কোভিড মহামারি চলাকালে ব্রিটিশ সরকারের ভূমিকা এবং দেশ ও জনগণের ওপর মহামারির প্রভাব নিরূপণ করে ভবিষ্যতের জন্য শিক্ষা গ্রহণ করতে গঠন করা হয়েছে ‘ইউকে কোভিড-নাইনটিন ইনকোয়ারি’। স্বাধীন এই গণ তদন্তে বুধবার সাক্ষ্য দিতে আসেন কোভিড মহামারি চলাকালীন সময়ে প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা বরিস জনসন। বরিস জন্সনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে, মহামারীতে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে তিনি বিলম্ব করেছেন; পাশাপাশি টেন ডাউনিং স্ট্রীটের ঘটনাবলী নিয়ে তিনি মিথ্যাচার করেছেন মর্মেও অভিযোগ আছে। গণ তদন্তে সাক্ষ্য দিতে এসে সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর কাছে আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করে তাঁর বক্তব্য শুরু করেন।
বরিস জনসন যখন দুঃখ প্রকাশ করছিলেন তখন এই চার নারী ‘দ্য ডেড কান্ট হিয়ার ইউর এপোলোজিজ’ লেখা প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বরিস জনসনের বক্তব্যে বাধা সৃষ্টি করেন। গণতদন্তের চেয়ার তাদেরকে তখন বের করে দেন। মহামারীতে প্রিয়জন হারান এই চার নারী বলেন, তাঁরা বরিস জন্সনের দুঃখ প্রকাশকে কখনও গ্রহণ করতে পারবেন না।
ভেতরে প্রশ্নোত্তর এবং সাক্ষ্য গ্রহণ শুরু হয়ে যায়। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারি নিয়ে প্রশ্ন করা হয় বরিস জনসনকে। তখন ইতালিতে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। আর ব্রিটেনে মন্ত্রীসভা তখনও আলোচনা করছে এখানে কী পদক্ষেপ নেয়া যায়। বরিস জনসন বলেন, করোনাভাইরাসের ভয়াবহতা আরও আগে তাঁর উপলব্ধি করা উচিত ছিল।
কিন্তু করোনার ভয়াবহতা যখন ব্রিটিশ সরকার উপলব্ধি করতে শুরু করে, তখন ইতোমধ্যে দেরি হয়ে গেছে। ইতালির দুই সপ্তাহ পর লকডাউন ঘোষণা হয় ব্রিটেনে। বরিস জনসনের সাবেক কয়েকজন সহকর্মী বলেছেন, লকডাউন সহ নানা বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ইতস্তত করছিলেন বরিস জন্সন। বরিস জন্সন বললেন, তিনি বিভিন্ন ধরনের বিকল্প পদক্ষেপের গুরুত্ব এবং প্রভাব পরিমাপ করার চেষ্টা করছিলেন।
বরিস জনসনকে নাম্বার-টেন অফিসের কাজের সংস্কৃতি নিয়ে বেশ কিছু প্রশ্ন করা হয়, যা ছিল তাঁর জন্য অস্বস্তিকর। বরিস জনসনের সাবেক প্রধান উপদেষ্টা ডোমিনিক কামিংস সহকর্মীদের গালাগাল করে মেসেজ পাঠাতেন; এই গালাগালে তিনি বরিস জনসনকেও ছাড়তেন না।
মহামারির প্রথম বছরে নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হতে দেখা যায় বরিস জনসনকে।
করোনাভাইরাসে ব্রিটেনে বিপুল মানুষের মৃত্যুর জন্য দেশের অনেক মানুষ এখনও বরিস জনসনকে দায়ী করেন। কারণ তিনি আরও দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। গণতদন্তে প্রথম দিনের সাক্ষ্য দিতে এসে বরিস জন্সন মহামারী চলাকালে নিজের উভয়সংকটে থাকার বাস্তবতা তুলে ধরেন। তবে সকল ব্যর্থতাকে তিনি নিজের একার নয়, বরং সামস্টিক ব্যর্থতা হিসেবে বর্ণনা করেন। বৃহস্পতিবার আবারও সাক্ষ্য দিতে আসবেন বরিস জনসন।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন