জিবিনিউজ 24 ডেস্ক //
ফ্রান্সে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। এ কারণে দ্বিতীয় দফায় লকডাউন ঘোষণা করেছে দেশটি। স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩০ অক্টোবর) থেকে এ লকডাউন কার্যকর হবে বলে ঘোষণা দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ। এ লকডাউন অন্তত নভেম্বরের শেষ পর্যন্ত বলবৎ থাকবে বলেও জানান তিনি।
সংবাদমাধ্যম বিবিসি বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে।
প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁ জানিয়েছেন, নতুন বিধি-নিষেধের আওতায় শুক্রবার থেকে লোকজন শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় কাজে বা ওষুধপত্র কেনার জন্য বাড়ির বাইরে যাওয়ার অনুমতি পাবেন।
অপ্রয়োজনীয় ব্যবসা-বাণিজ্য যেমন, রেস্টুরেন্ট এবং বার বন্ধ রাখা হবে। তবে স্কুল এবং বিভিন্ন কারখানা চালু থাকে বলে জানানো হয়েছে।
ফ্রান্সের নতুন বিধি-নিষেধের মধ্যে রয়েছে, কর্মক্ষেত্র, স্কুল, চিকিৎসাসংক্রান্ত কাজ ও এক ঘণ্টা শরীরচর্চা করার জন্য বাইরে বের হওয়া যাবে, বাইরে বের হলে অবশ্যই অনুমতিপত্র দেখাতে হবে, এক অঞ্চলের মানুষ আরেক অঞ্চলে যেতে পারবে না, পানশালা, রেস্তোরাঁসহ বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকবে, সুযোগ থাকলে অবশ্যই ঘরে বসে কাজ করতে হবে, বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত ক্লাস অনলাইনে করতে হবে, আন্তর্জাতিক সীমানা বন্ধ থাকবে।
এ ছাড়াও বলা হয়েছে, স্কুল ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলা থাকবে, বেশিরভাগ সরকারি পরিষেবা সংক্রান্ত কাজ চলবে, খামার কারখানা ও নির্মাণকাজ চলমান থাকবে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের সীমানাগুলো খোলা থাকবে, বাইরের দেশে ভ্রমণে থাকা ফ্রান্সের নাগরিকরা ফিরতে পারবেন এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার কার্যক্রম চলবে।
লকডাউন ঘোষণার সময় ম্যাক্রোঁ বলেন, করোনা সংক্রমণ যে হারে বাড়ছে, তা দেখে আমরা অবাক হয়েছি। এটি একটি কঠিন সময়। আমাদের অবশ্যই ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এই অগ্নিপরীক্ষা কাটিয়ে ওঠার জন্য নিজেদের প্রতি, আপনাদের প্রতি, আমাদের সামর্থ্যের প্রতি আমার ভরসা রয়েছে।
গত এপ্রিল থেকেই ফ্রান্সে দৈনিক সংক্রমণ ও মৃত্যু বাড়তে শুরু করেছে। বুধবার দেশটিতে নতুন করে ৩০ হাজারের বেশি সংক্রমণ নিশ্চিত হয়েছে। তবে এবারের লকডাউন প্রথম দফার মতো কঠোর হবে না বলে জানানো হয়েছে।
ওয়ার্ল্ডোমিটারের পরিসংখ্যান বলছে, ফ্রান্সে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ১২ লাখ ৩৫ হাজার ১৩২। এর মধ্যে মারা গেছে ৩৫ হাজার ৭৮৫ জন।
এদিকে, জার্মানিতেও জরুরি ভিত্তিতে লকডাউন জারি করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। দেশটিতে রেস্টুরেন্ট-বার, জিম এবং থিয়েটার বন্ধ রাখা হবে।
পুরো ইউরোপজুড়েই করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হয়েছে। যুক্তরাজ্যে গত বুধবার নতুন করে আক্রান্ত হয়েছে আরো ২৪ হাজার ৭০১ জন। অপরদিকে মারা গেছে ৩১০ জন।
প্রথম দফার চেয়ে দ্বিতীয় দফায় করোনার প্রকোপ বেশি। অবশ্য এখন নমুনা পরীক্ষাও হচ্ছে বেশি। এ দিকে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে জারি হয়েছে রাত্রীকালীন কারফিউ।
বড়দিনে পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে মানুষের দেখা করতে দেয়ার ব্যাপারে জার্মান সরকার আগ্রহী হলেও দেশটিতে রেকর্ড সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে।
দ্বিতীয় দফায় মহামারি করোনা সংক্রমণ নিয়ে ভয়াবহ বিপর্যয়ের মধ্যে পড়েছে ফ্রান্স সরকার। প্রতিদিন অর্ধ লক্ষাধিক নতুন রোগী শনাক্ত হচ্ছে। এই সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন