চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং গতকাল বুধবার এশিয়া প্যাসিফিক ইকোনমিক কো-অপারেশন (এপেক) সম্মেলনে যোগ দিতে ক্যালিফোর্নিয়ার সান ফ্রান্সিসকোয় পৌঁছেছেন। সম্মেলনের এক ফাঁকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি। দুই পরাশক্তির শীর্ষ নেতার এ বৈঠককে ব্যাপক গুরুত্ব দিচ্ছেন পর্যবেক্ষকরা। বলা হচ্ছে, নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা যেন দ্বন্দ্ব-সংঘাতে পর্যবসিত না হয়, এ বৈঠকে সেদিকে অগ্রগতি করাই উভয়ের লক্ষ্য।
শি চিনপিং শেষবার যখন মার্কিন মুলুকে পা রেখেছিলেন, তখনকার চেয়ে এবারের পরিস্থিতি একেবারেই আলাদা। শি পাঁচ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্র সফরে এলে তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রিসোর্ট মার-এ-লাগোয় আপ্যায়িত হয়েছিলেন। তখন চীনের অবস্থা ছিল ঊর্ধ্বগামী। সে সময় দেশটির অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি পূর্বাভাসকেও ছাড়িয়ে গিয়েছিল।
এরপর সেই অবস্থায় ভাটা দেখা দিয়েছে। শি চিনপিং ‘চীনা স্বপ্নের’ সৌধে ফাটল আরো বেড়েছে। এ কারণে চিনপিং এবার আলোচনার জন্য অধিকতর নাজুক অবস্থানে আছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। যদিও আলোচনা থেকে কোনো বড় ধরনের সাফল্যের প্রত্যাশাই কম।
কিছুদিন আগেও যুক্তরাষ্ট্রকে টপকে চীন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করবে বলে আতঙ্কে ছিল মার্কিনিরা। তবে তা আদৌ হবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন বিশ্লেষকরা।
সিঙ্গাপুরের এস রাজারত্নম স্কুল অব ইন্টারন্যাশনালের সহযোগী অধ্যাপক লি মিংজিয়াং বলেছেন, চীনের বর্তমান অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলো চিনপিংয়ের আলোচনার একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয়’ হবে। এটি তাকে ‘যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্ক স্থিতিশীল করার জোরালো তাগিদের দিকে নিয়ে যেতে পারে’। যুক্তরাষ্ট্র চীনের সঙ্গে বাণিজ্যযুদ্ধ বা প্রযুক্তিগত প্রতিদ্বন্দ্বিতা বাড়াবে না, সে ব্যাপারে জো বাইডেনের কাছ থেকে আশ্বাস পেতে চাইবেন চিনপিং।
বৈঠকস্থল যেহেতু বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলোর কেন্দ্র সান ফ্রান্সিসকো তাই আলোচনায় দুই দেশের প্রযুক্তি খাতও প্রাধান্য পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে কথা বলবেন তাঁরা। অন্তত পারমাণবিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণে এআইয়ের ভূমিকা সীমিত রাখতে একমত হতে পারেন দুই নেতা। আলোচনায় উঠতে পারে তাইওয়ান প্রসঙ্গও।
আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের প্রত্যাশা
কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন কারণে চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্কের অবনতি ঘটেছে। বৈঠক থেকে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটানো এসব বিষয়ে উল্লেখযোগ্য কোনো সাফল্য আশা করছেন না মার্কিন কর্মকর্তারা।
সূত্র : বিবিসি, এএফপি, আলজাজিরা
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন