গোরস্তানের ভূমির উপর নজর পড়েছিলো ভূমিখেকো চক্রের। তবে জনগনের সচেতনতা ও সোচ্চার ভূমিকার কারণে তারা সফল হতে পারেনি। প্রশাসন তাদের চেষ্টা ব্যার্থ করে দিয়েছে।
জানা গেছে, সিলেট সদর উপজেলার সাহেবের বাজার সংলগ্ন গ্রামগুলোর অধিবাসীদের জন্য একটি গোরস্তান রয়েছে। এই গোরস্তানের জায়গা দখল করে অস্থায়ী দোকান কোটা তৈরি হচ্ছে বলে সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর সোমবার (২০ নভেম্বর) একটি অভিযোগপত্র জমা দিয়েছেন এলাকাবাসী।
অভিযোগপত্রে তারা উল্লেখ করেন, সেই ১৯৫৬ সাল থেকে শুরু কওে বর্তমান হাল জরিপেও ১নং খতিয়ানের ৪১০২নং দাগ কবরস্থান হিসাবে রেকর্ড আছে। এই কবরস্থানের উত্তের দিকে একটি পাকা প্রাচীর ছিলো। কিন্তু ২০০৩ সালে রাস্তা পাকা করার সময় প্রাচীরটি ভেঙে ফেলা হয়। এলাকাবাসীর প্রতিবাদের মুখে সরকারি উদ্যোগে প্রাচীর নির্মাণের আশ্বাস দেয়া হলেও তা আর বাস্তবায়ন হয়নি। প্রাচীর না থাকায় সম্প্রতি এলাকার কিছু ভূমিখেকো নানাভাবে গোরস্তানের ভূমি দখলে উঠে পড়ে লাগে। তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেবাইরবহর গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে ও সাহেবের বাজারের আলোচিত হত্যাকাণ্ড ডাক্তার নিজাম হত্যা মামলার আসামী মোহাম্মদ আলী বটল, মৃত মদরিছ আলীর ছেলে কুতুব মিয়া ও কুতুব মিয়ার ছেলে মখলিছ মিয়া। তারাসহ আরও কয়েকজন ভূমিখেকো গোরস্তানের জায়গা দখল করে অস্থায়ী দোকান কোটা নির্মাণ শুরু করেন।
এসব দোকানে মাদক সেবন ও বেঁচা-কেনার অভিযোগও করেছেন এলাকাবাসী। এছাড়া বিভিন্ন সময় প্রশ্রাব পায়খানার মতো জঘন্য কাজও চলছে গোরস্তানে। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে দিনে দিনে ক্ষোভ দানা বাঁধছে। যখন তখন মারাত্মক অঘটন ঘটার আশঙ্কাও প্রকাশ করেছেন তারা।
সিলেট সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাছরিন আক্তার এমন অভিযোগপ্রাপ্তির কথা স্বীকার করে বলেন, এ ব্যাপারে কিছু পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। একজন কর্মকর্তাকে বিষয়টি দেখার দায়িত্বও দিয়েছি। দু’একদিনের মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া যাবে। অভিযোগের সত্যতা পেলে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
তবে খাদিমনগর ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের সদস্য আনসার আলী এ ব্যাপারে বলেন, ইউএনওর নির্দেশে বিষয়টি তদন্ত করা হয়েছে। যারা অস্থায়ী ঘর তুলেছিলেন, তারা তা ভেঙে ফেলেছেন। ভবিষ্যতে জরিপের মাধ্যমে গোরস্তানের সীমা নির্ধারণ করা হবে বলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে প্রধান অভিযুক্ত মোহাম্মদ আলী বটল বলেন, গত প্রায় অর্ধ শতাব্দী ধরে এখানে আমাদের দোকান কোটা রয়েছে। সেই দোকান কোটার পেছনের দিকে আমাদেরই জায়গা আছে। সেখানে আমার দোকানটা বর্ধিত করতে চেয়েছিলাম। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা জরিপের পর দোকান কোটা বর্ধিত করার পরমার্শ দিয়ে বর্তমানে তা ভেঙে ফেলার নির্দেশ দিলে আমরা তা ভেঙে ফেলি। জরিপের পর গোরস্তানের সীমানা নির্ধারণ হলে আমরা দোকান কোটা আরও বড় বা প্রশ্বস্ত করবো।
এদিকে অভিযোগকারীদের মধ্যে কয়েকজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই প্রতিবেককে বলেন, তারা গোরস্তানের জমি দখলের অপচেষ্টা চালিয়ে ছিলেন। তবে জনগনের সচেতনতায় তা আর সম্ভব হয়নি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন