যারা একটু দেরিতে ঘুম থেকে উঠেছেন, চোখ কচলাতে কচলাতে টেলিভিশনের সামনে বসে নিজেকেই যেন বিশ্বাস করতে পারছেন না অনেকে! নান্দনিক ব্যাটিং বুঝি একেই বলেই। সেটিও সৌম্য সরকারের ব্যাটে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যিনি রান করতেই ভুলে গেছিলেন, এজন্য দীর্ঘদিন জাতীয় দলের বাইরে ছিলেন। তার ফেরাটাও ভালোভাবে নেয়নি সমর্থকরা।
সেই সৌম্য কি না আজ ৫ বছর পর ওয়ানডেতে শতক হাঁকিয়েই তৃপ্ত হলেন না। নিজের ক্যারিয়ার-সেরা ইনিংস তো বটেই, নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশিদের মধ্যে সেরা ইনিংসটি আজ খেলে ফেললেন সৌম্য।
সৌম্যর ১৫১ বলে ১৬৯ রানের ইনিংসে সিরিজ বাঁচানোর ম্যাচে চ্যালেঞ্জিং পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ। নেলসনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩ ম্যাচ সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে অলআউট হওয়ার আগে ২৯১ রান করেছে সফরকারীরা।
যা নিউজিল্যান্ডের মাটিতে কিউইদের বিপক্ষে সর্বোচ্চ সংগ্রহ বাংলাদেশের। আগেরটি ছিল ২৮৮ রান, ২০১৫ সালে হ্যামিলটনে। বলে রাখা ভালো, সৌম্যর ১৬৯ রানের ইনিংসটি বাংলাদেশি ব্যাটারের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ১৭৬ আছে লিটন দাসের।
বাংলাদেশের ইনিংসের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। টস হেরে ব্যাট করতে নেমে একপ্রান্ত থেকে সৌম্য রান পেলেও অন্যপ্রান্তে নিয়মিত উইকেট হারায় বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের ১০ ওভারের মধ্যে ফিরে যান এনামুল হক বিজয়, নাজমুল হোসান শান্ত ও লিটন। তাদের কেউই দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। চতুর্থ উইকেট জুটিতে তাওহিদ হৃদয়কে নিয়ে চাপ সামলানোর চেষ্টা করেন সৌম্য।
তবে দুর্ভাগা তাওহিদ রান আউট হন ১২ রান করে।
পরে পঞ্চম উইকেটে মুশফিকুর রহিমের সঙ্গে ৯১ রানের জুটিতে দলকে টেনে তোলেন সৌম্য। ৪৫ করে মুশফিক আউট হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর মেহেদী হাসান মিরাজের সঙ্গে ৬১ রানের জুটির মাঝে ১১৬ বল খেলে ক্যারিয়ারের তৃতীয় সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন এই বাঁহাতি ওপেনার। যদিও এই মাইলফলক ছুঁতে একাধিক জীবন পান তিনি। পরে মিরাজ ১৯ রান করে আউট হলেও আগ্রাসী ব্যাটে রান বাড়ানোর চাহিদা মেটান সৌম্য।
তার ক্যারিয়ার-সেরা ১৬৯ রানের ইনিংসটি নিউজিল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশের কোনো ব্যাটারের সর্বোচ্চ। আগেরটি ছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের, ১২৮ করেছিলেন তিনি। সৌম্যর আজকের ইনিংসটি সাজানো ২২টি চার ও ২টি ছয়ে। তবে এই বাঁহাতির এমন ব্যাটিংয়ের পরেও ৫০ ওভার পুরোটা খেলতে পারেনি বাংলাদেশ। ২৯১ রানে থামে সফরকারীদের ইনিংস।
জিবিডেস্ক //
মন্তব্যসমূহ (০) কমেন্ট করতে ক্লিক করুন