পরিবারই সুখ উৎপাদনের কারখানা

gbn

পদে পদে দোষ তালাশ করে কারো মনের নাগাল পাওয়া যায় না।

রাজু আহমেদ।  কলামিস্ট। |জিবি নিউজ ||

মাঝে মাঝে ঘরে একটু প্রশংসা না করলে পরের প্রশংসায় ঝুঁকে গেলে কপালে দুঃখ আছে! খাবারে লবণ কম হয়েছে বলার চেয়েও খাবার খুব সুস্বাদু হয়েছে বলাটা জরুরি। বিশ্বাসের জায়গাকে আরও মজবুত করে  সম্পর্কের যত্ন করা আবশ্যক। নাটক-সিনেমার নায়িকাদের চেয়েও বেশি সুন্দরী যে আপনার আশেপাশে থাকে সেটা তাকে স্মরণ করিয়ে না দিলে সুখ আসবে কোথা থেকে? প্রশংসা করতেই হবে এবং কাজ-মতের স্বীকৃতি দিতে হবে। বারবার ধন্যবাদ দেয়া, তাকে ছাড়া আপনার অপূর্ণতা প্রকাশ করা, তার কেয়ারিং মনোভাবকে শ্রদ্ধা-শুভেচ্ছা জানানো-এসব সুন্দর সম্পর্কের অলংকার। যতবেশি অলঙ্কার পড়াবেন সৌন্দর্য ততবেশি বৃদ্ধি পাবে।  

 

বাহিরে সুখ উৎপাদনের কারখানা নাই। কবুল কবুলে যে সম্পর্কের গোড়াপত্তন তাকে অলংকৃত করতে না পারলে চির অসুখে পুড়তে হবে। দু'জনে দু'দন্ড ঘুরতে যাওয়া, চার চোখে জ্যোছনা দেখা, দু'দেহে ভিজতে পারার মধ্যেই সুখ বাস করে।  সুখ-শান্তির জন্য নরম বিছানা আর দামী গহনার দরকার পড়ে না।  তাঁর প্রশংসায়, তাঁর মতের প্রতি সম্মানে, তাঁর পছন্দ-অপছন্দের মূল্য দেয়ার মাধ্যমে সুখের জন্ম দেয়া যায়। কপালে ভরসার হাত রাখা, সম্পর্কে বিশ্বাসের পারদ ঠিক থাকার মধ্যেই প্রশান্তি বসবাস করে। কাউকে খোঁটা দিয়ে, কারো অপূর্ণতায় টোকা দিয়ে, ইচ্ছে হলে ধোঁকা দিয়ে সুখের তালাশ কল্পনা বিলাসের মতোই অলীক। 

 

সম্পর্কে ছাড় দেয়ার মানসিকতা থাকতেই হবে। এটা চোর-পুলিশের ক্ষেত্র নয়। ভুলের ক্ষমা রাখতেই হবে। পদে পদে দোষ তালাশ করে কারো মনের নাগাল পাওয়া যায় না।  দু'টো ফুল, এক ঠোঙ্গা বাদাম, এক মুঠো চুড়ি জোগাতে তো কাউকে রাজ্য চুরি করা লাগে না। তবে মন চুরি করতে একটু যত্নবান হতেই হয়। প্রশংসা করতে হয়। খবরদার, উল্টাপাল্টা কিছুর সাথে তুলনা করে প্রশংসা করে সর্বনাশ ঘটাবেন না! প্রয়োজনে চুপ থাকাও উত্তম! কিন্তু পাশের বাসার ভাবীর মতো তুমি সুন্দর-এমন আহ্লাদিত আহাম্মকিতে নাম লেখাবেন না!  

 

যে হাটেই বাজার করেন বেলা শেষে ঘরে আপনাকে ফিরতেই হবে। কাজেই সম্পর্ক মধুর করার জন্য বঁধুর আব্দার শুনতে শুরু করেন! যে প্রশংসা আপনার হৃদয়কে প্রশান্ত করে সেই প্রশংসা অপরকেও মুগ্ধ করে। সম্পর্ক প্রশংসার লালন ভূমি হোক। কার্পণ্য না করে বেশি বেশি প্রশংসা করুন। কৃতজ্ঞতা জানান। অগোছালো একটা মানুষকে, গোটা সংসারকে,সন্তানদেরকে যে পরম যত্নে গুছিয়ে রাখে সে নিশ্চয়ই কিছু যত্ন পেতেই পারে। টাকা দিয়ে সব খায়েশ মেটানোর সাধ্য নাই। তার মতে সরাসরি অমত না করে যুক্তিতে খণ্ডন করুন।  যা বন্টন করা না যায় তা নিজেই মিটিয়ে ফেলুন। 

 

প্রশংসায় কৃপণ হলেও ভাববেন না যে রাজ্য তো আপনার দখল করাই, ও আর কে দখল করবে! আপনার হৃদয়ের মরূভূমিতে তোষ না পেয়ে পরের প্রশংসায় যদি গলো যায় তবে জীবনে দুর্গতির শেষ থাকবে না।  জিহ্বার বিষে ক্ষতবিক্ষত করে দেবে। সুখের অনু-কণারও দেখা মিলবে না। অথচ একটু সচেতন হলেই, তাকে বাড়তি কেয়ার করলেই একটু-আধটু স্বর্গের দেখা এখানেও মিলত। লক্ষ্মী পায়ে ঠেলার মত ভুল করে রাবণের চিতায় ডুকবেন না যেনো! সময় দিন। সুখ নিন!  সুখের ফেরিওয়ালা হোন। সুখের কারখানা তো আপনার গৃহে! মনের থেকে সন্ন্যাস না নিয়ে বারিষের স্পর্শে মোহিত থাকুন। কফির মগে মুখোমুখি বসুন। তার প্রশংসায় হাসুন। সম্পর্কের মাঝে বাঁচুন। উচ্ছ্বসিত উচ্ছলতায় জীবন ভরিয়ে রাখুন।

 

 

gbn

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন