জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) সর্বশেষ বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মুক্তিযোদ্ধাদের সমন্বিত তালিকায় আরও ৯১০ জনের নাম যুক্ত হতে যাচ্ছে। যাদের মধ্যে সিলেট বিভাগের ৮টি উপজেলার ২৩ জনের নাম তালিকাভুক্ত করা হয়েছে।
এছাড়া খুলনা বিভাগের ২৯টি উপজেলার ৩৫৫ জন, চট্টগ্রাম বিভাগের ৪৮টি উপজেলার ১৯০ জন, বরিশাল বিভাগের ২১ উপজেলার ১৭০ জন, ঢাকা বিভাগের ৩৪টি উপজেলার ১৩০ জন, রংপুর বিভাগের ১৫টি উপজেলার ২২ জন, ময়মনসিংহ বিভাগের ১২টি উপজেলার ২০ জন রয়েছেন।
সারা দেশের ১৬৭টি উপজেলা ও মহানগর থেকে পাওয়া ‘ক’ তালিকার প্রতিবেদন পুনঃযাচাই শেষে এসব ব্যক্তির নামে গেজেট বা প্রজ্ঞাপন জারি করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের (জামুকা) সর্বশেষ বৈঠকের এ সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করতে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয় শিগগিরই প্রজ্ঞাপন জারি করবে। মন্ত্রণালয় ও জামুকা সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বীর মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে মোট ২ লাখ ৩৫ হাজার ৪৬৭ জনের নাম বিভিন্ন সময়ে গেজেটভুক্ত হয়েছিল। বর্তমানে ২ লাখ ১৯ হাজার ৭৫৮ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার নামে ভাতা (মাসিক সম্মানী) বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আর স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তীতে ২০২১ সালের মার্চ মাসে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৩৭ জন বীর মুক্তিযোদ্ধার একটি তালিকা (অপূর্ণাঙ্গ) সরকার প্রকাশ করেছিল। এটি এখন পর্যন্ত বহাল আছে বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী।
তিনি জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের পূর্ণাঙ্গ তালিকায় সংখ্যাটি ১ লাখ ৯০ হাজারের বেশি হবে না।
এদিকে বীর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় থাকা ২৭ জনের বিরুদ্ধে তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের গেজেট ও সনদ বাতিল এবং লাল মুক্তিবার্তায় থাকা নাম বাদ দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ১২ জনের নাম লাল মুক্তিবার্তায় আছে। ১৩ জনের গেজেট হয়েছিল বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে।
সূত্রমতে, গত ১২ অক্টোবর জামুকার ৮৭তম বৈঠকে জানানো হয়, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ পাওয়া গেছে, তা জামুকার চেয়ারম্যান তদন্ত করেছেন। তদন্তে ২৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাঁদের গেজেট, সনদ ও লাল মুক্তিবার্তায় থাকা নাম বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। যাঁদের নামে শুধু গেজেট আছে তাঁদের গেজেট বাতিল; যাঁদের শুধু সনদ আছে তাঁদের সনদ বাতিল; যাঁদের লাল মুক্তিবার্তায় নাম আছে তাঁদের লাল মুক্তিবার্তা থেকে নাম বাতিল এবং যাঁদের সবগুলোতে নাম আছে তাঁদের সব বাতিল করা হবে।
বিষয়টির সত্যতা নিশ্চিত করে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক গনমাধ্যমকে বলেন, জামুকার সর্বশেষ বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। প্রক্রিয়া শেষে শিগগিরই এ-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হবে। কিছু বীর মুক্তিযোদ্ধার বিরুদ্ধে তদন্তের পর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় ২৭ জনের গেজেট ও সনদ বাতিল করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন