মোঃ নাসির, নিউ জার্সি, আমেরিকা থেকে :আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ২০২০ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে ৩ নভেম্বর, মঙ্গলবার। বছর, মাস, সপ্তাহ শেষ হয়ে নির্বাচন এখন দরজায় কড়া নাড়ছে। ট্র্যাডিশন অনুযায়ী এবারও লড়াই হবে লাল-নীলের। অর্থাৎ রিপাবলিকান পার্টি এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির। রিপাবলিকান পার্টিই প্রথম রাজনৈতিক দল আমেরিকায়। তাইতো তাদের গ্র্যান্ডওল্ড পার্টি বা জিওপি বলা হয়। এবার লড়াই হচ্ছে রিপাবলিকান পার্টির প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প ও ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থী জো বাইডেনের মধ্যে। দুজনই অভিজ্ঞ। মি. ট্রাম্প এখনো প্রেসিডেন্ট। এবার তার দ্বিতীয় দফা। মি. বাইডেন প্রেসিডেন্ট ওবামার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন। রিপাবলিকান পার্টিকে সবাই রক্ষণশীলদের দল বলেই জানে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে উদার নৈতিক দল বলে মনে করা হয়। এবার এক কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে আমেরিকার নির্বাচন হতে চলেছে। আমেরিকার ইতিহাসে এমন পরিস্থিতির নির্বাচন কখনো হয়নি। বিশ্বব্যাপী চলছে করোনা মহামারি। সমগ্র বিশ্বে মৃত্যু ১২ লাখ ছাড়াতে চলেছে। তার মধ্যে এক আমেরিকাতেই এ পর্যন্ত মারা গেছে আড়াই লাখের মতো মানুষ। সেই পরিস্থিতিতে ইলেকটোরাল ভোট দখলের লড়াই চলছে। ভোট দেবেন আমেরিকার ২৪ কোটি নাগরিক। তার মধ্যে যিনি ২৭০ ইলেকটোরাল ভোট পাবেন, তিনিই হবেন বিশ্বের মহাশক্তিধর দেশ আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। প্রশ্ন হলো কার দখলে যাচ্ছে হোয়াইট হাউসÑট্রাম্প নাকি বাইডেন। মহাগুরুত্বপূর্ণ এই প্রশ্নের উত্তর পেতে হলে অপেক্ষা করতে হবে ৩ নভেম্বর-পরবর্তী ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত। আমেরিকার পপুলার ভোট গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু শেষ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন ইলেকটোরাল ভোটের হিসাবে। সাম্প্রতিককালের ইতিহাসে রিপাবলিকান দলেরই দুই প্রার্থী ডব্লিউ বুশ জুনিয়র এবং বর্তমান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পপুলার ভোটের বিশাল ব্যবধানে পিছিয়ে থেকে ইলেকটোরাল ভোটে জয়ী হন। জয়ের প্রত্যাশা নিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী মাইক পেন্স এবং জো বাইডেন ও তার ভাইস প্রেসিডেন্ট প্রার্থী সিনেটর কমলা হ্যারিস শেষ মুহূর্তেও প্রচারণায় ব্যস্ত রয়েছেন আমেরিকাকে পুনরায় ‘গ্রেট’ করে তোলার এবং বর্তমান পরিস্থিতির পরিবর্তন ঘটিয়ে আমেরিকার মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার সেøাগান নিয়ে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের মূল ইস্যু বাইডেন নির্বাচিত হলে জনগণের গর্ব রক্ষার অধিকার হারাবে। তেল-গ্যাস শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে। আমেরিকার জনগণের মৌলিক অধিকার কর্মসংস্থান, বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষা বহিরাগতরা হরণ করবে। জো বাইডেনের প্রচারের মূল কথা ট্রাম্প প্রশাসন সাধারণ আমেরিকানদের চাহিদার প্রতি দৃষ্টি দিচ্ছে না। রাজনীতিকে ট্রাম্প ক্ষমতাকেন্দ্রিক করে তুলছেন। আমেরিকা স্বাধীনতা অর্জন করেছিল যেসব মানবিক মূল্যবোধ এবং আদর্শের ওপর ভিত্তি করে, তা সব হারিয়ে যাচ্ছে। ইমিগ্র্যান্টদের অধিকার অস্বীকার করে যাচ্ছেন ট্রাম্প। তিনি ধনীদের প্রেসিডেন্ট। বিশ্বে আমেরিকার মর্যাদা ও সমীহের স্থান হারিয়ে যাচ্ছে। করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ট্রাম্প প্রশাসন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। করোনায় হাজার হাজার আমেরিকানের মৃত্যুর জন্য ট্রাম্পকে দায়ী করেছে বাইডেনের ক্যাম্পেইন টিম। ওবামাকেয়ার অস্বীকার করে ট্রাম্পকেয়ার চালু করে প্রেসিডেন্ট সাধারণ মানুষের চিকিৎসার সুযোগ সংকুচিত করতে চাইছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প নির্বাচিত হলে ২০২৩ সালের মধ্যে সোশ্যাল সিকিউরিটি বিভাগকে দেউলিয়া ঘোষণা করতে হবে। এদিকে প্রেসিডেন্সিয়াল ডিবেটসহ সব জরিপেই জো বাইডেন এগিয়ে থাকলেও অনেকে বিজয় নিয়ে নিশ্চিত থাকতে পারছেন না। আশঙ্কা রয়েছে জো বাইডেনের বিজয় হাইজ্যাক হয়ে যেতে পারে। নির্বাচনী প্রচারণায় সে রকম আভাস রয়েছে বলে বাইডেনের পক্ষ শঙ্কা প্রকাশ করে যাচ্ছে। ঐতিহ্য ম্লান করে দিয়ে এবার প্রচারণায় কাদা ছোড়াছুড়িও লক্ষ করেছে জনগণ। এবার কৃষ্ণাঙ্গ ও স্প্যানিশ ভোটার খুব গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এবার আমেরিকার নির্বাচনে বাঙালি ভোটারদেরও অতীতের চেয়ে অনেক বেশি সোচ্চার লক্ষ করা যাচ্ছে। করোনাভাইরাস সত্ত্বেও অন্যদের মতো বাঙালিদেরও সক্রিয় দেখা যাচ্ছে নির্বাচনে। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির পক্ষে বাঙালিদের গরিষ্ঠ অংশ দেখা গেলেও রিপাবলিকানদের পক্ষেও অনেক বাঙালিকে সোচ্চার দেখা যাচ্ছে। এবার স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচনে বাঙালি অনেক প্রার্থীও রয়েছেন। আসলে নির্বাচন বলে কথা। তাই নির্বাচনে শেষ হাসি কে হাসবেন, তার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত আবেগ আর শঙ্কা নিয়ে কেবল অপেক্ষাই করে যেতে হবে। তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, এবারের নির্বাচনের ফলাফলের ওপর আমেরিকার ভবিষ্যৎ অনেকটাই নির্ভর করছে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচন ছাড়াও ৩ নভেম্বর ৩৫টি সিনেট আসনে ও ৪৩৫টি কংগ্রেসনাল আসনে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। সেই সাথে লোকাল নির্বাচনও অনুষ্ঠিত হচ্ছে। বর্তমানে সিনেট আসনের মধ্যে রিপাবলিকানদের দখলে ৫৩টি, ডেমোক্র্যাটদের দখলে রয়েছে ৪৫টি, ২টিতে স্বতন্ত্র। অন্যদিকে কংগ্রেসে ৪৩৫টি আসনের মধ্যে ডেমোক্র্যাটদের দখলে ২৩২টি, রিপাবলিকানদের দখলে ১৯৭টি, লিবারেল পার্টির দখলে ১টি এবং ৫টি আসন খালি রয়েছে। আমেরিকাজুড়ে নির্বাচন হলেও মূলত কয়েকটি স্টেটের ফলাফলে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এসব স্টেটকে সুইং স্টেট বলা হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আরেক শক্তি হচ্ছে ইলেকটোরাল ভোট। পপুলার ভোটে কোনো প্রার্থী বেশি ভোট ফেলেও যদি ইলেকটোরাল ভোট কম পান, তাহলে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারেন না। যিনি ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে কমপক্ষে ২৭০টি ভোট পাবেন, তিনিই হবেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। আমেরিকা এমন একটি দেশ, যা দুভাগে বিভক্ত। ৫০টি স্টেটের মধ্যে কোনোটিকে বলা হয় রেড স্টেট (রিপাবলিকান) আবার কোনো কোনো স্টেটকে বলা হয় ব্লু স্টেট (ডেমোক্র্যাটিক)। অধিকাংশ স্টেটের ফলাফল নিয়ে সবকিছুই আগাম বলা যায়। তবে নির্বাচনের ব্যাটলগ্রাউন্ট হয়ে ওঠে বা ফলাফলের নিয়ামক বা জয়-পরাজয় নির্ভর করে সুইং স্টেটগুলোর ওপর। এই সুইং স্টেটগুলোও একেক সময় একেক রূপ ধারণ করে। সুইং স্টেটগুলো নিজেরাই সুইং করে। কখনো এই সুইং স্টেটগুলো যায় রিপাবলিকানদের পক্ষে আবার কখনো যায় ডেমোক্র্যাটদের পক্ষে। যার পার্টি অধিকাংশ সুইং স্টেটের ফলাফলে জয়লাভ করে, তারাই আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন স্টেটে আগাম ভোট এবং মেইলিং ভোট শুরু হয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, আমেরিকার ১১২ বছরের ইতিহাসে সর্বাধিক মানুষ আগাম ভোট দিচ্ছেন, সেই সংখ্যা প্রায় ১০ কোটি হতে পারে। ন্যাশনাল জরিপে এখনো জো বাইডেন ৯.৪ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। এবারের নির্বাচনেও সুইং স্টেটগুলোর ওপর নির্ভর করছে কে হচ্ছেন আমেরিকার পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। বিভিন্ন মিডিয়া এবার সুইং স্টেট হিসেবে ১৩টি স্টেটকে চিহ্নিত করেছে। এই সুইং স্টেটগুলো হচ্ছে অ্যারিজোনা, ফ্লোরিডা, জর্জিয়া, আইওয়াহ, মিশিগান, মিনিসোটা, নাভাদা, নিউ হ্যাম্পশায়ার, নর্থ ক্যারোলাইনা, ওহাইও, পেনসিলভানিয়া, টেক্সাস ও উইসকনসিন। এই ১৩টি সুইং স্টেটের মধ্যে এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জনমত জরিপে ১০টিতে এগিয়ে রয়েছেন ডেমোক্র্যাটিক দলের প্রার্থী সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মাত্র ৩টি স্টেটে এগিয়ে রয়েছেন বর্তমান প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প। জরিপে দেখা যাচ্ছে, ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যেসব স্টেটে জয়লাভ করেছিলেন, এবার সেসব স্টেটে তিনি পরাজিত হচ্ছেন। সেই হিসাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এগিয়ে রয়েছেন জো বাইডেন। তবে এসব সুইং স্টেটের জরিপ পরিবর্তনও হতে পারে। স্টেট অনুযায়ী অবস্থান অ্যারিজোনা : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১১। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এই স্টেট জয়লাভ করেছিলেন। ২০০০ সালের নির্বাচনে জর্জ বুশ জয়ী হয়েছিলেন। এই স্টেটে বিল ক্লিনটন ১৯৯৬ সালে এবং ওবামা ২০০৮ সালে জয়লাভ করেছিলেন। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ২০১৬ সালে জয়লাভ করেছিলেন ৩.৫ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে। ট্রাম্প প্রায় ৯০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছিলেন। এবার এই স্টেটে এখন পর্যন্ত জো বাইডেন ৩.৫ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। এই স্টেটে বাইডেনের ভোট ৪৯.২ শতাংশ আর ট্রাম্পের ভোটের পরিমাণ ৪৬.৯ শতাংশ। জর্জিয়া : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১৬। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই স্টেটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয়লাভ করেছিলেন। এই স্টেটে ১৯৯২ সালে প্রেসিডেন্ট ক্লিনটন জয়লাভ করেছিলেন। এই স্টেটে বর্তমানে জো বাইডেন প্রায় ১ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। জো বাইডেনের ভোটের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৪৭.৬ শতাংশ আর প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৪৭.২ শতাংশ। ২০১৬ সালের নির্বাচনে ট্রাম্প এগিয়ে ছিলেন ৫.১ শতাংশে। মিশিগান : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১৬। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয়লাভ করেছিলেন। বর্তমানে এই স্টেটে জো বাইডেন প্রায় ৮ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। বাইডেনের ভোটের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৫০.৯ শতাংশ, অন্যদিকে ট্রাম্পের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৪২.৫ শতাংশ। এই স্টেটে ২০১৬ সালে ট্রাম্প এগিয়ে ছিলেন ০.২ শতাংশ ব্যবধানে। মিনিসোটা : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১০। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই স্টেটে হিলারি ক্লিনটন জয়লাভ করেছিলেন। তিনি প্রায় ৪০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছিলেন। বর্তমানে এই স্টেটে বাইডেন প্রায় ৮ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। পরিসংখ্যানে বাইডেনের ভোটের পরিমাণ ৫০.৭ শতাংশ এবং ট্রাম্পের ভোটের পরিসংখ্যান ৪২.৭ শতাংশ। নর্থ ক্যারোলাইনা : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১৫। ২০১৬ সালের নির্বাচনে নর্থ ক্যারোলাইনায় জয়লাভ করেছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তিনি এগিয়েছিলেন ৩.৬ শতাংশ ব্যবধানে। ২০০৮ সালে এখানে ওবামা জয়ী হয়েছিলেন। বর্তমানে জো বাইডেনের ভোটের পরিসংখ্যান ৪৯.২ শতাংশ, অন্যদিকে ট্রাম্পের ভোটের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৪৬.৭ শতাংশ। ওহাইও : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১৮। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয়লাভ করেছিলেন। ট্রাম্প ৮.১ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে ছিলেন। বর্তমান নির্বাচনেও এই স্টেটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এগিয়ে রয়েছেন প্রায় ৩ শতাংশ ব্যবধানে। তার ভোটের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৪৮ শতাংশ এবং বাইডেনের ভোটের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৪৬.৫ শতাংশ। এই স্টেটে বিল ক্লিনটন ১৯৯২ ও ১৯৯৬ সালে এবং ওবামা ২০১২ সালে জয়ী হয়েছিলেন। একটি কথা প্রচলিত রয়েছে, এই স্টেটে যিনি জয়লাভ করেন, তিনিই প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। পেনসিলভানিয়া : এই স্টেটের ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ২০। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয়লাভ করেছিলেন ০.৭ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে। তিনি মাত্র ১০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন। বর্তমানে বাইডেন ৬.৩ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। পরিসংখ্যানে দেখা যাচ্ছে, বাইডেনের ভোট ৫০.২ শতাংশ আর ট্রাম্পের ভোটের পরিসংখ্যান হচ্ছে ৪৫.১ শতাংশ। উইসকনসিন : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ১০। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয়ী হয়েছিলেন ০.৮ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে। তিনি ২০ হাজার ভোট বেশি পেয়েছিলেন। এই স্টেটে ১৯৯৪ সালের পর ২০১৬ সালে ডেমোক্র্যাটরা পরাজিত হয়েছিলেন। এই স্টেটে বর্তমানে জো বাইডেনের ভোটের পরিসংখ্যান ৫১.৪ শতাংশ আর ট্রাম্পের ভোটের পরিসংখ্যান ৪৪.৩ শতাংশ। বাইডেন এগিয়ে রয়েছেন ৬.৬ শতাংশ ব্যবধানে। ফ্লোরিডা : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ২৯। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই স্টেটে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ে জয়লাভ করেন। তিনি মাত্র ১.২ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন। এই স্টেটে ১৯৭২ সালের নির্বাচনে রিচার্ড নিকশস, ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে ক্লিনটন ও ২০০৮ সালের নির্বাচনে ওবামা জয়ী হয়েছিলেন। বর্তমানে এই স্টেটে জো বাইডেন ৩.৮ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাইডেনের ভোটের সংখ্যা ৪৯.২ শতাংশ এবং ট্রাম্পের ভোটের পরিসংখ্যান ৪৬.৯ শতাংশ। আইওয়াহা : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৬। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এখানে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয়লাভ করেছিলেন ৯.৪ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে। বর্তমানে জো বাইডেন ১ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বাইডেনের ভোট ৭৭.৩ শতাংশ আর ট্রাম্পের ভোটের পরিসংখ্যান ৪৭.২ শতাংশ। নাভাদা : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৫। ২০১৬ সালের নির্বাচনে হিলারি ক্লিনটন ২.৪ শতাংশ ভোটে এগিয়ে থেকে জয়ী হয়েছিলেন। বর্তমানেও এই স্টেটে জো বাইডেন ৬.৫ শতাংশ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী জো বাইডেন ৫০ শতাংশ এবং ট্রাম্পের ভোটের পরিমাণ ৪৫ শতাংশ। নিউ হ্যাম্পশায়ার : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৪। ২০১৬ সালের নির্বাচনে এই স্টেটে হিলারি ক্লিনটন ০.৪ শতাংশ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হয়েছিলেন। বর্তমানে এই স্টেটে ভোটের পরিসংখ্যানে বাইডেন এগিয়ে রয়েছেন প্রায় ১২ শতাংশ ব্যবধানে। টেক্সাস : এই স্টেটে ইলেকটোরাল ভোটের সংখ্যা ৩৮। ২০১৬ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প জয়লাভ করেছিলেন। তিনি প্রায় ৯ শতাংশ ভোট বেশি পেয়েছিলেন। সাধারণত এই স্টেটকে রেড স্টেট বলা হয়ে থাকে। ১৯৭৬ সালে এই আসনে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি থেকে জিমি কার্টার নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর সব সময়ই রিপাবলিকানরা জয়ী হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে এই স্টেট সুইং স্টেটে পরিণত হয়েছে। দুদিন আগ পর্যন্ত এই স্টেটে জো বাইডেন এগিয়ে থাকলেও শেষ মুহূর্তে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছেন ট্রাম্পÑ০.৬ শতাংশ ব্যবধানে।
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন