ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন পূরণ শেষে এবার বাংলাদেশ পরের ধাপে যাওয়ার অপেক্ষা করছে বলে জানিয়েছেন স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা সজীব ওয়াজেদ। সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) অনুষ্ঠান ‘লেটস টক’-এর ৫১তম পর্বে তরুণদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন শারমিন চৌধুরী।
অনুষ্ঠানটি গতকাল শুক্রবার রাতে কালের কণ্ঠসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও বেসরকারি টেলিভিশনে প্রচারিত হয়।
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পেছনে সবচেয়ে বলিষ্ঠ ভূমিকা রেখেছেন সজীব ওয়াজেদ। অনুষ্ঠানে তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, স্মার্ট বাংলাদেশ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের পার্থক্য নিয়ে। আরো প্রশ্ন ছিল, স্মার্ট বাংলাদেশ ও ডিজিটাল বাংলাদেশের পার্থক্য কী? তরুণদের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কী ভূমিকা রাখবে ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশ? স্মার্ট বাংলাদেশ থেকে কী পাবে তরুণরা?
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘এখন আমরা ডিজিটাইজড করা নিয়ে চিন্তা করছি না। বরং ভাবছি কোন কোন ক্ষেত্রকে আমরা পরিবর্তন করব, আরো আধুনিকায়ন করব।
যেমন, আমরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, সংক্ষেপে-এআই) বিশেষজ্ঞ তৈরির লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এআই তৈরি করব, যা নিজেদের কাজে ব্যবহার করব। সেটা সরকারি কাজে কিংবা শিক্ষার ক্ষেত্রে।’
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘যখন শুরু করি, বাংলাদেশে ডিজিটাল বলতে কিছুই ছিল না।
ইন্টারনেটই ছিল না। মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ছিল না। সরকারি কোনো কিছুই ডিজিটাল ছিল না। ডিজিটালের টার্গেট ছিল, প্রথমে বাংলাদেশকে ডিজিটাল বানাতে হবে। সেটা আমরা করে ফেলেছি।
’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত তরুণদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘এখন সবার হাতেই দেশজুড়ে ফোরজি ইন্টারনেট আছে। প্রতিটি ইউনিয়নে এখন ডিজিটাল সার্ভিস সেন্টার রয়েছে। এখানে আপনাদের সবার হাতেই স্মার্ট ফোন রয়েছে। ডিজিটাল হয়ে গেছে। এরপর আমাদের পরবর্তী ধাপে যাওয়ার পালা।’
সজীব ওয়াজেদ বলেন, ‘এআই বা মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইন নিয়ে আমরা গবেষণা শুরু করব। আগে ইলেকট্রনিকস যেগুলো বাংলাদেশ আমদানি করত, যেমন মাদারবোর্ড, স্মার্ট ফোন বা এ জাতীয় পণ্যগুলো বাংলাদেশ রপ্তানি করবে। এটাই হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ।’
বিদেশ থেকে প্রযুক্তি পণ্য আমদানি করার বদলে নিজেদের দেশে তৈরি করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে বলে জানান সজীব ওয়াজেদ। তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এখন চেষ্টা করে এখনই করে ফেলব তা নয়, কিন্তু এখন থেকে অন্ততপক্ষে চেষ্টাটা শুরু করলে হয়তো ২০ বছর পর আমরা মাইক্রোপ্রসেসর তৈরি করতে পারব। এটা আমাদের শুরু করতে হবে এবং এটা আমরা শুরু করেছি।’
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার চ্যালেঞ্জ নিয়ে করা এক প্রশ্নের উত্তরে সজীব ওয়াজেদ বলেন, এআই কিন্তু এখনো দুনিয়া দখল করার পর্যায়ে যায়নি। একেবারেই শেখার একটা পর্যায়ে রয়েছে।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক বিশেষজ্ঞের থেকে এআই নিয়ে আমার মতামত একটু ভিন্ন। আমি মনে করি এআই শুধু একটি উপাদান। এটি আমাদের চাকরি, কাজকর্ম সব দখল করে নেবে এমন নয়। এটা আমাদের নিজেদের জীবনে, নিজেদের টেকনোলজিকে উন্নত করার জন্য ব্যবহূত একটি উপাদান।
দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মানোন্নয়নে গবেষণার বিকল্প নেই বলে জানান সজীব ওয়াজেদ। তিনি বলেন, ‘বিশেষত আইসিটি খাতে আমাদের প্রত্যাশিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর গবেষণায় আরো গুরুত্ব দিতে হবে।’
এদিকে দুর্নীতি বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সজীব ওয়াজেদ বলেন, বিএনপি-জামায়াত সরকারের সময় বাংলাদেশ টানা পাঁচ বছর দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। দুর্নীতি মোকাবেলায় আওয়ামী লীগ অনেক সাফল্য দেখিয়েছে। আগের চেয়ে দুর্নীতি কমেছে। আগের মতো দুর্নীতি থাকলে এত বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন সম্ভব হতো না।
দুর্নীতিবিরোধী বিচারের সাজা পাওয়া ব্যক্তিদের নিয়ে বিভিন্ন মহলের বক্তব্যের দিকে ইঙ্গিত করে সজীব ওয়াজেদ বলেন, দুর্নীতির বিচারকেও মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে দেখা হয়।
তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রসহ সব জায়গায় দুর্নীতি আছে। বাংলাদেশে যে দুর্নীতি আছে তা তিনি অস্বীকার করবেন না। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে দুর্নীতি দমন কমিশনকে আরো শক্তিশালী করবে।
সজীব ওয়াজেদ বিএনপিকে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি দল বলেও অভিহিত করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, পরিবারের সদস্যরা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে থাকলেও তাদের একটা হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ আছে। আর সেখানে সব সময়ই তাদের যোগাযোগ হয়।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন