এবার ওসি প্রদীপের সম্পদ বেরোচ্ছে!

জিবি নিউজ ডেস্ক ।।

কক্সবাজারের টেকনাফ থানার সদ্য প্রত্যাহার হওয়া ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে প্রতিদিনই বেড়িয়ে আসছে নানা চাঞ্চল্যকর তথ্য। টেকনাফের এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে থাবা পড়েনি এই বিতর্কিত পুলিশ কর্মকর্তার। নিরাপত্তা প্রহরীর ছেলে হলেও চাকরিজীবনের মাত্র ২৪ বছরেই ওসি প্রদীপ গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়। চাকরি জীবনের বেশিরভাগ কাটিয়েছেন চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও টেকনাফে। অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তারের পর তার অঢেল সম্পদের বিষয়টি এখন সবার মুখে মুখে। এরপর সামনে আসতে শুরু করেছে তার নানা অনিয়মের কথাও। অপরাধ বিশ্লেষকদের ধারণা, এসব সম্পদ গড়েছেন ক্রসফায়ারের ভয় আর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে।
অভিযোগ রয়েছে, অস্ট্রেলিয়ায় বাড়ি রয়েছে তার। প্রচুর ব্যাংক ব্যালেন্সসহ ওসি প্রদীপের নামে-বেনামে দেশে বিদেশে রয়েছে ব্যবসা, বাড়ি, প্লট-ফ্ল্যাট, দামি গাড়ি ও ভরি ভরি স্বর্ণালঙ্কার। তিনি দুর্নীতির টাকায় মোটা অঙ্কের অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যবসায়ও সম্পৃক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে চট্টগ্রামের পাথরঘাটায় জায়গা দখল করে স্ত্রীর নামে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

জানা গেছে, চট্টগামের পাঁচলাইশ থানার ওসি থাকাকালে মুরাদপুরে দশ কাঠা জায়গা দখল করেন। সম্পদ গড়েছেন কক্সবাজারেও।

দুদক সূত্রে জানা গেছে, ওসি প্রদীপের চট্টগ্রামের দাশের লাল খান বাজারে একটি ফ্ল্যাট, কক্সবাজারে দুটি হোটেলের মালিকানা, বেয়ালখালীতে স্ত্রী চুমকির নামে রয়েছে কয়েক কোটি টাকার সম্পদ। রয়েছে মৎস্য খামার, আগরতলা ও অস্ট্রেলিয়ায় তার বাড়ি রয়েছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। এছাড়া বিদেশে টাকা পাচারের অভিযোগও উঠেছে ওসির বিরুদ্ধে।

তার স্ত্রী চুমকি গৃহিণী হলেও ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকার মৎস্য খামার তার নামে করা হয়। পাথর ঘাটায় ৪ শতক জমি রয়েছে চুমকির নামে; যার মূল্য ৮৬ লাখ ৭৬ হাজার টাকা। ওই জমির ছয়তলা ভবনের বর্তমান মূল্য ১ কোটি ৩০ লাখ ৫০ হাজার।

পাঁচলাইশে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে ১ কোটি ২৯ লাখ ৯২ হাজার ৬০০ টাকার জমি কেনা হয়; ২০১৭-১৮ সালে কেনা হয় কক্সবাজারে ঝিলংজা মৌজায় ৭৪০ বর্গফুটের ফ্ল্যাট; যার দাম ১২ লাখ ৩২ হাজার টাকা।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভয়, কখনো মিথ্যা মামলায় ক্রসফায়ারের ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়ের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। চাকরিজীবনের ১৫ বছরের মাথায় এক বৃদ্ধের জায়গা দখল করে চট্টগ্রাম নগরীর পাথরঘাটায় গড়ে তুলেছেন স্ত্রীর নামে বহুতল ভবন।

এরইমধ্যে প্রদীপ কুমার ও তার স্ত্রীর সম্পদের খোঁজে মাঠে নেমেছে দুদক। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) চট্টগ্রাম সমন্বিত কার্যালয় ২-এর উপপরিচালক মো. মাহবুবুল আলম সাংবাদিকদের জানিয়েছেন খুব দ্রুতই এর প্রতিবেদন দেয়া হবে।

জানা গেছে, ১৯৯৫ সালের ১ জানুয়ারি সাব ইন্সপেক্টর হিসেবে পুলিশ বাহিনীতে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০৯ সালের ১৯ জানুয়ারি তিনি ইন্সপেক্টর পদে পদোন্নতি পান। তাদের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার সারোয়াতলী ইউনিয়নের উত্তর কুঞ্জরী গ্রামে। তার বাবা হরেন্দ লাল দাশ ছিলেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) নিরাপত্তা প্রহরী। তার দুই সংসারে রয়েছে পাঁচ ছেলে ও ছয় মেয়ে। প্রদীপের ভাই সদীপ কুমার দাশ সিএমপির ডবলমুরিং থানায় ওসি হিসেবে কর্মরত। তাদের আরেক ভাই দিলীপ কুমার দাশ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের হেডক্লার্ক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বর্তমানে তিনি অবসর নিয়েছেন। গ্রামের বাড়িতে তার সৎ ভাইয়েরা থাকেন

মন্তব্যসমূহ (০)


ব্রেকিং নিউজ

লগইন করুন


Remember me Lost your password?

Don't have account. Register

Lost Password


মন্তব্য করতে নিবন্ধন করুন