আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে সিলেট জেলার ছয়টি আসনের মধ্যে চারটি নিয়ে আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে শুরু হয়েছে নতুন করে হিসাব-নিকাশ। শেষ মুহূর্তে আসনগুলো আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের দখলে থাকবে না মহাজোটের শরিকদের ছেড়ে দিতে হবে- এ নিয়ে চলছে হিসাব।
আভাস পাওয়া যাচ্ছে- শেষ পর্যন্ত আসনগুলো মহাজোটের শরিকদের জন্য উন্মুক্ত রাখা হতে পারে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের জাতীয় পার্টির সঙ্গে অবতীর্ণ হতে পারে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতায়।
সিলেট-১ আসনে ড. এ কে আবদুল মোমেন ও সিলেট-৪ আসনে ইমরান আহমদ বর্তমান সংসদ সদস্য। তারা দুজনেই সরকারের মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে তাদের মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত। এ দুই আসনে মহাজোটের শরিক দলগুলোরও শক্তিশালী কোনো প্রার্থী নেই।
তবে নির্বাচনের পরিস্থিতিতে পাল্টে গেছে বাকি চারটি আসনের হিসাব-নিকাশ। জোটের ভাগবাটোয়ারা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার আভাস দিতে এই চারটিতে ভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পারে আওয়ামী লীগ।
দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-২ আসনে আওয়ামী লীগের কোনো প্রার্থী অংশ নেননি। দুই নির্বাচনেই আসনটি মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। মহাজোটকে আসন ছেড়ে দেওয়ায় মনোনয়ন প্রত্যাহার করতে হয় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী শফিকুর রহমান চৌধুরীকে। এবার এই আসনে দলীয় প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়ার জোর দাবি থাকলেও ভোটের হিসাব-নিকাশে আসতে পারে ভিন্ন সিদ্ধান্ত। এবার আসনটি থেকে নৌকার টিকিট পাচ্ছেন শফিকুর রহমান চৌধুরী- এমনটা প্রায় নিশ্চিত। আর জাতীয় পার্টি থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে রয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরী।
সিলেট-৩ আসনে গত তিনটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিজয়ী হয়েছেন। একাদশ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ী প্রার্থী মাহমুদ উস সামাদ কয়েসের মৃত্যুর পর উপনির্বাচনেও দলের প্রার্থী হাবিবুর রহমান বিজয়ী হন। তবে এবার জোটগত নির্বাচনে এ আসনটি আওয়ামী লীগের হাতছাড়া হতে পারে। অথবা জাতীয় পার্টির প্রার্থীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে পারে আওয়ামী লীগের প্রার্থীকে।
সিলেট-৫ আসনে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হাফিজ আহমদ মজুমদার বিজয়ী হন। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি জোটের সঙ্গে ভাগাভাগি করলে বিজয়ী হন জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন। একাদশে এসে ফের আসনটি নিজেদের করে নেয় আওয়ামী লীগ। পাঁচ বছরের ব্যবধানে আরেকবার এ আসন ভাগাভাগির নানা জল্পনা-কল্পনা চলছে।
গত তিনটি নির্বাচনে সিলেট-৬ আসন নিজেদের দখলে রেখেছে আওয়ামী লীগ। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন নুরুল ইসলাম নাহিদ। এ বছর নির্বাচনি মাঠে এখন পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) অংশগ্রহণের বার্তা না দেওয়ায় অন্যতম প্রতিদ্বন্দ্বী দল হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে তৃণমূল বিএনপি। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সিলেট-৬ থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতার লক্ষ্যে দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেছেন তৃণমূল বিএনপির চেয়ারপারসন শমসের মবিন চৌধুরী। গোলাপগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা শমসের মবিন বিএনপির হেভিওয়েট নেতা ছিলেন। আসন ভাগাভাগির হিসাব-নিকাশে এই আসনটিও রয়েছেন শীর্ষ আলোচনায়।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন