জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ দ্রুত লড়াই থামিয়ে গাজায় আরো মানবিক করিডরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। তবে ইসরায়েল তা মানতে নারাজ। মানবিক প্রয়োজনে দীর্ঘ যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের কথাও জানিয়েছিল জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ। জাতিসংঘের বুধবার নেওয়া সেই সিদ্ধান্তেরও বিরোধিতা করেছে ইসরায়েল।
ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নিওর হাইয়াত স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, ২৩৯ জন পণবন্দিকে মুক্তি না দেওয়া পর্যন্ত ইসরায়েল লড়াই থামাবে না। আপাতত গাজায় নতুন কোনো করিডর বা প্যাসেজ তৈরির প্রশ্ন ওঠে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের প্রস্তাবে বলা হয়েছিল, গাজা থেকে আহত, অসুস্থ মানুষসহ বেসামরিক ব্যক্তিদের বের করার জন্য আরো নতুন প্যাসেজ তৈরি করা হোক। এখন শুধু মিসরের সীমান্তে একটি করিডর ব্যবহার করা হচ্ছে।
কিন্তু মূলত বিদেশিদের রের করার জন্যই ওই রাস্তা ব্যবহার করা হচ্ছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, এমন কোনো করিডর তৈরি করার কোনো প্রশ্নই নেই এখন। প্রথমে পণবন্দিদের মুক্তি দিতে হবে, তার পরেই লড়াই বন্ধ করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। শুধু তা-ই নয়, ইসরায়েলের দাবি, জাতিসংঘের সিদ্ধান্তে হামাসের প্রসঙ্গ উল্লেখ করতে হবে।
গাজা স্ট্রিপের নিরাপত্তা বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য, গাজায় ইসরায়েলের আধিপত্য মেনে নেওয়ার কথাই ঘুরিয়ে বলতে চেয়েছে ইসরায়েল।
যুক্তরাষ্ট্রকে চিঠি
ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর স্ত্রী সারা নেতানিয়াহু মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের স্ত্রী জিল বাইডেনকে একটি চিঠি লিখেছেন। সেখানে তিনি জানিয়েছেন, হামাস যাদের জিম্মি করেছে তাদের মধ্যে ৩২ বছরের এক নারী বন্দি অবস্থায়ই এক সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। শুধু তা-ই নয়, সারা জানিয়েছেন, বন্দিদের মধ্যে ৩২ জন বাচ্চা ছেলে-মেয়ে।
দ্রুত তাদের মুক্তির জন্য জিল বাইডেনকে আবেদন জানাতে বলেছেন সারা। তাদের যৌথ আবেদনের ভিত্তিতে বন্দিদের যাতে মুক্ত করা যায়, সে কথা চিঠিতে জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের প্রস্তাব নিয়েও বিতর্ক
বুধবার জাতিসংঘ যে প্রস্তাব পাস করেছে, যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং যুক্তরাজ্য কেউই সেই ভোটে অংশ নেয়নি। মাল্টা এই প্রস্তাব টেবিলে রেখেছিল। বাকি ১২টি দেশ তা সমর্থন করেছে। যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য ছিল, ‘যুদ্ধবিরতি’ শব্দটি ব্যবহার করা যাবে না। প্রস্তাবে হামাসের বিষয়েও কোনো কথা বলা হয়নি। ৭ অক্টোবরের ঘটনার কোনো উল্লেখ নেই।
এদিকে গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালে এখনো অভিযান চলাচ্ছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের দাবি, হাসপাতালের ভেতর থেকে তারা অস্ত্র পেয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, হাসপাতালের ভেতর ইসরায়েলের এই অভিযান কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে এই অভিযান বন্ধ হওয়া দরকার। হামাস জানিয়েছে, হাসপাতালের ভেতর থেকে তারা লড়াই চালায়নি। ইসরায়েলের দাবি সব মিথ্যা। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, এখনো হাসপাতাল চত্বরে মৃতদেহ ছড়িয়ে আছে।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন