পাসপোর্টে কানাডার ভিসা ছিল। আসা-যাওয়ার বিমান টিকিটও ছিল। ইমিগ্রেশন পুলিশও তাদের পাসপোর্টে সিল দিয়েছিল। কিন্তু তবুও কানাডা যেতে পারেননি সিলেটের ৪৫ যাত্রী। বাংলাদেশ বিমানের কর্মকর্তারা তাদেরকে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আটকে দেন। চালঞ্চল্যকর এই ঘটনায় তোলপাড় সিলেটে। ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের ছাড় দিলেও বিমান আটকে দেয়ার ঘটনা নিয়ে সমালোচনাও হচ্ছে অনেক।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকেও চলছে এ নিয়ে আলোচন পর্যালোচনা। কেউ কেউ বলছেন এটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। আবার কেউ কেউ প্রশ্ন তুলছেন কাগজপত্র না দেখে কিভাবে যাত্রীরা এজেন্সি গুলোকে টাকা দেন। আবার কেউ ইমিগ্রেশন পুলিশ তাদের ছাড় দিলেও বিমান আটকে দেয়ার ঘটনা নিয়ে সমালোচনা করছেন। তবে এর সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান অনেকেই।
ফেসবুকে একজন লিখেন- সিলেট থেকে ৪৫ জন যাত্রী যাচ্ছিলেন কানাডা। তাদের সবার কাছে ভ্যালিড ভিসা ছিল। সিলেট বিমানবন্দরে তাদের ইমিগ্রেশন সম্পন্ন হয়। বিমানে ঢাকায় আসেন তারা। কানেকটিং ফ্লাইট ছেড়ে কানাডাগামী বাংলাদেশ বিমানে ওঠার পূর্ব মুহুর্তে ঢাকায় আটকে দেয়া হয় তাদের। ইমিগ্রেশন পুলিশের ধারণা তাদের আমন্ত্রণপত্র সঠিক নয়। সেজন্য কানাডা বর্ডার সার্ভিসকে মেইল দেয়া। মেইলের রিপ্লাই না পেলেও তাদের যাত্রা আটকে দেয়া হয়। এই ৪৫ জনের কাউকেই কানাডাগামী বিমানে উঠতে দেয়া হয়নি।
এ নিয়ে একজন লিখেন- কমেন্ট অপসন টা বন্ধ কেন? খুলে দেন মানুষের মনের কিছুটা সুখ দুংখ লিখে যেত।
এ ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়ে অনেকে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
তবে কানাডাগামী ফ্লাইটের ৪৫ যাত্রীকে অফলোডের ব্যাপারে নিজেদের বক্তব্য পরিষ্কার করেছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষ। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের মহাব্যবস্থাপক (জনসংযোগ) তাহেরা খন্দকার গণমাধ্যমে এ সংক্রান্ত বক্তব্য প্রেরণ করেন।
তাহেরা খন্দকার জানান, বিমানের সিলেট স্টেশনের দায়িত্বরত কর্মকর্তাগণ যাত্রীদের ভ্রমণ সংক্রান্ত তথ্য পর্যালোচনা করে দেখতে পান ৪৫ জন যাত্রী একই ব্যক্তির আমন্ত্রণ পত্রের মাধ্যমে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগদানের উদ্দেশ্যে কানাডা যাচ্ছেন। তাৎক্ষণিকভাবে ডকুমেন্টসমূহ পর্যালোচনা করে সন্দেহ হওয়ায় সিলেট স্টেশন থেকে যাত্রীর ডকুমেন্ট ঢাকাস্থ পাসপোর্ট কন্ট্রোল ইউনিটে (পিসিইউ) প্রেরণ করা হয়।
উক্ত ইউনিট ডকুমেন্টসমূহ যাচাই-বাছাইয়ের জন্য দিল্লিস্থ কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির (সিবিএসএ) নিকট প্রেরণ করলে প্রথমে তারা জানায় সিবিএসএ এর সিস্টেমে যাত্রীর তালিকায় যাত্রীর তথ্য সঠিক রয়েছে। ফলে সিলেট থেকে যাত্রীদেরকে বোর্ডিং কার্ড ইস্যু করা হয় এবং যাত্রীগণ ঢাকায় পৌঁছান। ইতোমধ্যে কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সি থেকে আবার জানানো হয় যাত্রীদের আমন্ত্রণ পত্রের তথ্যের সাথে থাকার (আবাসন) বিষয়ে সিস্টেমে গরমিল রয়েছে। যাত্রীদের আমন্ত্রণপত্রে হোটেলে থাকার কথা থাকলেও যাত্রীদের কাছে রেন্টেড হাউজ এর ডকুমেন্ট পাওয়া যায়। কানাডিয়ান আইন অনুযায়ী একটি রেন্টেড হাউজে ৪৫ জন যাত্রী থাকার কোন নিয়ম নেই এবং তা Fire code violation বলে বার্তায় উল্লেখ করা হয়।
পরে যাত্রীদের ডকুমেন্টসমূহ ও কানাডা বর্ডার সার্ভিস এজেন্সির বার্তা পর্যালোচনা এবং উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে পরামর্শক্রমে ৪৫ জন যাত্রীকে ৭ নভেম্বর টরন্টো ফ্লাইট থেকে অফলোড করা হয়।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন