শুক্রবার সকালে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি মাথায় নিয়ে ভোরের আলো ফোটার আগেই সিলেটের ঐতিহ্যবাহী কিন ব্রিজ এলাকায় হাজারেরও বেশি দৌড়বিদের উপস্থিতি।বৃষ্টির কোন বাধাই যেন মানছেন না দৌড়বিদরা। ভোর ঠিক ছয়টায় এক বাসিতে শুরু হাফ ম্যারাথন।
সিলেট শহর হয়ে চলে যায় সবুজ শ্যামল চা বাগান ঘেরা সিলেট বিমানবন্দর সড়কে।চা বাগানের মাঝ দিয়ে শত শত মানুষের ছুটে চলা।১২ বছরের শিশু থেকে ৭০ বছরের বৃদ্ধ অংশ নেন এই ম্যারাথনে। সিলেট রানার্স কমিউনিটি আয়োজিত ইউনিমার্ট সিলেট হাফ ম্যারাথনের ২১ এবং ১০ কিলোমিটারে ম্যারাথন শেষ হয় সিলেট ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এসে। প্রকৃতি কন্যা সিলেটে হাফ ম্যারাথনে অংশ নিতে পেরে আনন্দ প্রকাশ করেন অনেকে।
স্বামী সন্তান নিয়ে ম্যারাথনে অংশ নিতে ঢাকা থেকে সিলেটে এসেছেন মিতা মাহফুজা।
তিনি বলেন, সিলেট আমার অনেক পছন্দের জায়গা সবুজ চা বাগানের মাঝ দিয়ে যে রাস্তাটা সেখানে দৌড়াতে আমার বেশ ভালো লেগেছে। তবে এবার শুক্রবার সকালে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি যেন এক অন্যরকম মাত্রা যোগ করেছে, সকালটা অনেক সুন্দর ছিলো। হাঁটা এবং দৌড়ানো আমার খুব পছন্দের, এটা আমাকে শারীরিক এবং মানসিকভাবে সুস্থ রাখে।
সর্বমোট ১২০০ জন দৌড়বিদের সমন্বয়ে ২১.১ কিলোমিটার ও ১০ কিলোমিটার দুই ক্যাটাগরিতে আয়োজিত হয় ম্যারাথন। ম্যারাথনে অংশ নিয়ে দৌড়বিদরা মনে করেন খেলাধুলার মাধ্যমে সুন্দর এবং সুস্থ সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।
সিলেটের ঐতিহ্যবাহী মণিপুরী হস্তশিল্পকে মূল থিম করে শুক্রবার সিলেটে অনুষ্ঠিত হয় হাফ ম্যারাথন। সিলেট রানার্স কমিউনিটি আয়োজিত এই ম্যারাথনে অংশ নেন দেশ-বিদেশের প্রায় ১২০০শ দৌড়বিদ।
সিলেট রানার্স কমিউনিটির এডমিন ডাঃ ওরাকাতুল জান্নাত বলেন,আমরা সব সময় চাই আমাদের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে এবং রক্ষা করতে । ২০২২ সালে সিলেট রানার্স কমিউনিটি আয়োজিত ইউনিমার্ট সিলেট হাফ ম্যারাথনের মূল থিম ছিলো সিলেটের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটি। গত বছর আমরা চেয়েছিলাম ম্যারাথনের মাধ্যমে দেশ ও বিশ্ববাসীর কাছে আমাদের ঐতিহ্যবাহী শীতল পাটিকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার।
এবার আমরা সিলেটের মনিপুরী হস্তশিল্পকে আরেকটু সামনে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছি। মনিপুরী হস্তশিল্প আমাদের সিলেটের একটা ঐতিহ্য যা যথাযথ প্রচার এবং প্রসার না হওয়ার কারণে সেভাবে বিকশিত হচ্ছেনা।তাই আমরা চেষ্টা করছি আমাদের ঐতিহ্য মনিপুরী হস্তশিল্পকে দেশ এবং দেশের বাইরে মানুষের কাছে পরিচয়ে করিয়ে দেয়ার।
ম্যারাথনের ২১ কিলোমিটার এবং ১০ কিলোমিটারে সমাপ্তি স্থল ছিল সিলেটের ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম সেখানে বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন শাহীন মাহমুদ,চিফ অপারেশন অফিসার, ইউনিমার্ট লিমিটেড, এইচ ইউ এম মেহেদি সাজ্জাদ হেড অফ মার্কেটিং ইউনিমার্ট লিমিটেড এবং আয়োজক কমিটির সদস্য, সিলেট রানার্স কমিউনিটির এডমিন, সৈয়দ ফজলুর রহিম সোহাগ, মো. হাসান আহমেদ, মোহাম্মদ আবু সালেহ, ফয়েজ জামান, মাহমুদুর রহমান মিতুল, কামরুল ইসলাম।
১০ কিলোমিটারে পুরুষ বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন এম ডি সাখাওয়তা হোসেন হৃদয়, ২য় দ্বীপ তালুকদার, ৩য় রহিম উদ্দীন।
নারী বিভাগে প্রথম স্থান অর্জন করেন, আফসানা হালিমা, ২য় রাশিদা আক্তার এবং ৩য় শাহ তামান্না সিদ্দীকা।
২১.১ কিলোমিটারে পুরুষ বিভাগের প্রথম স্থান অর্জন করেন গোলাম রাহাত তোফায়েল।
২য় এম ডি ইমরান হোসেন,৩য় আশরাফুল আলম।
২১ কিলোমিটার নারী বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন মভি সূত্রধর এবং রানার্স আপ হয়েছেন তাসিনিয়া তিথি।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন