সিলেটে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন নিয়ে অসন্তোষ চলছে। জেলার ৬টি সংসদীয় আসনের সবকটিতে মনোনয়ন পেয়েছেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের অনুসারীরা। বঞ্চিত হয়েছেন পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদপন্থীরা। এ নিয়ে দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে চলছে ক্ষোভ।
কাক্সিক্ষত আসনের পরিবর্তে অন্য আসনে মনোনয়ন পাওয়ায় কেউ নির্বাচন না করার ঘোষণা দিয়েছেন। আবার মনোনয়ন ঘোষণার ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রার্থী বদলেরও ঘটনা ঘটেছে। সবমিলিয়ে জাতীয় পার্টির দ্বিতীয় দুর্গ হিসেবে পরিচিত সিলেটে নেতাকর্মীদের মাঝে চাপা ক্ষোভ ও অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
সিলেট-৩ আসনে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলেন মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও গেল সিটি নির্বাচনে মেয়র পদে প্রায় ৬০ হাজার ভোট পেয়ে চমক দেখানো নজরুল ইসলাম বাবুল। কিন্তু তাকে সিলেট-৩ আসনের পরিবর্তে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সিলেট-১ আসনে। অথচ এই আসনে তিনি দলীয় মনোনয়নই চাননি।
সিলেট-৩ এর পরিবর্তে সিলেট-১ আসনে মনোনয়ন দেওয়ায় ক্ষুব্ধ বাবুল নির্বাচন না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বুধবার পর্যন্ত তিনি নির্বাচন অফিস থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেননি।
বাবুল জানান, সিলেট-৩ আসনে তার আদি নিবাস। এই আসনভূক্ত মানুষের সাথে পারিবারিক ও ব্যবসায়ীক কারণে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। এলাকার মানুষও তাকে নির্বাচন করার জন্য অনুপ্রাণিত করছিলেন। ভোটারদের চাপেই তিনি প্রার্থী হতে দলীয় মনোনয়ন নিয়েছিলেন। কিন্তু দল তাকে সিলেট-১ আসনের মনোনয়ন চাপিয়ে দিয়েছেন।
ওই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আবদুল মোমেন তার অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন। এছাড়া সিলেট-১ আসনে সংসদ নির্বাচন করার মতো তার পূর্ব প্রস্তুতিও নেই। তাই তিনি নির্বাচন করতে নারাজ। সিলেট-৩ আসনের পরিবর্তে সিলেট-১ আসনে তাকে মনোনয়ন দিয়ে দল তার প্রতি অবিচার করেছে এবং অপরিপক্কতার পরিচয় দিয়েছে বলে দাবি করেন বাবুল।
এদিকে, দলীয় সূত্র জানায়- সিলেট-১, ৫ ও ৬ আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন সংগ্রহ করেছিলেন চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মো. সেলিম উদ্দিন। শেষ পর্যন্ত তাকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে সিলেট-৬ আসনে। বাবুল বলেন, যেহেতু সেলিম উদ্দিন সিলেট-৬ এর পাশপাশি সিলেট-১ আসনেও নির্বাচন করার অভিপ্রায়ে দলীয় মনোনয়ন কিনেছিলেন। তাই তাকেই এই আসনে প্রার্থী করা যেত। কিন্তু দল তা না করে আমার উপর মনোনয়ন চাপিয়েছে।
এছাড়া, সিলেট-১ আসন থেকে দলীয় মনোনয়নপ্রত্যাশী ছিলেন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী জাতীয় পার্টি নেতা মাহবুবুর রহমান। কিন্তু রওশনপন্থী নেতা হওয়ায় তাকে দলীয় মনোনয়নপত্রই কিনতে দেওয়া হয়নি বলে দলের একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এদিকে, সিলেট-২ আসনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে নাম ঘোষণা করা হয়েছিল দুইবারের সাবেক সংসদ সদস্য মকসুদ ইবনে আজিজ লামার। কিন্তু প্রার্থী ঘোষণার ২৪ ঘন্টার মধ্যে আসনটিতে প্রার্থী বদল হয়েছে। বিকেলে মকসুদ ইবনে আজিজ লামার নাম ঘোষণার পর রাতেই প্রার্থী বদল করে ওই আসনে সাবেক সংসদ সদস্য ইয়াহইয়া চৌধুরীকে প্রার্থী ঘোষণা করা হয়। এ নিয়েও দলের মধ্যে অসন্তোষ বিরাজ করছে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন