শরিকদের সঙ্গে আবার বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আজ রবিবার বৈঠকটি হওয়ার কথা। এবারের বৈঠকে আসন্ন নির্বাচনের আসন ভাগাভাগির চেয়ে রাজনৈতিক ঐক্যের বিষয়টি বেশি গুরুত্ব পাবে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তবে কখন, কোথায় বৈঠক হবে, তা জানা যায়নি।
এর আগে গত বুধবার জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকের পর আর আনুষ্ঠানিক আলোচনায় বসেনি আওয়ামী লীগ। এখন আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে জাতীয় পার্টি।
জোটের শরিকদের নিয়ে বৈঠকের বিষয়টি কালের কণ্ঠকে নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। গতকাল বিকেলে তিনি বলেন, ‘আগামীকাল (আজ) ১৪ দলের সবার সঙ্গে বৈঠকে বসা হবে।
’
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে গণভবনে অনুষ্ঠিত প্রথম বৈঠকে শরিকদের আসন বণ্টনসংক্রান্ত চার সদস্যের একটি কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়। আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্র বলছে, এই কমিটির সঙ্গেই এখন বৈঠক হবে।
জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কমিটির সদস্য আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘জোটটি মূলত রাজনৈতিক জোট। সময়ের প্রয়োজনে আমরা রাজনৈতিক ঐক্য গড়ে তুলেছি।
রাজনৈতিক জোটের ঐক্যতে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি।’
গত মঙ্গলবার ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর রাজধানীর ইস্কাটনের বাসায় সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরিন আখতার।
ওই সাক্ষাতেও তাঁরা নিজেদের দলের আসনের বিষয়ে আলোচনা তুলেছিলেন বলে জানা গেছে। বৈঠক সূত্র বলছে, ওয়ার্কার্স পার্টি সাতটি আসন দাবি করেছে। আর জাসদ বর্তমানের চেয়ে বেশি আসন চায়।
আজকের বৈঠকে শরিকদের আসনের বিষয়টি আলোচনায় গুরুত্ব পাবে বলে ১৪ দলীয় সূত্র জানিয়েছে। সূত্র বলছে, জোটের আসন কমতে পারে, এমন ধারণা নিয়েই আজ তারা বৈঠকে বসতে যাচ্ছে। তবে জোটের যাঁরা একাদশ সংসদে রয়েছেন, তাঁদের আসন নিশ্চিত করা নিয়ে আবারও আলোচনা তোলা হবে।
জানতে চাইলে ১৪ দলীয় জোটের নেতা বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘বৈঠকের বিষয়টি শুনেছি। কিন্তু এখনো নিমন্ত্রণ পাইনি। দেখি, আলোচনায় কী কথা হয়।’
এদিকে আওয়ামী লীগের সঙ্গে জাতীয় পার্টির প্রথম দফা বৈঠকে আসন সমঝোতা নিয়ে দুই দলের মধ্যে মতের ঐক্য হয়নি। ওই বৈঠকের পর বিষয়টি নিয়ে অপ্রকাশ্যে আলোচনা হচ্ছে। এখন আওয়ামী লীগ থেকে কী প্রস্তাব আসে, কয়টি আসন সমঝোতা করতে চায় এবং কোন প্রক্রিয়ায় তা হবে, সেই অপেক্ষায় আছে জাতীয় পার্টি।
জাতীয় পার্টির নেতাদের বক্তব্য স্পষ্ট। তাঁরা বিজয়ী হওয়ার মতো নিশ্চয়তা চায়। এ জন্য আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী ও দলটির স্বতন্ত্র প্রার্থীদের নির্বাচনের মাঠ থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টিকে প্রাধান্য দিচ্ছে।
দলের নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগের বাইরেও সব আসনে আরো অনেক প্রার্থী আছেন। ওই প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে তাঁদের জিতে আসতে হবে। ফলে আওয়ামী লীগ ও তাঁদের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সরে গেলেও তা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন হবে।
জাতীয় পার্টির নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, দুই দলের সঙ্গে প্রথম দফা বৈঠকের পর নেপথ্যে এ নিয়ে আলোচনা চলছে। এসব আলোচনায় জাপার দায়িত্বশীল নেতারা ৫০ আসন নিয়ে দেনদরবার করছেন। তবে শেষ পর্যন্ত ৪০ আসন পেলে তাঁরা সন্তুষ্ট থাকবেন।
জাপা মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সঙ্গে আরো বৈঠক হতে পারে, না-ও পারে। এখনই বলা যাচ্ছে না।’
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সঙ্গে আসন সমঝোতা বা কিছু পাওয়া না পাওয়ার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়নি।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন