মাইক্রোসফটের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সত্য নাদেলা সোমবার ওপেনএআই থেকে সদ্য বরখাস্ত হওয়া স্যাম অল্টম্যান ও তার দলের অন্য সদস্যদের নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। চ্যাটজিপিটি উদ্যোগের সহপ্রতিষ্ঠাতাকে বরখাস্ত করার কয়েক দিন পর এ ঘোষণা এলো।
নাদেলা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম এক্সে লিখেছেন, অল্টম্যান ওপেনএআইয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা গ্রেগ ব্রকম্যান ও অন্য সহকর্মীদের সঙ্গে ‘একটি নতুন উন্নত এআই গবেষণাদলের নেতৃত্ব দিতে মাইক্রোসফটে যোগ দেবেন।’
ওপেনএআইয়ের বোর্ড গত শুক্রবার অল্টম্যানকে বরখাস্ত করেছিল।
মার্কিন গণমাধ্যম জানিয়েছিল, অল্টম্যান তার প্রযুক্তির বিপদের আশঙ্কাগুলোকে অবমূল্যায়ন করায় এবং কম্পানিকে নির্ধারিত মিশন থেকে দূরে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
অল্টম্যান গত বছর তার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) চ্যাটবট চালু করে খ্যাতি অর্জন করেছেন। তার প্রযুক্তি এআই গবেষণা ও উন্নয়নের পাশাপাশি এই খাতে বিলিয়ন বিলিয়ন অর্থ বিনিয়োগের জন্য একটি সম্ভাবনার সূচনা করেছে।
এদিকে অল্টম্যানকে বরখাস্তের ফলে কম্পানিটি থেকে অন্য শীর্ষ কর্মকর্তাদের প্রস্থানের সূত্রপাত হয়।
সেই সঙ্গে বড় বিনিয়োগকারীরা তাকে দলে নেওয়ার চেষ্টা করে। মার্কিন গণমাধ্যম অনুসারে, মাইক্রোসফট ওপেনএআইয়ের বেশ কয়েকটি শীর্ষ বিনিয়োগকারীর মধ্যে ছিল, যারা অল্টম্যানকে সিইও হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার চেষ্টা করছিল।
অন্যদিকে নিউ ইয়র্ক টাইমস অনুসারে, ওপেনএআই রবিবার রাতে কর্মীদের কাছে পাঠানো একটি মেমোতে তাদের সিদ্ধান্তে অটল থাকার কথা জানিয়ে বলেছে, ‘স্যামের আচরণ ও স্বচ্ছতার অভাব...কম্পানির কার্যকরভাবে তদারকি বোর্ডের ক্ষমতাকে ক্ষুণ্ন করেছে।’
অল্টম্যানকে বরখাস্ত করার পর অ্যামাজনের টুইচ স্ট্রিমিং পরিষেবার সাবেক প্রধান নির্বাহী এমমেট শিয়ারকে অন্তর্বর্তী সিইও হিসেবে নিয়োগ করেছে ওপেনএআই।
তিনি সোমবার এক্সে একটি পোস্টে এ কথা জানিয়েছেন। এআই প্রযুক্তির ব্যবহারে নিরাপত্তাসংক্রান্ত উদ্বেগের কারণে অল্টম্যানকে বরখাস্ত করা হয়েছে—শিয়ার এমন খবরও অস্বীকার করেছেন।
মাইক্রোসফট সিইও নাদেলা তার পোস্টে বলেছেন, ‘আমরা এমমেট শিয়ার ও ওএআইয়ের নতুন নেতৃত্ব দলকে জানার এবং তাদের সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ। আমরা ওপেনএআইয়ের সঙ্গে আমাদের অংশীদারত্বের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং আমাদের পণ্যের যাত্রায় আস্থা রাখি।’
গ্লোবাল টেক টাইটান মাইক্রোসফট ওপেনএআইয়ে ১০ বিলিয়ন ডলারের বেশি বিনিয়োগ করেছে এবং তার নিজস্ব পণ্যগুলোতে এআই অগ্রগামীর প্রযুক্তি চালু করেছে।
কম্পানিটি মাইক্রোসফট, গুগল, মেটাসহ স্টার্ট-আপগুলোর সঙ্গে তার নিজস্ব এআই মডেলের বিকাশের জন্য তীব্র প্রতিযোগিতায় রয়েছে।
চ্যাটজিপিটির মতো উৎপাদনশীল এআই প্ল্যাটফরমগুলোকে প্রচুর পরিমাণে ডাটার ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়, যাতে এগুলো মানুষের মতো ভাষায় প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে, এমনকি জটিল প্রশ্নগুলোরও। এগুলো ইমেজ তৈরি ও ম্যানিপুলেট করতেও ব্যবহৃত হয়। কিন্তু প্রযুক্তিটি এর অপব্যবহারের বিপদ সম্পর্কে সতর্কতা জারি করেছে, যার মধ্যে ‘ডিপফেক’ ছবি দিয়ে মানুষকে ব্ল্যাকমেইল করা থেকে শুরু করে ছবির হেরফের ও ক্ষতিকারক বিভ্রান্তি রয়েছে।
সূত্র : এএফপি
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন