষয়টি সুরাহা করতে এলাকার গণ্যমান্য ব্যাক্তিরা উদ্যাগ নিলেও এতে অভিযুক্ত সিরাজ ও শাহাজাহান এতে কর্ণপাত করেননি,যার ফলে এ উদ্যোগ ব্যার্থ হয়। এমতাবস্থায় ভুক্তভোগী কয়েকজন আইনি সহায়তা চেয়ে আদালতে স্মরনাপন্ন হন। তারা বলেন, এ কারনে এলাকার অনেক মানুষ এখন ভুক্তভোগী হয়ে রাস্তায় বসে পড়েছে। মানববন্ধনে বক্তারা অবিলম্বে অভিযুক্ত সিরাজ ও তার ভাই শাহাজাহান চৌধুরী সহ প্রতারক ও মানবপাচারকারী এ চক্রকে অবিলম্বে গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমুলক শাস্তির দাবি জানান।
প্রসঙ্গত এ বিষয়ে টাকা আত্মসাৎ, প্রতারণার অভিযোগ ও ক্ষতিপুরণ দাবি করে প্রতারক চক্রের ৩ জনের নাম উল্লেখ করে টুকেরবাজার ইউনিয়নের পিঠাকরা গ্রামের মোঃ আব্দুল কাদির,কামারটিলা গ্রামের ছমির উদ্দিন,সরিষাকান্দি গ্রামের হাজী মজনু মিয়া বাদী হয়ে একই এলাকার বাসিন্দা মোঃ সিরাজুল ইসলাম (৬৫),শাহজাহান চৌধুরী (৬০) ও আবির চৌধুরী (২৫) অভিযুক্ত করে ইতোমধ্যে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ২য় আদালত সিলেটে পৃথক ৩টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলা ৩টি আদালত আমলে নিয়ে ‘ক্রিমিনাল ইনভেস্টিগেশন ডিপার্টমেন্ট (সিআইডি) কে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতারিত বাকিরাও মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন