বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম এখনো দেখা হয়নি হাভিয়ের কাবরেরার। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই সেখানে সংস্কারকাজ চলছে। ঘরের মাঠ বলতে তিনি এখন বসুন্ধরা কিংস অ্যারেনাকেই চেনেন। যেখানে চার ম্যাচে বাংলাদেশ এখনো হারেনি, জিতেছে একটি।
বসুন্ধরা কিংস তো নিজেদের ঘরের এই মাঠকে দুর্গ বানিয়েছে আরো আগেই। গত পরশু মাজিয়া স্পোর্টসও সেই দুর্গ জয় করতে পারেনি।
কিংস অ্যারেনার যাত্রা শুরু ২০২২ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি। সেদিন বাংলাদেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে নিজেদের মাঠে লিগের ‘হোম ম্যাচ’ খেলে কিংস।
পেশাদার লিগ শুরুর পর হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ে ম্যাচ চালু হয় বাংলাদেশের ফুটবলেও। কিন্তু সেটি নামকাওয়াস্তে। ঢাকার দলগুলোই বিভিন্ন জেলা স্টেডিয়াম তাদের হোম ভেন্যু বানায়। ঢাকা থেকে গিয়ে গিয়েই সেখানে তারা ‘হোম ম্যাচ’গুলো খেলে।
কিংস নিজস্ব স্টেডিয়াম বানিয়ে সত্যিকার হোম অ্যান্ড অ্যাওয়ের স্বাদ আনে এ দেশের ফুটবলে। ঘরের মাঠের সুবিধা কী, সেটাও তারাই প্রথম দেখায়। শুরুর দিন থেকে ঘরের মাঠে দুটি লিগ খেলেছে কিংস। দলটির তৃতীয় ও চতুর্থ লিগ শিরোপার অংশ এই স্টেডিয়াম। এই মাঠে সেই দুই লিগের কোনো ম্যাচ তারা এখানে হারেনি।
প্রথমবার লিগের প্রথম দুটি ‘হোম ম্যাচ’ কিংসকে খেলতে হয়েছিল ভিন্ন মাঠে। সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হলেও বাফুফের অনুমোদন মিলছিল না। তবে বাফুফে খুব বেশিদিন আটকে রাখতে পারেনি তাদের। পুলিশ এফসির বিপক্ষে ৩-০ গোলের জয় দিয়ে সেই যাত্রা শুরু তাদের। সে মৌসুমে ৯টি হোম ম্যাচ খেলে তারা কিংস অ্যারেনায়। শেখ রাসেলও এই ভেন্যুকে হোম বানানোয় তাদের হোম ম্যাচটিও কিংস খেলে এই ভেন্যুতে। তাতে হয় ১০ ম্যাচ। কিংসের ‘পারফেক্ট টেন’ হয়নি স্রেফ একটি ড্রয়ে, শেখ জামালের সঙ্গে কিংসের নাটকীয় সেই ম্যাচের ফল ছিল ৩-৩। গত পরশু এএফসি কাপে মাজিয়ার বিপক্ষে ম্যাচটি সহ কিংস অ্যারেনায় গত প্রায় দুই বছরে খেলা ২৫টি ম্যাচের মধ্যে ওই একটি ম্যাচই কেবল কিংস ড্র করেছে, জিতেছে ২৪টিতেই।
এ বছর বাংলাদেশের প্রথম ক্লাব হিসেবে টানা চতুর্থ লিগ শিরোপা জয়ের পথে ১১টি ম্যাচের সব কয়টিতেই তারা জিতেছে। এ বছর স্বাধীনতা কাপের যে একটি ম্যাচ খেলেছে এখানে, সেটিও জিতেছে কিংস। এরপর এএফসি কাপ। গত ২ অক্টোবর কিংস অ্যারেনায় বসুন্ধরা কিংসের প্রথম আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় ভারতের ওড়িশা এফসির বিপক্ষে। মালদ্বীপে মাজিয়ার কাছে প্রথম ম্যাচ হেরে আসায় কিংসের অনেকটাই ভগ্ন হৃদয় তখন। শৃঙ্খলাজনিত কারণে গুরুত্বপূর্ণ কয়েক ফুটবলারও নেই। ঘরের মাঠে ওড়িশার বিপক্ষে সেই ম্যাচে শুরুতে পিছিয়ে পড়েও ৩-২ গোলের জয়। এরপর আরেক ইতিহাস, মোহনবাগান বধের! সর্বশেষ ম্যাচে সেই মাজিয়ার বিপক্ষে জয়।
চার ম্যাচ ডাগআউটে দাঁড়িয়েই কিংস অ্যারেনার উত্তাপ আঁচ করতে পেরেছেন জাতীয় দলের কোচ হাভিয়ের কাবরেরা, ‘এই মাঠে খেলোয়াড়রা বিশ্বাস পায়। গ্যালারি এত কাছে, দর্শক সমর্থন এত তীব্র যে ওরা হাল ছেড়ে দেয় না।’
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন