যা করার, নিয়মের মধ্যে থেকেই করেছেন বলে দাবি তাঁর। কিন্তু নিয়ম থাকলেও সেটির প্রয়োগ ক্রিকেটীয় চেতনার সঙ্গে যায় কিনা, এমন প্রশ্নও বারবারই শুনে যেতে হচ্ছিল সাকিব আল হাসানকে। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথুজের বিপক্ষে তাঁর টাইম আউটের আবেদন করা নিয়ে অবশ্য কোনো আক্ষেপই ঝরলো না বাংলাদেশ অধিনায়কের কণ্ঠে। তবু সেটি নিয়েই প্রশ্ন হয়ে যেতে থাকে।
ক্রিকেটীয় চেতনার প্রসঙ্গ আরেকবার আসতেই প্রশ্নকারী সাংবাদিককে তিনি পাল্টা বলে বসেন, ‘তাহলে আইসিসিকে বলুন নিয়মটি বদলে ফেলতে।’
শ্রীলঙ্কাকে হারিয়ে বিশ্বকাপে ভুলতে বসা জয়ের স্বাদ পাওয়ার পর রাতের সংবাদ সম্মেলনে ম্যাথুজকে ওভাবে আউট করা নিয়ে এমনও বললেন, ‘দুর্ভাগ্যজনক কিন্তু এটি নিয়মের মধ্যেই আছে।’ কিন্তু এই ম্যাচ জেতা যদি বাধ্যতামূলক না হতো, তাহলে তিনি এরকম কিছু করতেন কিনা? এই প্রশ্নেই বেরিয়ে এলো যে ম্যাচটি আসলে যুদ্ধ ভেবেই খেলতে নেমেছিলেন সাকিব, ‘(জয়ের বিকল্প নেই, এমন ম্যাচ না হলে একই কাজ) করতাম কিনা জানি না। তবে আজকের ম্যাচে আমাদের জিততেই হতো।
আর যুদ্ধে যদি আপনার দল এবং দেশকে জেতাতে চান, তাহলে সব কিছু করতেই আপনার রাজী থাকা উচিত। আমি সেটিই করেছি।’
যদিও এই যুদ্ধের পর যেন বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ক্রিকেটীয় সম্পর্কেরও ‘টাইম আউট’ হয়ে গেছে। ম্যাচ শেষে দুই দলের ক্রিকেটাররা হাত মেলানোর মতো স্বাভাবিক সৌজন্যও বিনিময় করলেন না।
যদিও এতে প্রতিপক্ষের খেলোয়াড়দেরই দোষ দেখলেন সাকিব, ‘আমরা নই, ওরাই চলে গিয়েছিল।’ সাকিবকে আউট করার পর তাঁর দিকে তাকিয়ে হাতে সময়ের ইঙ্গিত করে নিজের ‘টাইম আউট’ এর জবাব দিতে থাকা ম্যাথুজ পুষে রাখা যাবতীয় ক্ষোভ উগড়ে দিলেন সংবাদ সম্মেলনে। সাকিব শেষ করে যাওয়ার একটু পরই এলেন তিনি। আসার পর তাঁর প্রতিক্রিয়ায় স্পষ্ট যে বাংলাদেশ অধিনায়ক যেটিকে যুদ্ধের অংশ বলে মনে করেছেন, সেটি তাঁর চোখে ‘কলঙ্ক’ ছাড়া আর কিছুই নয়, ‘আমি কোনো ভুল করিনি। দুই মিনিট ছিল আমার ক্রিজে গিয়ে তৈরি হতে।
কিন্তু আমার হেলমেটে সমস্যা হয়ে যায়। যদি তারা এভাবেই ক্রিকেট খেলতে চায়, তাহলে অবশ্যই সেটি সাকিব ও বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কলঙ্কজনক।’
এই ঘটনায় বাংলাদেশ দলের প্রতি আর কোনো সম্মানও তাঁদের নেই বলে জানিয়ে রাখলেন ম্যাথুজ, ‘আজকের আগ পর্যন্ত বাংলাদেশ দলের প্রতি সর্বোচ্চ সম্মানই আমাদের ছিল।....।’ বাকিটা না বললেও বুঝে নেওয়া কঠিন নয় যে এখন আর তা অবশিষ্ট নেই। একজন শ্রীলঙ্কান সাংবাদিক হাত না মেলানোর প্রসঙ্গ তুলতেই ম্যাথুজ যা বললেন, তাতে এটি স্পষ্ট যে অন্যদের অসম্মান করা দলের প্রতি সম্মান দেখানোর প্রয়োজনও অনুভব করেন না তিনি, ‘যে আপনাকে সম্মান করে, সম্মান তাঁদেরই প্রাপ্য। তাঁদের খেলাটার প্রতি সম্মান দেখানো উচিত। কারণ আমরা সবাই এই সুন্দর খেলাটির দূত। এমনকি আম্পায়াররাও। এখন আপনিই যদি সম্মান না করেন, কাণ্ডজ্ঞান কাজে না লাগান...। আর কী বলার আছে আমার!’
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন