ওয়ানডের সর্বোচ্চ সেঞ্চুরির একক মালিকানা এখন বিরাট কোহলির। মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে সেমিফাইনালে শতরান করে টেন্ডুলকারকে ছাড়িয়ে গিয়ে পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে মোট সেঞ্চুরিতে এককভাবে চূড়ায় বসলেন তিনি। টেন্ডুলকারের শহরে টেন্ডুলকারের সামনেই তাঁর রেকর্ড ভেঙে দিলেন কোহলি। ওয়ানডেতে টেন্ডুলকারের সেঞ্চুরি ৪৯ আর কোহলির ৫০।
তিন অংকের জাদুকরী স্কোর ছুঁয়েছেন শ্রেয়াস আয়ারও। কোহলির রেকর্ড গড়া শতরানের সঙ্গে শ্রেয়াস আয়ারের বিস্ফোরক শতরান এবং শুভমান গিলের হাফসেঞ্চুরিতে প্রথম সেমিফাইনালে ৩৯৭ রানের পাহাড় গড়ে ভারত। বিশ্বকাপে নকআউট পর্বে যা সর্বোচ্চ দলীয় স্কোর। ওই রান তাড়া করে ড্যারিল মিচেলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পরও ৩২৭ রানে থেমেছে নিউজিল্যান্ড।
৭০ রানের জয়ে ২০১১ সালের পর আবার ফাইনালে উঠল দুইবারের চ্যাম্পিয়ন ভারত।
অন্যদিকে ওয়ানডে বিশ্বকাপে টানা দুটি ফাইনাল খেলে এবার সেমিফাইনাল থেকে বিদায় নিল কিউইরা। ২০১৯ বিশ্বকাপে এই নিউজিল্যান্ডের কাছে সেমিফাইনালে হেরে বিদায় নিয়েছিল ভারত। একই মঞ্চে এবার কিউইদের হারিয়ে মধুর প্রতিশোধ নিল রোহিত শর্মার দল।
ক্যারিয়ার সেরা বোলিংয়ে ৭ উইকেট পান সামি। এতে ২৩ উইকেট নিয়ে বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি তিনি।
ওয়াংখেড়েতে টস জিতে নিজেরা প্রথমে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন রোহিত শর্মা। বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে ভারতকে দারুণ শুরু এনে দিয়ে নিজের সিদ্ধান্তকে যথার্থও প্রমাণ করেন ভারত অধিনায়ক। শুভমান গিলকে নিয়ে উদ্বোধনী জুটিতে ৮.২ ওভারে ৭১ রান যোগ করে টিম সাউদির বলে কেন উইলিয়ামসনকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন রোহিত।
৪টি করে ছক্কা এবং চারে ২৯ বলে ৪৭ রান করেন রোহিত।
রোহিত ফেরার পর রানের চাকা সচল রাখেন শুভমান গিল ও বিরাট কোহলি। ৮৬ বলে তাঁরা যোগ করেন ৯৩ রান। শতরানের পথেই হাঁটছিলেন শুভমানও। কিন্তু পায়ের পেশিতে টান লাগায় তিন অংকের স্কোর ছোঁয়ার আর সুযোগ পাননি তিনি। মাঠ ছাড়ার পর আবার ব্যাটিংয়ে নামলেও ৩টি ছক্কা এবং ৮টি চারে ৬৬ বলে ৮০* রানের ঝোড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন ভারতীয় এই ব্যাটার।
চোটের জন্য শুভমান না পারলেও কোহলি ঠিক ছুঁয়েছেন তিন অংকের জাদুকরী স্কোর। ১০৬ বলে ৮টি চার এবং ১টি ছক্কায় সেঞ্চুরি পূরণ করেন তিনি। ওয়ানডেত মোট সেঞ্চুরিতে তিনি পেছনে ফেললেন কিংবদন্তী টেন্ডুলকারকে। এই সংস্করণে সেঞ্চুরির হাফসেঞ্চুরি কীর্তিটা শুধু কোহলিরই। শেষ পর্যন্ত ১১৩ বলে ৯টি চার এবং ২ ছক্কায় ১১৭ রান করে টিম সাউদির বলে ডেভন কনওয়ের তালুবন্দী হয়েছেন তিনি। শুভমান গিলের সঙ্গে নব্বই ছাড়ানো জুটির পর বিধ্বংসী ব্যাটিংয়ে শ্রেয়াস আয়ারকে নিয়ে ১২৮ বলে ১৬৩ রানের বড় একটা জুটি গড়ে ভারতকে বড় স্কোর গড়ায় অগ্রনী ভূমিকা রাখেন কোহলি।
সেঞ্চুরি করেছেন আয়ারও। শুরু থেকে আগ্রাসী ব্যাটিং করতে থাকেন আয়ার। ৪ ছক্কায় ৩৫ বলে তিনি পূরণ করেন হাফসেঞ্চুরি। আর সেঞ্চুরি পূরণ করেছেন ৬৭ বলে। পরের পঞ্চাশ নিতে বল খেলেছেন ৩২ টি। ৮টি ছক্কা এবং ৪টি চারে খেলা তাঁর ৭০ বলে ১০৫ রানের বিস্ফোরক ইনিংস এবং লোকেশ রাহুলের ২০ বলে ৩৯* রানের ক্যামিওতে চার শ ছুঁই ছুঁই হয় ভারতের স্কোর। নিউজিল্যান্ডের হয়ে ৩টি উইকেট নিয়েছেন টিম সাউদি। আয়ারের উইকেটটি নিয়েছেন ট্রেন্ট বোল্ট।
ভারতের রান পাহাড় ডিঙাতে নেমে মোহাম্মদ সামির জোড়া আঘাতে ৩৯ রানে ২ উইকেট হারিয়ে নড়বড়ে শুরু করে নিউজিল্যান্ড। তবে কেন উইলিয়ামসন ও ড্যারিল মিচেলের ব্যাটে শুরুর ধাক্কা সামলে জয়ের আশাও হয়তো দেখছিল কিউইরা। কিন্তু ৬৯ রান করা উইলিয়ামসনকে ফিরিয়ে জুটিটা ভাঙার পর সামি একই ওভারে টম লাথামকেও ফেরালে আবার চাপে পড়ে কিউইরা। তাদের হারানো প্রথম চার উইকেটই নেন সামি। ২২০ রানে চতুর্থ উইকেট হারানোর পর গ্লেন ফিলিপসের সঙ্গে একটা হাফসেঞ্চুরির জুটি গড়েন সেঞ্চুরিয়ান মিচেল। ৪১ রান করে বুমরাহর বলে রবীন্দ্র জাদেজাকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ফিলিপস। অন্য প্রান্তে তাঁর সাবলিল ব্যাটিং করলেও দলের হার এড়াতে পারেননি মিচেল। বিফলে গেছে তার ১১৯ বলে ১৩৪ রানের ইনিংসটি। মোহাম্মদ সামি একাই নেন ৭ উইকেট।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন