ব্রিটেনে ২০২২ সালে নেট মাইগ্রেশন হয়েছিল রেকর্ড ৭ লাখ ৪৫ হাজার। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স থেকে বৃহস্পতিবার প্রকাশিত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এই তথ্য পাওয়া গেছে। মে মাসে এই সংস্থা জানিয়েছিল গত বছর নেট মাইগ্রেশন ছিল ৬ লাখ ৬ হাজার। নতুনভাবে এই সংখ্যা সংশোধন করে অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স জানিয়েছে, প্রকৃত সংখ্যা ১ লাখ ৩৯ হাজার বেশী ছিল। সরকার বলছে, উচ্চ মাইগ্রেশনের কারণে দেশের মানুষের ওপর চাপ পড়ছে এবং এ বিষয়ে আরও অনেক কিছু করতে হবে। প্রধান বিরোধী দল লেবার পার্টি বলছে, নতুন এই উপাত্ত এসাইলাম ব্যবস্থাপনা এবং অর্থনীতি পরিচালনায় সরকারের ব্যর্থতা স্পষ্ট করেছে।
এক বছরে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে মোট জনসংখ্যা বেড়েছে শেফিল্ডের মোট জনসংখ্যার সমানঃ ৫ লাখ ৭৮ হাজার। সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী গত বছর ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসের জনসংখ্যা ছিল ৬ কোটি ২০ লাখ। ৬০ এর দশকের শুরুতে ব্রিটেনে জন্ম হার বেশী হওয়ার কারণে দ্রুত জনসংখ্যা বাড়ছিল; তখন মৃত্যু হারের চেয়ে জন্ম হার ছিল বেশী। এখন জন্ম আর মৃত্যু হারের ব্যবধান খুবি কম। ব্রিটেনে এখন জনসংখ্যা বৃদ্ধির সবচেয়ে বড় কারণ ইমিগ্রেশন।
বিদেশ থেকে ব্রিটেনে বসবাস করতে আসা মানুষের সংখ্যা থেকে ব্রিটেন ছেড়ে অন্য দেশে চলে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাদ দিলে যে সংখ্যা পাওয়া যায়, সেটিই নেট মাইগ্রেশন। ২০২২ সালে নেট মাইগ্রেশন ছিল রেকর্ড ৭ লাখ ৪৫ হাজার। তবে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত নেট মাইগ্রেশন হয়েছে ৬ লাখ ৭২ হাজার। অর্থাৎ, নেট মাইগ্রেশন এই মুহূর্তে সম্ভবত নিম্নগামী। অফিস ফর ন্যাশনাল স্ট্যাটিস্টিক্স থেকে প্রকাশিত উপাত্ত অনুযায়ী, গত ১২ মাসে প্রায় ১২ লাখ মানুষ ব্রিটেনে বসবাস করতে এসেছেন। এদের তিন ভাগ্যের একভাগ হাই-স্কিলড মাইগ্রেনট ও তাদের পরিবারের সদস্য, যাদের মধ্যে প্রতি তিন জনের একজন এসেছেন ব্রিটেনের এনএইচএস এবং সোশাল কেয়ার সেক্টরে কাজ করতে। এসব হাই স্কিলড ওয়ার্কারের অধিকাংশ এসেছেন ইন্ডিয়া, নাইজেরিয়া এবং জিম্বাবুয়ে থেকে। গত বছর ৪ লাখ ১০ হাজার বিদেশী শিক্ষার্থী ব্রিটেনে পড়তে এসেছেন। বাকী এক তৃতীয়াংশ এসেছেন অন্যান্য ভিসায়।
বৃহস্পতিবার হোম অফিস থেকে আরও কিছু উপাত্ত প্রকাশ করা হয়েছে। এতে দেখা যায়, চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এক বছরে ৪৫ হাজার ইমিগ্রেনৎ এসেছেন অনিয়মিত পথে, যাদের অধিকাংশ ব্রিটেনে প্রবেশ করেছেন ইংলিশ চ্যানেল দিয়ে ছোট নৌকায় চড়ে। এই সংখ্যা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। এদিকে জমে থাকা এসাইলাম আবেদনের সংখ্যা অনেক বেশী। গত বছরের তুলনায় এই সংখ্যা কিছুটা কম। এই মুহূর্তে ৫৬ হাজাত এসাইলাম সিকারকে হোটেলে বসবাসের ব্যবস্থা করে দিয়েছে হোম অফিস। হোটেলে এসাইলাম সিকারদের এই সংখ্যাও একটু রেকর্ড। এই খাতে সরকারের বছরে খরচ হচ্ছে তিন বিলিয়ন পাউন্ড।
সরকারের মনোযোগ অনেক বেশী ইংলিশ চ্যানেলে অবৈধভাবে ব্রিটেনে প্রবেশ করা মাইগ্রেনটদের ওপর। কিন্তু বৃহস্পতিবার প্রকাশিত তথ্য এবং উপাত্ত বলছে, ব্রিটেনে আসা সর্বমোট ইমিগ্রেনট এর খুব সামান্য একটি অংশ এই চ্যানেল মাইগ্রেনট। ব্রিটেনে বৈধভাবে আসা ইমিগ্রেনট এর হার ৯৭ শতাংশ।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন